বিএসএমএমইউ’তে করোনা বিষয়ক গবেষণা ইউনিট উদ্বোধন

0
707
বিএসএমএমইউ’তে করোনা বিষয়ক গবেষণা ইউনিট উদ্বোধন

খবর৭১ঃ

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রান্ত গবেষণা ইউনিট চালু হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)।

বিএসএমএমইউ’র অ্যানেসথেশিয়া, অ্যানালজেশিয়া অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগ ও যুক্তরাজ্যের ওয়েলসের হাইওয়েল দা ইউনিভার্সিটি হেলথ বোর্ডের যৌথ উদ্যোগে কেবিন ব্লকের আইসিইউতে ৪টি বেড নিয়ে এ গবেষণা ইউনিট চালু করা হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ব্লকের অধ্যাপক সামাদ সেমিনার হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে চালুকৃত গবেষণা ইউনিটের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।

এই গবেষণার বিষয় হলো- নতুনভাবে তৈরিকৃত নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেটর (Ctex Wg7 Cpap Divice) সিটেক্স ডব্লিউজি সেভেন সিপাপ ডিভাইস বা যন্ত্রটি (Non Invasive ventilator) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য কতটা কার্যকরী ও করোনায় আক্রান্ত রোগীদের থেকে কি পরিমাণ ভাইরাস বাইরে বের হয় তা নিরূপণ করা।

এখানে প্রধান গবেষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. এ কে এম আখতারুজ্জামান। গবেষকদের মধ্যে আরও রয়েছেন-অধ্যাপক ডা. মুজিবুর রহমান, অধ্যাপক কেয়ার লিউস, ডা. রিজ থমাস ডা. সোহেল মুসা মিঠু।

উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, বিশ্বে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ নিয়েছেন। শুধু সেমিনার, সভা, আলোচনা সভা নয়; ফিভার ক্লিনিক, করোনাভাইরাস ল্যাবরেটরি এবং গত ৪ জুলাই ৩৭০ শয্যার করোনা সেন্টার চালু করা হয়েছে।

উপাচার্য বলেন,’ শুধুমাত্র করোনা সেন্টারেই এ পর্যন্ত ৭৫৮ জন রোগী চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেছেন। ফিভার ক্লিনিকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত ৩০ হাজার ৬৩১ জন রোগীকে সেবা প্রদান করা হয়েছে এবং বেতারভবনে চালুকৃত করোনাভাইরাস ল্যাবরেটরিতে এ পর্যন্ত ৩৭ হাজার ২৪০ জন রোগীর স্যাম্পল সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে।’

এছাড়াও রোগীদের সুবিধার্থে বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগ চালু রাখার পাশাপাশি হেলথ লাইন, বিশেষজ্ঞ হেলথ লাইন চালু করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, সিটেক্স ডব্লিউজি সেভেন সিপাপ ডিভাইস করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবাকালীন সময়ে ব্যবহার করে এর উপকারিতা নিরূপণ করার জন্য ৪টি আইসিইউ বেড নিয়ে এই ইউনিটটি চালু করা হয়েছে। এটা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ও সেবাদানকারী চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে নব দিগন্তের দার উন্মোচিত হবে বলে আমার বিশ্বাস।’

‘যেকোনো ভাইরাস সংক্রমণের পর ভাইরাল লোড ও ভাইরাসটির এগ্রেসিভনেসের উপর নির্ভর করে রোগীর জীবন কতটা সঙ্কটাপন্ন। আশা করি, এসকল বিষয় নির্ণয়েও এই গবেষণা ইউনিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রাথমিকভাবে ৫০ জন রোগীর উপর গবেষণাটি পরিচালিত হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসজনিত বিষয়ে যেসকল গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে তা সম্পন্ন করা হবে এবং ভবিষ্যতে এ সংক্রান্ত গবেষণার বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

প্রধান গবেষক ও অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. এ কে এম আখতারুজ্জামান বলেন, ‘সিটেক্স ডব্লিউজি সেভেন সিপাপ ডিভাইস নতুন ধরণের মেশিন বা যন্ত্র যা কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত রোগীদের থেকে করোনাভাইরাস বাইরে বের হওয়া কমিয়ে দিবে। এই যন্ত্রে কয়েকটি ফিল্টার ব্যবহার করা হয়েছে। গবেষণার মাধ্যমে এর কার্যকারিতার বিষয়ে যথাযথ ফলাফল জানা যাবে।’

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, অধ্যাপক ডা. দেবাশিস বনিক, অধ্যাপক ডা. এ কে কামরুল হুদা প্রমুখ।

গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি অনুদান হিসেবে প্রদান করেছে যুক্তরাজ্যের ওয়েল গভার্নমেন্ট। বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছে বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন, ইউকে; বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশি বংশদ্ভূত ব্রিটিশ চিকিৎসকরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here