শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : ছিনতাইয়ের ২৯ ঘন্টার মধ্যে ৭৬৪০০০ টাকা ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি পালসার মটর সাইকেল ও পিস্তলসহ সুজন (২৫), আনোয়ার (২৫) ও নোমান (১৯) নামের ৩ দুর্বৃত্তকে আটক করেছে যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। যৌথবাহিনীর বিশেষ অভিযানের একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার বেলা ৪ টার মধ্যে তাদেরকে বেনাপোল সীমান্তের ভবেড়বেড় ও বড়আঁচড়া এলাকা থেকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
আটককৃত সুজন বেনাপোল পোর্ট থানার সাদিপুর গ্রামের আহসানের ছেলে, আনোয়ার একই গ্রামের আবু তৈয়েবের ছেলে ও ভবেড়বেড় গ্রামের নুরুর ছেলে।
মামলার এজাহার সুত্রে জানাযায়, গত বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১.৪৫ মিনিটের সময় নাভারন ডাচবাংলা এজেন্ট ব্যাংককর্মী শিমুল ১৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে বেনাপোলে আসে এবং ডাচবাংলা ব্যাংকে ৬ লক্ষ টাকা জমা দেয়। বাকি ৭ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে সে আবার নাভারন অভিমুখে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে শার্শা থানাধীন শেখ রাসেল স্টেডিয়ামের সামনে গেলে বেনাপোল থেকে দুটি মটর সাইকেলে পিছু নেওয়া অজ্ঞাতনামা দূবৃত্ত্বরা তাকে গতিরোধ করে এবং পিস্তল ঠেকিয়ে সিনতাই করে নেয় শিমুলের কাছে থাকা ৭ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। এই ঘটনায় ডাচবাংলা এজেন্ট ব্যাংক কর্মচারি ও ঝিকরগাছা থানার বাকুলিয়া গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে শিমুল হোসেন টুটুল বাদি হয়ে শার্শা থানায় একটি মামলা রুজু করে। যার নং ৪৩। তারিখ-২৪.০২.২০২১।
বিষয়টি নিয়ে যশোর জেলার নবাগত পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদারের কঠোর নির্দেশনায় র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশসহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই) বেনাপোল এলাকায় যৌথ অভিযানে নামে। অবশেষে বুধবার রাত ৪ টার মধ্যে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি সৌমেন দাসের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল বেনাপোলের ভবেরবেড় ও বড়আঁচড়া গ্রাম থেকে তাদের তিনজনকে আটক করেন। এসময় সুজনের কাছ থেকে সিনতাইকৃত ৭৮০০০০ টাকার মধ্যে ৭৬৪০০০ টাকা ও নোমানের কাছ থেকে ভিকটিম শিমুলের মোবাইল ফোন এবং সিনতাই কাজে ব্যবহৃত ১ টি পালসার মটর সাইকেল (রেজিঃ বিহীন) উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার বেলা ৪টার মধ্যে ভবেরবেড় গ্রামের নোমানের বসত বাড়ী হতে ১টি ওয়ান শুটার গান পিস্তল বের করে সিনতাইকারি সুজন। এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই বাদী হয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় পৃথক মামলা রুজু করেন।
ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের সত্তাধিকারী শরিফ জানান, শার্শার নাভরণ সাতক্ষীরা মোড়ে তার ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংক রয়েছে। কর্মচারী শিমুল একটি প্যাকেটে ৭ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে বেনাপোল থেকে যাচ্ছিলো নাভারনের দিকে। এসময় শার্শা বলফিল্ডের সামনে পৌছালে দুটি মটর সাইকেলে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রীরা মাস্ক পরিহিত অবস্থায় শিমুলের মটরসাইকেল গতীরোধ করে পিস্তল ঠেকিয়ে ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। বিষয়টি স্থানীয় পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থ্যাকে অবহিত করা হলে ঘটনার ২৯ ঘন্টার মধ্যে ৭ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা, পিস্তল ও একটি মটর সাইকেল উদ্ধারসহ তাদের তিনজনকে আটক করেছেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।
এ বিষয়ে শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) বদরুল আলম খান বলেন, সিনতাইয়ের অভিযোগে বুধবার রাত ৪ টার মধ্যে সিনতাইকৃত টাকাসহ তিন আসামীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। পরে বৃহস্পতিবার সকালে তাদেরকে আদালতে পাঠালে তাদের জবানবন্দীতে ভবেড়বেড় গ্রামের নোমানের বাড়ি থেকে ১টি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে শার্শা থানা ও বেনাপোল থানায় পৃথক দুইটি মামলা হয়েছে।