খবর ৭১: মিয়ানমারে কারাদণ্ডিত বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের আপিল নাকচ করে দিয়েছেন দেশটির হাইকোর্ট। ফলে তাদের কারাদণ্ড বহাল থাকছে। শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) এক রায়ে তাদের আপিল নাকচ করেন হাইকোর্ট। খবর আল জাজিরার।
২০১৭ সালের ডিসেম্বর মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে তদন্তের সময় গ্রেফতার করা হয় রয়টার্সের সাংবাদিক ওয়া লোন (৩২) ও কিয়াও সোয়ি ও’কে। পরে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের দায়ে তাদের সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
লোন ও সোয়ির আইনজীবীরা গত নভেম্বরে ইয়াঙ্গুনের হাইকোর্টে তাদের পক্ষে আপিল করেন। ডিসেম্বরে এর শুনানি শেষ হয়।
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে পুলিশ সদস্যদের আমন্ত্রণে এক রেস্টুরেন্টে যাওয়ার পরই নিখোঁজ হন তারা। পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের দায়ে তাদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ির দাবি, মিয়ানমার পুলিশ তাদেরকে ফাঁসিয়েছে।
আপিলে লোন ও সোয়ির মুক্তির দাবি জানিয়ে বলা হয়েছিল, সাংবাদিকদ্বয়ের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিচারকার্য অন্যায্যভাবে করা হয়েছে। কিন্তু মিয়ানমারের হাইকোর্টের বিচারক অং নাইং শুক্রবার তাদের কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন।
রায় ঘোষণার সময় নাইং বলেন, সাংবাদিকদ্বয়ের আইনজীবীরা তাদের নির্দোষ প্রমাণিত করতে পর্যাপ্ত প্রমাণ জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
তিনি বলেন, কেবল এটুকু বলাই যথেষ্ট নয় যে, আসামিরা সাংবাদিকতার নিয়ম মেনে কাজ করেছে। এটা একটা যথোপযুক্ত শাস্তি।
বর্তমানে লোন ও সোয়ির কাছে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার অপশন রয়েছে। শুক্রবার আপিলের রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। রায়ের পর তাদের আইনজীবী থান জ অং জানিয়েছেন, রায়ের বিরুদ্ধে এবার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন কিনা সে ব্যাপারে তিনি তার মক্কেলদের সঙ্গে কথা বলবেন।
এদিকে শুক্রবারের রায় নিয়ে রয়টার্সের এডিটর-ইন-চিফ স্টিফেন জে. অ্যাডলার বলেন, আজকের রায় ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ি ও’র সঙ্গে ঘটা বহু অন্যায্যতার একটি। তারা কেবল একটি কারণে কারাগারে রয়েছে। সেটি হচ্ছে, ক্ষমতাসীনরা সত্য চাপা দিতে চায়।
তিনি বলেন, রিপোর্টিং কোন অপরাধ নয়। যতদিন না মিয়ানমার তাদের এই ভুল শোধরাবে, ততদিন মিয়ানমারে গণমাধ্যম স্বাধীন হবে না। গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি মিয়ানমারের প্রতিশ্রুতি প্রশ্নবিদ্ধ থাকবে।