খবর৭১ঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে পদ্মা-মহানন্দা-পাগলা ও পুণর্ভবা নদীতে হঠাৎ করে পানি বাড়ায় ফসলের ক্ষেতসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। উজানে গঙ্গা অববাহিকায় প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে ভারতের বিহার ও আসাম থেকে ধেয়ে আসা পানিতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা করছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
এদিকে আকস্মিক এ পানি বৃদ্ধির কারণে সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১২শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সেইসাথে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৪ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমির ফসল। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে জেলায় অশাল বন্যার আশংকা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে জেলার নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধির কারণে পদ্মা নদী তীরবর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের সুন্দরপুর, বাগডাঙ্গা, নারায়নপুর ও আলাতুলী ইউনিয়ন এবং শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা, উজিরপুর ও দ‚র্লভপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। এতে করে প্রায় ১২শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মৌওদুদ আলম খাঁ জানান, সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের সাড়ে ৯শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ১ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমির শাকসবজি ও মাসকালাই পানিতে ডুবে গেছে।
অন্যদিকে শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা, উজিরপুর ও দুলর্ভপুর ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পাঁকা ইউনিয়ন। শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আরিফুল ইসলাম জানান, এ উপজেলার ৩ ইউনিয়নের ৩৫০ টি পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। অন্যদিকে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার সুলতান আলী জানান, পাঁকা, উজিরপুর ও দুলর্ভপুর এলাকার নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২৫’শ হেক্টর জমির মাসকলায় কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে পানি কমতে থাকলে এ ক্ষতির পরিমান কমে আসবে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা নদীর পানি ২১.৬৯ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছে। অর্থাৎ পানি বেড়েছে ৮ সে.মি। গত চার দিনে পানি বৃদ্ধির হার ৪৩ সে.মি। সূত্রটি জানায় পদ্মার বিপদসীমা ২২.৫ মিটার। অর্থাৎ পদ্মা এখনও বিপদসীমার ৮১ সে.সি নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে মহানন্দা নদীতে গত ৩০ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ৯ সে.মি । মহানন্দার বিপদসীমা ২১.০ মিটার। যা বিপদসীমার ৯১ সে.সি নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আতিকুর রহমান জানান, জেলায় এখন পর্যন্ত বন্যার কোন আশংকা নেই। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রও এ ব্যাপারে কোন সতর্কতা জারি করেনি।