চলতি মাসেই রিজার্ভ চুরির মামলা: অর্থমন্ত্রী

0
400

খবর৭১ঃ মামলার আগে তদন্ত হয় না। মামলার পরই তদন্ত হয়। নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটেছে। সেখানে মামলা করা হবে। আর ঢাকা বসে কে কি কমিটি করলাম, কোন কমিটি কি সিদ্ধান্ত দিয়েছে তা সঠিক সময় ও সঠিক ফরমেট ছিল না।

রোববার অর্থমন্ত্রণালয়ে রিজার্ভ চুরি সংক্রান্ত ড. ফরাস উদ্দিনের তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ প্রসঙ্গে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

মামলা দায়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চলতি মাসেই বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলা করা হবে। সরকার এমনটি ভাবছে। এর জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে উভয় দেশে আমাদের আইনজীবী আছেন। তারা যৌথভাবে বসে মামলা করার সময় নির্ধারণ করবেন।

রিজার্ভ চুরির মামলা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, আর্থিক প্রতিষ্ঠান সচিব মো. আসাদুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের সঙ্গে প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেছেন অর্থমন্ত্রী। শেষে সাংবাদিকদের কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন মন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, মামলার আগেই তদন্ত হলে তাহলে মামলা করব কেন। তদন্ত করলে পজেটিব বা নিগেটিভ আসবে। এখনও কিছু জানিনা। এখনে স্থান হচ্ছে নিউইয়র্কে।

নিউইয়র্কে বসে ফাইল করে মামলা করা হবে। সুতরাং ঢাকায় বসে কে কি করলে কি রিপোর্ট দিয়েছে আমার মনে সেটি সঠিক সময় ছিল না।

অর্থমন্ত্রী বলেন, মামলা দেখভালের জন্য বাংলাদেশের একজন আইনজীবী রয়েছেন। ঠিক তেমনিভাবে আমেরিকায়ও একজন আইনজীবী আছেন। তারা যৌথভাবে সময় নির্ধারণ করে এ মামলা দায়ের করবেন। তবে কার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে এখনও সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। মামলায় কতজনকে আসামি করব, কতজনকে বাদী হবে এগুলো দুই দেশের আইনজীবীরা বসে ঠিক করবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাস উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছিল। কমিশন রিপোর্ট দিয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত সেটি প্রকাশ করা হয়নি। আপনি তা প্রকাশ করবেন কি-না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রকাশ করার প্রয়োজন হলে প্রকাশ করব আর প্রয়োজন না হলে করা হবে না।

অর্থমন্ত্রী এসব সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, মামলার আগেই তদন্ত হলে তাহলে মামলা করব কেন। তদন্ত করলে পজেটিব বা নিগেটিভ যে কোনো রিপোর্ট আসবে। এখনও আমরা কিছু জানিনা। ঘটনাটি ঘটেছে নিউইয়র্কে। নিউইয়র্কে বসে ফাইল করে মামলা করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের যে আইনজীবী বাংলাদেশের পক্ষে লড়বে তাকে দেয়া কমিশনের পরিমাণ কি খুব বেশি কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এটি জানি। আমরা মনে করি প্রত্যেক আইনজীবীর একটি নির্ধারিত ফি আছে। আমি নিজেও একসময় আইনীজীবীর প্র্যাকটিস করতাম। আমারও একটি নির্দিষ্ট চার্জ ছিল। আমি মনে করি পেশাদার আইনজীবীদের সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ চার্জের সীমা আছে। আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। সুইফটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা হ্যাকড করে পাঁচটি সুইফট বার্তার মাধ্যমে চুরি হওয়া এ অর্থের মধ্যে শ্রীলংকায় যাওয়া দুই কোটি ডলার ফেরত আসে। তবে ফিলিপাইনে যাওয়া আট কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে এখনও ফেরত আসেনি ছয় কোটি ৬৪ লাখ ডলার। এ অর্থ ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকে জমা রয়েছে।

বৈঠক সূত্র জানায়, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক (ফেড) এবং ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here