মঈনুল হাসান রতন হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ চিকিৎসা শেষে ১৬ দিন পর হবিগঞ্জের বাসায় ফিরেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও টানা ৩ বারের নির্বাচিত হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ। তিনি গতকাল রবিবার সন্ধার পর ঢাকা থেকে হবিগঞ্জ ফিরেছেন। এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে আলহাজ্ব জি কে গউছের নাকে সফল অস্ত্রোপচার হয়। এদিকে বাসায় ফিরেই দেশে-বিদেশে অবস্থানরত বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ হবিগঞ্জবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন আলহাজ্ব জি কে গউছ। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, হবিগঞ্জের মাটি গায়ে মেকেই আমি বড় হয়েছি। এই জেলার মানুষের সাথেই আমার উঠাবসা। সেই ছাত্র জীবন থেকে আজ অবদি রাজনীতি করছি হবিগঞ্জবাসীর পাশে থেকে।
হবিগঞ্জ পৌর ও জাতীয় নির্বাচনে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে ৩ বার অংশ গ্রহন করে নির্বাচিত হয়েছি। ৫২ বছরের জীবনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর কারাভোগ করেছি। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করতে হয়েছে। কখনো সরকারী দল, কখনো বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে গিয়ে জীবন-মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু একটিবারও হবিগঞ্জের মানুষ আমাকে ছেড়ে যায়নি। আমার প্রতিটি দুঃসময়ে আমার পরম আপনজন হিসেবে হবিগঞ্জের প্রতিটি মানুষ আমার পাশে দাড়িয়েছেন। সকল ধর্ম-বর্ণ ও দল-মতের উর্ধ্বে উঠে বারবার হবিগঞ্জের মানুষ আমার পাশে থেকে আমাকে কৃতজ্ঞতার বন্ধনে আবদ্ধ করেছেন। এ জন্য আমৃত্যু আমি ও আমার পরিবার হবিগঞ্জবাসীর নিকট ঋনী হয়ে থাকবো।তিনি বলেন, আমার নাকে আঘাতজনিত কারণে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে অপারেশন করেছি। চিকিৎসা শেষে ১৬ দিন পর হবিগঞ্জ ফিরেছি। এই সময়ের মধ্যে হবিগঞ্জের মানুষ আমার প্রতি যে ভালবাসা দেখিয়েছে তার প্রতিদান দেয়া সম্ভব নয়। আমার সুস্থতার জন্য দেশে-বিদেশে এবং হবিগঞ্জের বিভিন্ন মসজিদে, মাদ্রাসায় যাদের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল করা হয়েছে, যাদের উদ্যোগে রামকৃষ্ণ মিশন, ইশকন ও শনি মন্দিরসহ হবিগঞ্জের বিভিন্ন মন্দিরে প্রার্থনা করা হয়েছে, দল-মত নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ আমার খোঁজ খবর নিয়েছেন, হাসপাতালে এবং বাসায় দেখা করেছেন, আমার জন্য দোয়া ও আর্শিবাদ করেছেন, তাদের সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আপনাদের ঋণ আমি কোন দিন পরিশোধ করতে পারবো না। আমৃত্যু আমি এবং আমার পরিবার আপনাদের নিকট ঋনী হয়ে থাকবো।
সেই সাথে প্রত্যাশা করছি- আগামীতেও অতিতের ন্যায় হবিগঞ্জবাসী আমার আপনজন হিসেবে পাশে থাকবেন। আমি সকলের দোয়া ও আর্শিবাদ কামনা করছি।উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে একটি মিথ্যা মামলায় হবিগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দি ছিলেন আলহাজ্ব জি কে গউছ। তিনি বন্দি থাকা অবস্থায় ১৮ জুলাই কারা অভ্যান্তরে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে নিজ কক্ষে ফেরার পথে এক কয়েদি দ্বারা ছুরিকাঘাত প্রাপ্ত হন। এ সময় তিনি উপুর হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এতে তিনি নাকে আঘাত পান। ওই সময় থেকে তিনি নাকের সমস্যায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি এই সমস্যা আরও তীব্র আকার ধারণ করলে ডাক্তারের পরামর্শে ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন।