হাবিবুর রহমান নাসির ছাতক :
ছাতকে রেলওয়ের ভুমিতে বসবাস করা এক ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী ও তার পরিবারকে উচ্ছেদ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাদের নির্দেশে ওই পরিবারকে সামাজিকভাবেও অসহযোগিতা করছে স্থানীয় লোকজন। ফলে অঘোষিতভাবে অনেকটা গৃহবন্দি অবস্থায় অসহায় দিনানিপাত করছে ভাঙ্গারী ও তার পরিবার। এমন অভিযোগই তুলেছেন ছাতকের কালারুকা ইউনিয়নের তাজপুর এলাকার রেলওয়ের ভুমিতে বসবাস করা ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী মুমিন মিয়া ও তার স্ত্রী নুপুর বেগম। বর্তমানে প্রতিপক্ষের ভয়ে মুমিন মিয়া ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন বলেও জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মঙ্গলবার সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার বরাবরে স্থানীয় ৭ জনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দেন নুপুর বেগম। অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভুমিহীন মুমিন মিয়া ১৯৯৫ সাল থেকে তাজপুর এলাকার রেলওয়ের পতিত ভুমিতে একটি কুঁড়েঘর নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেন। একসময় বসতঘর সংলগ্ন রেলওয়ের একটি খালে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহের পথ বেচে নেয় তারা। পাশাপাশি স্বামী-স্ত্রী মিলে ভাঙ্গারী ব্যবসাও শুরু করেন। এভাবেই চলছিল তাদের জীবন-জীবিকা।
কিন্তু রেলওয়ের খালে ক্ষুদ্র পরিসরে মাছ চাষ করার বিষয়টি তাদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি ওই খালটি নিজ দখলে নিতে ভাঙ্গারী এ পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টির পাশাপাশি তাদের রেলওয়ের ভুমি থেকে তাদের উচ্ছেদের হুমকী দিতে থাকে। একাধিকবার খাল থেকে জোরপূর্বক মাছ শিকারের চেষ্টাসহ ভাঙ্গারী এ পরিবারে উপর প্রতিপক্ষরা হামলাও চালিয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। গত ৩০ জুন খাল থেকে জোরপূর্বক মাছ শিকার করতে আসা প্রতিপক্ষের লোকজনদের বাঁধা দিলে তারা হামলা করা জন্য ভাঙ্গারী পরিবারকে ধাওয়া করে। এ ঘটনায় ৬ জনের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নুপুর বেগম। গত ১৬ আগষ্ট মধ্যরাতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন জোরপূর্বক মাছ শিকার করতে আসলে এতে দেয় নুপুর বেগম ও তার স্বামী। এসময় তারা নূপুর বেগমের বসতঘর ভাংচুর, হামলা ও মালামাল লুট করে নেয়। হামলাকারীরা নুপুর বেগমের শ্লীলতাহানি ঘটানোর পাশাপাশি তাকে বেধড়ক মারপিট করে।
এ ঘটনায় ১৮ আগষ্ট সুনামগঞ্জ আমল গ্রহনকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ওই ৬ জনের বিরুদ্ধে আরো একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন নুপুর বেগম। আইনের আশ্রয় নেয়ার অপরাধে প্রতিপক্ষরা ক্ষীপ্ত হয়ে ভাঙ্গারী এ পরিবারকে সামাজিকভাবে বয়কটের পাশাপাশি নুপুর বেগমকে মাদক ব্যবসায়ী ও অসামাজিক কাজের সাথে যুক্ত থাকার কথা বলে এলাকায় অপপ্রচার করতে থাকে প্রতিপক্ষরা। যেকোন মূল্যে রেলওয়ের এ ভুমি থেকে ভাঙ্গারী পরিবারকে উচ্ছেদ করবে বলে হামলাকারীরা হুমকী দিতে থাকে। প্রভাবশালী এসব ব্যক্তিদের ভয়ে ভাঙ্গারী পরিবার এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। নুপুর বেগম আশংকা প্রকাশ করে জানান, অভিযোগে উল্লেখিত ওই ৬ ব্যক্তি ভুমিখেকো ও খারাপ প্রকৃতির লোক। তার পরিবারকে উচ্ছেদ করতে তারা যেকোন সময় ভাংচুর, অগ্নি সংযোগের মতো ঘটনা ঘটিয়ে তার পরিবারের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করতে পারে প্রতিপক্ষরা। বসত ঘরের আশেপাশে মাদক দ্রব্য রেখে বা অন্য কোন উপায়ে তার পরিবারকে ফাঁসানো চেষ্টাও করতে পারে বলে নুপুর বেগম আশংকা প্রকাশ করছেন। এ ছাড়া প্রতিপক্ষরা সামজিকভাবে বয়কট করায় স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা তাদের কাছে সওদা বিক্রি করতেও অপারকতা প্রকাশ করছে। বিষয়টি আশু আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনে প্রতি অনুরোধ করেন নুপুর বেগম।##