হাটে চড়া দামে ধান বিক্রি সৈয়দপুরে সরকারি ধান-চাল সংগ্রহে মন্দা চলছে

0
357
সৈয়দপুরে ভ্রাম্যমান আদালতে ছয় মাদকসেবীর জেল জরিমানা

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুরঃ এবার সৈয়দপুর উপজেলার হাটে বাজারে ধানের ভালো দাম পাওয়ায় সৈয়দপুরের প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে খুশির জোয়ার বইছে। ফলে সরকারি ধান-চাল ক্রয় কেন্দ্রে ধান বিক্রিতে আগ্রহ নেই কৃষকদের। বর্তমানে হাটে ঝামেলা মুক্তভাবে জাত ভেদে কাঁচা ও ভেজা ধান ২২ থেকে ২৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়ায় হাটেই ধান বিকছেন কৃষকরা। ফলে সরকারি সংগ্রহ অভিযান শুরুর এক মাস গত হলেও ধান-চাল সংগ্রহে মন্দা চলছে। মন্দা কাটাতে খাদ্য বিভাগ কৃষক প্রতি ধান বিক্রির পরিমাণ বাড়ালেও সাড়া মিলছে না তাদের। উপজেলা খাদ্য দপ্তর সূত্র জানায়, দেশে সরকারি আমন ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের আওতায় সৈয়দপুর উপজেলায় গত ১৬ জুন শুরু হয় আমন সংগ্রহ অভিযান। এবার ধান সংগ্রহের (ক্রয়) লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৯৪ মেট্রিক টন। একই সঙ্গে চাল ২ হাজার ৭৪৫ মেট্রিক টন সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ধানের সরকারি ক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে কেজি প্রতি ২৬ টাকা এবং চাল কেজি প্রতি ৩৬ টাকা দরে।

এছাড়া ৩৫ টাকা কেজি দরে ৮৩ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহ করা হবে। চাল সংগ্রহের জন্য উপজেলার ২৩টি চালকলের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি অটোরাইস মিল থেকে ২ হাজার ৪১৩.৮০ মেট্রিক টন এবং ১৭টি হাসকিং মিল থেকে ২৪৯.৯০০ মেট্রিক টন ও ১টি মিল থেকে ৮৩ মেট্রিক টন আতপ চাল ক্রয় করা হবে। সংগ্রহ অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত চাল ১ হাজার ১০৩ মেট্রিক টন, আতপ চাল ৩৭ মেট্রিক টন ও ধান ৫৫ মেট্রিক টন সংগৃহিত হয়েছে। হাটে ধানের দাম উর্ধ্বমুখী হওয়ায় চাল সংগ্রহে ঢিলাঢালা ভাব চলছে। তবে সংগ্রহ অভিযানে নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে চাল সংগ্রহের লক্ষ্য অর্জিত হবে বলে জানায় স্থানীয় খাদ্য বিভাগ। এক্ষেত্রে ধানের সংগ্রহ নিয়ে বিপাকে পড়েছে খাদ্য বিভাগ। কারণ হাটে বাজারে চড়া দাম ধান বিক্রি হওয়ায় কৃষকরা সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে আসছে না। খাদ্য বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের চায়ের আমন্ত্রণ জানানো হলেও সাড়া মিলছে না তাদের। সূত্র জানায়, বর্তমানে স্থানীয় হাটে জাতভেদে ৭৫ কেজি প্রতি বস্তা ধান ১ হাজার ৬৫০ টাকা থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। হাটে এই দামে কাঁচা ও ভেজা ধান বিক্রি হওয়ায় কৃষকরা হাটেই ধান বিক্রি করছেন। কৃষকরা বলছেন ভালো দাম এবং ঝামেলা মুক্তভাবে কাঁচা ধান বিক্রি হওয়ায় হাটমুখী হয়েছেন তারা। যদিও হাটের মূল্য চেয়ে ধানের সরকারি মূল্য বেশি হলেও সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে ঝামেলা পোহাতে হয়। সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে ধানের শুষ্কতা নির্দিষ্ট মাত্রায় না হলে ধান ক্রয় করা হয় না। অথচ হাটে এসবের বালাই নেই, কাঁচা ও ভেজা ধানই ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। ফলে কৃষকরা এবার সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে ধান বিক্রিতে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় সরকারি ধান সংগ্রহে মন্দা দশা চলছে। সংগ্রহ অভিযানের গত এক মাসে মাত্র ৫৫ টন ধান সংগ্রহ হয়েছে। ফলে ধান সংগ্রহের লক্ষ্য পূরণ করা নিয়ে অস্বস্তিতে আছেন স্থানীয় খাদ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।

জানতে চাইলে, সৈয়দপুর সরকারি খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক ধান সংগ্রহের মন্দা দশার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ধান সংগ্রহের মন্দা কাটাতে বড়, মাঝারি ও ক্ষুদ্র কৃষক প্রতি ধান বিক্রির পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে একজন কৃষক সর্বনিম্ন ৩ টন থেকে সর্বোচ্চ ৬ টন পর্যন্ত ধান বিক্রির সুবিধা দেয়া হয়েছে। এরপর সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে ধান বিক্রিতে সাড়া মিলছে না কৃষকদের। এমনকি তাদের উদ্বুদ্ধ করতে তাদের নাস্তার দাওয়াত দেয়া হলেও তারা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তবে চাল সংগ্রহের কার্যক্রম যথারীতি চলছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here