শামীমার সন্তানের মৃত্যুতে ব্রিটিশ মন্ত্রী সমালোচনার মুখে

0
663

খবর৭১ঃযুক্তরাজ্য থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় গিয়ে ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দেয়া জিহাদি-বধূ শামীমা বেগমের শিশুসন্তানটি মৃত্যুর ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ।

২০১৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে আইএসে যোগ দিতে শামীমা লন্ডন ছেড়ে সিরিয়ায় যান। আইএসের পতনের পর তিনি এখন সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে আছেন। খবর বিবিসির।

সম্প্রতি তিনি তার গর্ভের সন্তানটিকে বাঁচাতে যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার ইচ্ছার কথা প্রকাশ করলে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল হয়ে গেছে বলে জানান। এর আগে তিনি আরও দুই শিশুসন্তানকে হারান। এ জন্য শামীমা বেগম এখানকার প্রতিকূল পরিবেশকে দায়ী করেন।

শামীমার পরিবারের ঘনিষ্ঠ একজন বলেন, যুক্তরাজ্য শিশুটির নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে লেবার পার্টি বলছে- শিশুটির মৃত্যু ছিল একটি দাম্ভিক ও অমানবিক সিদ্ধান্তের ফল।

ব্রিটিশ সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, যে কোনো শিশুর মৃত্যুই দুঃখজনক। ওই মুখপাত্র বলেন, সরকার অব্যাহতভাবে সিরিয়া ভ্রমণের ব্যাপারে সতর্ক করে এসেছে এবং লোকজনকে সন্ত্রাসবাদ এবং বিপজ্জনক যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে যা কিছু করা সম্ভব সেসব আমরা চালিয়ে যাব।

২০১৫ সালে স্কুলের আরও দুই বান্ধবীসহ যুক্তরাজ্য ছাড়েন। পরে শামীমা বেগম ব্রিটেনে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন; কিন্তু ব্রিটিশ সরকার তার নাগরিকত্ব বাতিল করে।

এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে, যখন ইসলামিক স্টেটের স্বঘোষিত খেলাফত বিলুপ্তপ্রায়, তখন সিরিয়ার বাঘুজে এক শরণার্থী শিবিরে তাকে খুঁজে পান দ্য টাইমস পত্রিকার এক সাংবাদিক।

তখন ৯ মাসের গর্ভাবস্থায় ছিলেন শামীমা বেগম এবং তিনি তখন জানিয়েছিলেন যে, সে তার স্বামীর (ডাচ আইএস যোদ্ধা) সঙ্গে আইএসের সর্বশেষ ঘাঁটিতে বসবাস করতেন।

জারাহ নামে তার যে শিশুটি বৃহস্পতিবার মারা গেছে- সে জন্ম নেয়ার পরপরই বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন- তিনি ব্রিটেন ফিরে যেতে চান এবং তার সন্তানকে যুক্তরাজ্যে বড় করতে চান।

মেডিকেল সার্টিফিকেট অনুসারে নিউমোনিয়ার কারণে মারা গেছে জারাহ। তার বয়স হয়েছিল তিন সপ্তাহেরও কম।

কনজারভেটিভ এমপি এবং সাবেক আইনমন্ত্রী ফিলিপ লি এ মর্মান্তিক ঘটনার পর সরকারের প্রতি তাদের নৈতিক দায়দায়িত্বের প্রতিফলন দেখাতে আহ্বান জানান।

খাবারের অভাব, কম্বল ও তাঁবুর সংকটের কারণে আশ্রয়শিবিরের অবস্থা ভয়াবহ। ক্যাম্পের ভেতর গরম করার কোনোরকমের ব্যবস্থা নেই এবং রাতের বেলা তাপমাত্রা তিন কিংবা চার সেলসিয়াস অনুভূত হলেও তাঁবুর ভেতর বাচ্চাদের শরীর গরম রাখার মতো কোনো চুলা ছিল না।

তিন মাসের মধ্যে ১০০-র বেশি মানুষ ক্যাম্পে পৌঁছানোর পথে কিংবা পৌঁছানোর পরপরই মারা গেছে, এদের মধ্যে তিন ভাগের দুই ভাগের বয়স পাঁচ বছরের নিচে।

সাবেক মেট্রোপলিটন পুলিশের চিফ সুপারিন্টেনডেন্ট বলেন, আমরা শিশুটিকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হলাম।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here