খবর৭১ঃ
মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তৎকালীন ব্যক্তিগত সহকারী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ছিল মুক্তিযুদ্ধ ঘোষণার মূল হাতিয়ার। বঙ্গবন্ধুর এ যুগান্তকারী ভাষণই ছিল মুক্তিযুদ্ধের ভাষণ।
সেদিন বঙ্গবন্ধু ভাষণ না দিলে দেশের মানুষ গর্জে উঠতো না। দেশ আজ স্বাধীন হতো না। শনিবার (৭ মার্চ) রাত ৮টায় হবিগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসকের আয়োজনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে স্মৃতিচারণ ও গুনীজন সম্মাননা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, আমি মনে করি এ ভাষণৈই মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বলেছিলেন, আমি হুকুম নাও দিতে পারি, তোমাদের যা কিছু আছে তা নিয়েই ঝাপিয়ে পড়বে। এবারের সংগ্রাম, স্বাধিনতার সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম। রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, দেশকে স্বাধীন করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত না হলে এবং বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে দেশ আজও স্বাধীন হত না। ১৯৪৭ সালে বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ছাত্রলীগ গঠন করেন।
১৯৪৯ সালে তিনি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র, ঠিক তখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ওপর নির্যাতন শুরু হয়। তখন বঙ্গবন্ধুসহ ১২ জন এ নির্যাতনের প্রতিবাদ করেছিলেন। যার ফলে ১১ জনকে মুচলেকা ও জরিমানা দিতে হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু মুচলেকা বা জরিমানা দিতে রাজি হননি। যখন বঙ্গবন্ধুকে মুছলেকা দিতে বলা হয়েছিল, তখন তিনি গর্জে উঠে ছিলেন। বলেছিলেন, আমিতো অন্যায় করিনি, ন্যায় সঙ্গত কাজ করেছি অমি কেন মুচলেকা দিব।
ওই দিন বঙ্গবন্ধুকে বহিস্কার করা হয়।তিনি আরও বলেন, ওই দিননই বাঙালি জাতি বুঝতে পেরেছিলো বঙ্গবন্ধু ইস্পাত দিয়ে গড়া, কারো কাছে মাথা নত করেন না। আর কোন করবেনও না। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন তার কোনদিন ফাঁসি হবে না। কারণ তিনি অধিকার আদায়ে কাজ করছেন, ন্যায়ের পথে কাজ করছেন। তিনি পরোপকারী ও উদার মনের মানুষ ছিলেন। নিজের গায়ের চাদর খুলে দিয়ে মানুষকে পড়িয়ে দিতেন।
ধানের গোলা থেকে ধান দিয়ে গরীব-দুঃখীদের সাহায্য করতেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক মোঃ নুরুল ইসলাম, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী ও হবিগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলামসহ অনেকে।