খবর ৭১: ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডে পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতি ও যোগসাজশের যে অভিযোগ উঠেছে তার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সারাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা সংখ্যা ও নৃশংসতার মাত্রা বিবেচনায় এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তা অকল্পনীয়। এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হলে দায়ী ব্যক্তি ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনের কঠোরতম প্রয়োগ নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই।
পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাশিত দ্রুততায় এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতার করতে পারা যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা আশা করি তদন্ত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে এবং দোষী ব্যক্তিরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবে। কিন্তু এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলা ও যোগসাজশের যে অভিযোগ উঠেছে তাতে আমরা আতঙ্কিত। ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে, ওই পুলিশ কর্মকর্তা নুসরাতের অভিযোগ যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে আমলে তো নেনইনি, বরং অভিযোগটির সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকি নুসরাতকে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার পরও ওই পুলিশ কর্মকর্তা একে আত্মহত্যার চেষ্টা হিসেবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। মামলা নেয়ার ক্ষেত্রেও ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে।’
ড. জামান বলছেন, ‘এ ধরনের প্রতিটি অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত হতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা তথা সার্বিকভাবে পুলিশ প্রশাসনকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। এজন্য আমরা বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি। কারণ পুলিশ বাহিনী যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন না করলে দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করবে।’
পুলিশের নিজস্ব তদন্ত এক্ষেত্রে যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী নিজেদের কতটা জনবান্ধব ও জনমুখী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন সেটা তারা নিজেরাই ভেবে দেখতে পারেন। একজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে, অথচ এরই মধ্যে ফেনীর পুলিশ সুপার লিখিতভাবে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের পক্ষ নিয়েছেন। সুতরাং পুলিশের এই তদন্ত কতটা কার্যকরী হবে সে ব্যাপারে আমরা একেবারেই আশ^স্ত হতে পারছি না।’
শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট থানা থেকে প্রত্যাহার করে নেয়াটা কোনো শাস্তি হতে পারে না উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘দোষীরা কেউ ছাড়া পাবে না- মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই আশ্বাসের যথাযথ বাস্তবায়ন দেখতে চায় দেশের মানুষ। এ লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে বিচারবিভাগীয় তদন্তের উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’