খবর ৭১: ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যায় জড়িত তার সহপাঠী শামীমকে ৫ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. শাহ আলম ফেনীর সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সারাফ উদ্দিনের আদালতে শামীমকে উপস্থাপন করে সাত দিনের রিমান্ড চায়। পরে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে সোনাগাজী উপজেলার পশ্চিম তুলাতলি গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। তার বাবার নাম মো. সফি উল্লাহ। শামীম সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী। নুসরাতের সহপাঠী। পিবিআই’র পরিদর্শক মো. শাহ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মামলার এজহারভুক্ত আসামি নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম ও আবদুর রহীম শরীফের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে শামীমের সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে আসে।
গত ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারীরা। এর আগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় তারা। পরে আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত মারা যান।
শ্লীলতাহানির মামলায় আগে থেকেই কারাবন্দি ছিলেন সিরাজ উদ দৌলা। হত্যা মামলা হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ১৩ জন গ্রেফতার হয়েছে। সিরাজ উদ দৌলার ‘ঘনিষ্ঠ’ নূর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আদালতে।
বাকি আসামিদের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সিরাজ উদ দৌলাকে ৭ দিন, আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলমকে ৫ দিন, জাবেদ হোসেনকে ৭ দিন, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, আবছার উদ্দিন, আরিফুল ইসলাম, উম্মে সুলতানা পপি ও যোবায়ের হোসেনকে ৫ দিন করে রিমান্ড ও কামরুন নাহার মনিকে ৫ দিন রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। গ্রেফতার রয়েছেন হাফেজ আবদুল কাদের। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক জান্নাতুল আফরোজ মনি।
এদিকে, পিবিআই’র প্রধান বনজ কুমার মজুমদার জানান, তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় জড়িত পরোক্ষদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। এরই মধ্যে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করতে থানায় যাওয়ার পর নুসরাতের ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়ায় সোমবার (১৫ এপ্রিল) সোনাগাজী থানার ওই সময়ের ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করা হয়েছে। এ মামলাও তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।