চামড়া শিল্পের বর্জ্যে দূষিত ধলেশ্বরী

0
425

খবর৭১ঃ বহু সমালোচনার পরও ধলেশ্বরী নদীতে চামড়া শিল্পনগরীর দূষিত পানি ফেলা বন্ধ করেনি বিসিক। উল্টো, অবৈধ ডাম্পিং ইয়ার্ডের সীমানা বাড়িয়ে নেয়া হয়েছে নদীর কিনারায়, বর্জ্যের চাপ সামলাতে দেয়া হয়েছে বালির বাঁধ। স্থানীয়দের আশঙ্কা, আসছে বর্ষায় আবারো বর্জ্যের ভাগাড় হবে ধলেশ্বরী। এদিকে, নদী দূষণের সম্পূর্ণ দায় বিসিকের বলে দাবি ট্যানারি মালিকদের। যদিও মালিকদের কারণেই সিইটিপি সঠিকভাবে বর্জ্য শোধন করতে পারছে না বলে অভিযোগ প্রকল্প পরিচালকের।

নদী পাড়ের একটি ঝোপের আড়ালে দৃশ্যমান প্রায় দেড়শ ফুট লম্বা পাইপ, যা দিয়েই চামড়া শিল্পনগরীর সিইটিপির দূষিত তরল বর্জ্য ধলেশ্বরীতে ফেলছে বিসিক। তবে হঠাৎ দেখলে যে কারো মনে হতে পারে গায়েবি কোনো উৎস থেকে পানি আসছে নদীতে। ফলাফল, একেবারেই জেলেশূন্য হয়ে পড়েছে ধলেশ্বরী, ব্যবহারের সম্পূর্ণ অনুপযোগী নদীর পানিও। বর্জ্যের বিকট গন্ধে ক্রমেই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে নদীপাড়ের লংকারচর, বকচরসহ ৫/৬টি গ্রামও।
স্থানীয় একজন বলে, নদীর মাঝে শত শত মানুষ গোসল করতো। এখানে এখন পশুও গোসল করানো হয় না। হাত দেয়া যায় না পানিতে। আর গন্ধে থাকা যায় না।
নদী দূষণের দায় নিতে রাজি নয় কেউই। পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করে একে অন্যের উপর দায় চাপাচ্ছেন প্রকল্প পরিচালক আর ট্যানারি মালিকরা।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বলেন, বিসিক এটা ইমপ্লিমেন্টেশন করছে। যে পর্যন্ত আমরা এটা বুঝে না নেই ততক্ষণ এটা বিসিকেরই দায়।
চামড়া শিল্পনগরী প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সিটিপি লিকুইড ছাড়া সলিড কিছু খেতে পারে না। সেপটিক ট্যাংকটা পর্যন্ত ঠিক মত করতে পারেনি। মানুষের বর্জ্যটা পর্যন্ত সরাসরি দিয়ে দিচ্ছে।’
হাজারিবাগ থেকে ট্যানারি সাভারে স্থানান্তর হয়েছে ঠিকই কিন্তু কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে সমস্যার সমাধান হয়নি কিছু। বরং হুমকিতে ঠেলে দেয়া হলো আরো একটি নদী। এমন মত বিশ্লেষকদের।
পরিবেশ বিশ্লেষক ড. আইনুন নিশাত বলেন, চামড়া কারখানাগুলো দুঃখের বিষয় হচ্ছে হাজারীবাগ থেকে সরিয়ে নিয়ে গেলেই সমস্যা সমাধান হল না। এখানে আমলাদের কোন গাফিলতি আছে কিনা দেখতে হবে।
এদিকে, বর্ষা মৌসুম আসার আগে শিল্পনগরীতে তৈরি হয়েছে নতুন ঝুঁকি। এর আগে ৬ বার ডাম্পিং ইয়ার্ডের বাঁধ ভেঙ্গে বর্জ্যে সয়লাব হয়েছে নদী।
বিসিকের ইশারায় এবার ডাম্পিং ইয়ার্ড আর নদীর মাঝের সমতল ভূমিকেও বর্জ্যের ভাগাড় বানিয়েছে ট্যানারিগুলো। যার ফলে নদী আর ডাম্পিং ইয়ার্ডের মধ্যে দূরত্ব এখন মাত্র সাড়ে ৪ ফুট।
খবর৭১ /জি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here