খবর ৭১: শ্রীলঙ্কায় আক্ষরিক অর্থেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে। দল যেখানে একের পর এক ব্যর্থতার মুখ দেখেই চলেছে, সেখানে তার ক্ষমতা কমিয়ে এনেছে দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। এখন থেকে তিনি আর শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের (এসএলসি) নির্বাচক প্যানেলে থাকছেন না। আর গুঞ্জন আছে, এর জের ধরে যেকোনো সময় পদত্যাগ করে বসতে পারেন অভিজ্ঞ এই কোচ।
দেশটির শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম ডেইলি মিরর জানিয়েছে, দেশটির ক্রীড়ামন্ত্র হারিন ফার্নান্দোর জারি করা নতুন নির্দেশ অনুযায়ী এখন থেকে দেশের ভেতরে ও দেশের বাইরে আর কখনোই শ্রীলঙ্কা জাতীয় ক্রিকেট দলের স্কোয়াড নির্বাচনে ভূমিকা রাখবেন না বাংলাদেশের সাবেক কোচ হাতুরুসিংহে। এমনকি কোনো ম্যাচের একাদশ গঠনের দায়িত্বও এখন থেকে কেবল অধিনায়ক, ম্যানেজার ও আসান্থা ডি মেলের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের নির্বাচক প্যানেলের ওপর থাকছে।
ক্রীড়ামন্ত্রীর এই নির্দেশে সাইন করে ফেলেছেন ক্রীড়া সচিব চুলানন্দ পেরেরা। আর এই নির্দেশের একটি কপি অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত দলের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় থাকা দলটি এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে যাচ্ছেতাইভাবে হেরে বিপাকে পড়েছে। সেই অবস্থায় এই চিঠি নতুন করে চাপের মুখে ফেলেছে তাদের।
চিঠি সিরিজ চলাকালেই টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার অর্থ হলো সিদ্ধান্তটিও এই সিরিজ থেকেই কার্যকর করা হবে। আগামী এক ফেব্রুয়ারি ক্যানবেরাতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে নামবে শ্রীলঙ্কা। সেই ম্যাচ থেকেই ক্ষমতা খর্ব হবে হাতুরুসিংহের।
চিঠিতেও সেই কথাই বলা আছে। বোর্ডের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র, ‘নতুন এই নীতিমালা সম্বলিত চিঠি অস্ট্রেলিয়ায় টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে, আগামী এক ফেব্রুয়ারি ক্যানবেরার ম্যাচে যে একাদশ গঠন করা হবে সেখানে কোচের কোনো প্রভাব থাকবে না।’
গেল ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চাকরি ছেড়ে দিয়ে শ্রীলঙ্কা দলের দায়িত্ব নেন হাতুরুসিংহে। তখন এই হাতুরুসিংহেকেই নির্বাচক প্যানেলে ঢোকার জন্য রীতিমত নিজেদের সংবিধানেও পরিবর্তন আনে। অথচ, এখন দলের পারফরম্যান্সের যখন চূড়ান্ত অধঃপতন হয়েছে, তখন সেই বোর্ডই হাতুরুসিংহে ছিটকে ফেললো। ওই সূত্রটির কথাতেই এটা প্রমাণিত। তিনি বলেন, ‘কোচকে নির্বাচক প্যানেলে রাখার কোনো নীতিমালা বোর্ডের সংবিধানেই নেই।’ ডি মেলের নেতৃত্বে নির্বাচক কমিটিতে এখন আছেন ব্রেন্ডন কুরুপ্পু, হেমন্ত বিক্রমারতেœ ও চামিন্দা মেন্ডিস।
এই যখন অবস্থা তখন গণমাধ্যমটির দাবি যেকোনো সময় পদত্যাগ করে ফেলতে পারেন হাতুরুসিংহে। এর আগে বাংলাদেশেও মেয়াদ শেষ করার আগেই তিনি চিঠি পাঠিয়ে পদত্যাগ করে ফেলেছিলেন। এবার তিনি কোন পথে হাঁটবেন সেটা সময়ই বলে দেবে!