খবর৭১ঃ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। অতঃপর উত্তর দিক থেকে বাঁক নিচ্ছে উত্তর-পূর্ব দিকে। এখন পর্যন্ত যা গতিপ্রকৃতি, তাতে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান প্রলয়ংকারী রূপ নিয়ে মঙ্গলবার রাতে বা বুধবার খুলনা উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান বলেন, বর্তমানে যে গতিমুখ রয়েছে, তা পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশে ঢোকার পথ নির্দেশ করছে। তবে গতিপথ যে কোনো সময় পরিবর্তন করতে পারে। আর যে গতিতে এগোচ্ছে, সেই গতি ধরে রাখলে ১৯ কিংবা ২০ মের দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানবে। আবহাওয়াবিদ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, বর্তমান গতিপথ অব্যাহত থাকলে এটি ১৯ মে রাতে বাংলাদেশের হিরণ পয়েন্টের কাছাকাছি কোনো স্থান দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানবে। সিএনএনের আবহাওয়াবিদ জেনিফার গ্রে বলছেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের শক্তি বাড়ছে। এটি আগামী সপ্তাহে ভারত বা বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার আগে একটি শক্তিশালী ঝড় হতে পারে। উইন্ডি অ্যাপসের স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যাচ্ছে, মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার দিনে এটি সুন্দরবনের পাশ দিয়ে উপকূলভাগে প্রবেশ করবে।
ভারতীয় আবহাওয়া কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, গত বছরের নভেম্বরে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের গতিপথ অনুসরণ করে বাংলাদেশের ওপরও আছড়ে পড়তে পারে নতুন এই ঘূর্ণিঝড়।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ রবিবার এটা তীব্র রূপ ধারণ করবে। পশ্চিমবঙ্গ ও আশপাশের (বাংলাদেশ) উপকূল দিয়ে এটি সমতলে উঠে আসবে ১৮ থেকে ২০ মের মধ্যে। এক্ষেত্রে কলকাতা হয়ে খুলনা অঞ্চল দিয়ে প্রবেশ করবে বাংলাদেশে। প্রভাব থাকবে নড়াইল-মেহরপুর হয়ে রাজশাহী অঞ্চলেও।
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ থাকায় সব ধরনের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে গভীর সাগরে বিচরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
গতকাল শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গভীর ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।