বাংলাদেশে করোনা সংকট তীব্র হবে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে: গবেষণা

0
427
করোনায় ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৪১, আক্রান্ত ৩৭৭৫

খবর৭১ঃ বাংলাদেশে লকডাউনের কারণে করোনা ভাইরাসে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যুর সময় পিছিয়েছে বলে জানিয়েছে ইমপেরিয়াল কলেজের গবেষকরা। ‘ইমপেরিয়াল কলেজ কভিড ১৯ অ্যানালাইসিস টুলস’-এর দেয়া তথ্যানুসারে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা থাকবে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে। এ সময় দিনে ১০ হাজার করে মানুষ মারা যেতে পারে বলে এই গবেষকরা ধারণা পোষণ করেন। অবশ্য এর আগে এই টুলস অনুসারে জুন-জুলাই মাসে হওয়ার কথা ছিল সর্বোচ্চ মৃত্যুর হার। কিন্তু লকডাউন ও সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ৭৫ ভাগ কম হয়েছে, যার ফলে পিছিয়েছে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যুর সময়।

নেত্রানিউজের গত ৯ জুনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইম্পেরিয়াল কলেজের টুলসের বিশ্লেষণ অনুসারে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের মহামারি পরিস্থিতি গত সাত দিন আগের চেয়ে এ সপ্তাহে আলাদা দেখাচ্ছে। প্রথমের দিকে বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি অনেক নিয়ন্ত্রিত মনে হয়েছিল।

১ জুন ইম্পেরিয়াল কলেজের কোভিড১৯ বিশ্লেষণ টুলস নতুন করে বাংলাদেশের জন্য সর্বোচ্চ আক্রান্তের সময় হিসেব করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, যদি কেউ ধরে নেয় যে বাংলাদেশের চলমান লকডাউনের ফলে করোনার সংক্রমণ ৭৫ ভাগ কমে যাবে এবং এটি দীর্ঘয়িত হবে, তাহলে আমাদের টুলস বলছে আগামী অক্টোবরেই দেশে করোনা মহামারি সর্বোচ্চ শিখরে উঠে যাবে এবং এর ফলে একদিনে ৬ হাজার ৫০০ মানুষের মৃত্যু হবে।

সর্বশেষ ৭ জুন ইমপেরিয়াল কলেজের পূববর্তী ভবিষ্যৎবাণী থেকে করোনায় মৃত্যু এবং সংক্রমণ কম হওয়ায় নতুন করে ধারণা হচ্ছে, পূববর্তী ঘোষণা থেকে সংক্রমণ ও মৃত্যু কম হওয়ায় এবার ধরে নেয়া হয়েছে বাংলাদেশে আগামী কয়েক মাসে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত কম হবে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। কিন্তু এরপর জুনের শেষ ভাগে প্রতিদিনে করোনায় ৮২ জনের মৃত্যু হবে। যা পূর্ববর্তী ভবিষ্যৎবাণী থেকে অনেক কম।

তবে দুর্ভাগ্যক্রমে ইম্পেরিয়াল কলেজের মতে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমে যাওয়ার মাত্রা এখন আর ৭৫ শতাংশের কাছাকাছি নেই। পূর্বে ধারণা করা হয়েছিল লকডাউনের কারণে সংক্রমণ ও মৃত্যু যে হারে হ্রাস পাচ্ছে সে হারেই হ্রাস পাবে, কিন্তু বাংলাদেশ সরকার লকডাউন শিথিল করায় এখন এই সংক্রমণ কমার হার একই রকম থাকছে না। যা বিগত এক সপ্তাহের তথ্যানুসারে ৭৫ ভাগের পরিবর্তে ৪১ ভাগ আক্রান্ত কম হয়েছে। আর সেই বিশ্লেষণ থেকে ধারণা করা হচ্ছে সেপ্টেম্বরের শুরুতে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যায় শীর্ষের দিকে থাকবে বাংলাদেশ এবং একদিনে ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে। আর এই মহামারি ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে গিয়ে শেষ হবে।

অবশ্য এই ধরণের কোনও গাণিতিক মডেলে ফেলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হিসেব করাকে অনুমান নির্ভর বলে মনে করেন অধিকাংশ বিশেষজ্ঞরা। কেননা শুধু সংখ্যার গড় হার এবং অনুপাত বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ আক্রান্তের সংখ্যা বের করা সম্ভব নয়, এখানে আরও অনেকগুলো বিষয় রয়েছে যা হিসেবে আসছে না। সরকার যেভাবে এপ্রিল ও মে মাসে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে একইভাবে যদি আগামী কয়েক মাসেও দৃঢ় লকডাউনের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে, তাহলে কখনই মৃত্যুর হার এত বেশি হবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here