খবর৭১ঃ বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় ২১ জনকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে অব্যাহতি পূর্বক তাদের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।
এছাড়া আবেদনের প্রেক্ষিতে ১১ জনকেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে অব্যাহতি দেয়া হলো ৩২জনকে। মঙ্গলবার এই ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ওই ২১ জনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন – সহসভাপতি তানজিল ভূঁইয়া তানভির, আরেফিন সিদ্দিক সুজন, আতিকুর রহমান খান, বরকত হোসেন হাওলাদার, শাহরিয়ার কবির বিদ্যুৎ, সাদিক খান, সোহানী হাসান তিথী, মুনমুন নাহার বৈশাখী, আবু সাঈদ (সাস্ট), রুহুল আমিন, রাকিব উদ্দিন, সোহেল রানা ও ইসমাইল হোসেন তপু, দফতর সম্পাদক আহসান হাবীব, ধর্ম সম্পাদক তাজ উদ্দীন, উপদফতর সম্পাদক মমিন শাহরিয়ার ও মাহমুদ আব্দুল্লাহ বিন মুন্সী, উপসাংস্কৃতিক সম্পাদক বি এম লিপি আক্তার ও আফরিন লাবনী এবং সহসম্পাদক সামিয়া সরকার ও রনি চৌধুরী।
পৃথক আরেক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের নেতাদের নিজ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগ থেকে ১১ নেতাকে অব্যাহতি দিয়ে তাদের পদ শূন্য করা হলো। তারা হলেন- সহসভাপতি এস এম তৌফিকুল হাসান সাগর, আমিনুল ইসলাম বুলবুল, বি এম শাহরিয়ার হাসান, হাফিজুর রহমান ও এস এম হাসান আতিক, স্বাস্থ্য সম্পাদক শাহরিয়ার ফেরদৌস, উপস্বাস্থ্য সম্পাদক রাতুল সিকদার ও শাফিউল সজিব, উপপ্রচার সম্পাদক সিজান আরেফিন শাওন, উপপাঠাগার সম্পাদক রুশী চৌধুরী এবং সহসম্পাদক আঞ্জুমানারা অনু।
গত ২৯ মে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বিভিন্ন অভিযোগে বিতর্কিত ১৯ জনের পদ শূন্য ঘোষণা করেন সে সময়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শোভন ও রাব্বানী। তবে সে সময় কোন ১৯টি পদকে শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে বা কারা সেই বির্তকিত ১৯ জন সে বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি এ বিজ্ঞপ্তিতে।
প্রসঙ্গত ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর আড়াই মাস পর ৩১ জুলাই রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। পরে চলতি বছরের ১৩ মে ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন শোভন-রাব্বানী।
ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর থেকেই কমিটিতে ছাত্রদল-জামায়াত শিবির ও ব্যবসায়ী, বিবাহিতদের পদ দেয়া হয়েছে অভিযোগ তুলে পদবঞ্চিতরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। আন্দোলনে নামেন সর্বশেষ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ ও অবস্থানে থাকা অর্ধশত নেতা। যারা এই কমিটি থেকে বাদ পড়েন ও প্রত্যাশিত পদবঞ্চিত হন।
পদবঞ্চিতরা ১৬ মে বিভিন্ন অপরাধ অপকর্মে জড়িত এবং সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও রেওয়াজ পরিপন্থী উপায়ে পদপ্রাপ্ত বিতর্কিত ৯৯ নেতার নাম প্রকাশ করেন। দুই দফায় ক্যান্টিন ও টিএসসিতে কয়েক দফায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা তাদের ওপর হামলা চালান।
এসব নিয়ে আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছলে ১৯মে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সিনিয়র চার নেতার হস্তক্ষেপে আন্দোলন স্থগিত করে পদবঞ্চিতরা।