জামাললগঞ্জ(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধি:
অাসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাওর বেষ্টিত প্রাকৃতিক অপার সম্ভবনাময় সুনামগঞ্জ জেলার তিনটি উপজেলা জামালগঞ্জ,তাহিরপুর,ধর্মপাশা,ও মধ্যনগর থানা নিয়ে সুনামগঞ্জ-১আসন গঠিত।
এই বিশাল নির্বাচনী এলাকায় ২৩টি ইউনিয়ন রয়েছে।নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ ভোটার তালিকা অনুযায়ী এই আসনে মোট ভোটার রয়েছে ৩ লক্ষ ৯৯ হাজার ৩ শত ৫৯ জন।
এর মধ্যে জামালগঞ্জ উপজেলায় মোট পুরুষ ভোটার ৫৬ হাজার ৪ শত ৫৮ জন ও নারী ভোটার ৫৬ হাজার ২ শত ৫০ জন।
ধর্মপাশা(মধ্যনগর)উপজেলায় মোট পুরুষ ভোটার ৭৭ হাজার ৮ শত ৮৯ জন ও নারী ভোটার ৭৮ হাজার ২ শত ৭০ জন।
তাহিরপুর উপজেলায় মোট পুরুষ ভোটার ৬৫ হাজার ৫ শত ৪২ জন ও নারী ভোটার ৬৪ হাজার ৯ শত ৫০ জন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কে সামনে রেখে এ আসনে মোট ভোট কেন্দ্র হল ১৫০টি তনমধ্যে জামালগঞ্জে ৪০টি,ধর্মপাশায় ৬৪টি,তাহিরপুরে ৪৬টি ভোট কেন্দ্র।তফশীল অনুযায়ী আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহন অনুষ্টিত হবে।
নির্বাচন কে সামনে রেখে ১০ ডিসেম্বর প্রতিক বরাদ্বের পর থেকে প্রার্থীরা নির্বাচনি গণসংযোগ,পথসভা,মিছিল,মিটিং শুরু করেছেন।
সুনামগঞ্জ-১ আসনে নজির হোসেন এর ব্যাতিত্রুম নয়।তিনিও গত সোমবার ১০-১১ডিসেম্বর সোমবার তার পিতা মাতার কবর জিয়ারত করে তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ারপুর,বালিজুরী,তাহিরপুর বাজারে কর্মীসভা,বড়ধল, কাউকান্দি,নয়াবাজার,শ্রীপুর বাজার,মন্দিয়াতা,জয়পুর,সুলেমানপুর আসানপুর,সানবাড়ী,সরস্বতীপুর,আবিদ নগর,দুগনই গণসংযোগ পথসভা ও রাতে মধ্যনগরে কর্মী বৈঠক করবেন।গণসংযোগ ও পথসভায় এসব স্থানে ধানের শীষ প্রার্থী নজির হোসেনের সাথে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আনিসুল হক,ধর্মপাশা উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালিব খাঁন,জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল অংশ গ্রহন করেন।
বিএনপি প্রার্থী সাবেক সংসদ নজির হোসেন আগামী দিনে এলাকার উন্নয়নে ভোটারদের সামনে পুরো নির্বাচনি এলাকার একটি পরিকল্পনা তুলে ধরেন।তিনি ১০ দফা পরিকল্পনায় বলেন,
১। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ক্ষেত্রে —
(ক) এলজিইডি কর্তৃক প্রনীত রোডম্যাপ বাস্তবায়ন।সুনামগঞ্জ নেত্রকোনা আঞ্চলিক সড়ক আগামী পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা মেয়াদে বাস্তবায়ন।
(খ)টেকেরঘাট পর্যন্ত রেল লাইন সম্প্রসারণ করা ।
(গ) ধর্মপাশার জয়শ্রী হতে গোলকপুর পর্যন্ত উড়াল সড়ক নির্মাণ করা ।
(ঘ) ধর্মপাশা-মধ্যনগর-তাহিরপুর-জামালগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগের উন্নয়ন করা ।
২। কৃষি/ মৎস্য খাতের আমূল সংস্কার করা।
(ক) নদী-খাল খনন ও ইকোলজী পুনরুদ্ধারকে সমন্বিত কর্মসূচীতে একীভূত করা ।
(খ) মৎস্য ইকোলজী পুনরুদ্ধার, টাংগুয়াকে পিপিপি এর অধীনে নিয়ে আসা ।
(গ) ২০ বছর টেকসই ডুবন্ত বাঁধ ব্যবস্থা চালু এবং অকাল বন্যা নিয়ন্ত্রণ ।
(ঘ) হাওর উপযোগী উন্নত ফলনশীল ধান উদ্ভাবন এবং আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার নিশ্চিত করা ।
(ঙ) গজারিয়া সুইচগার্ড থেকে খাল খনন করা ।
৩। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি সাধন ।
(ক) ২০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ ।
(খ) টেকসই স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ।
৪। গুণগত শিক্ষার মান বৃদ্ধি করা ।
(ক) ভাটী এলাকায় জনশক্তির উন্নয়নের জন্য কারিগরি কলেজ প্রতিষ্ঠা ।
(খ) হাওর বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা ।
(গ) হাওর সুবিধাসহ শিক্ষা সুবিধা ও কাঠামো তৈরী করা ।
৫। কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ।
(ক) মধ্যনগর উপজেলা বাস্তবায়ন ।
(খ) লাউড়ের গড়ে ইমিগ্রেশন ষ্টেশন এবং কাস্টমরোড খোলা ।
(গ) টেকেরঘাটে শিল্প জোন গড়ে তোলা ।
(ঘ) জামালগঞ্জে হাওর ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের হেডকোয়ার্টার স্থাপন করা।
(ঙ) “টাংগুয়ার হাওর সমন্নিত হাওর উন্নয়ন জোন” ট্যুরিজম, শুল্ক ষ্টেশন সম্প্রসারণ, মেঘালয়ের খনিজ নির্ভর শিল্প, লাউড়ের গড়ে রপ্তানীমুখী ইমিগ্রেশন, যাদুকাটা বালু ব্যবস্থাপনার উৎপাদনমুখী সংস্কার ইত্যাদি বাস্তবায়ন করে ৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান করা ।
৬। পর্যটন শিল্প ।
(ক) সুনামগঞ্জ-১আসনকে পর্যটন এলাকা ঘোষণা।পর্যটন শিল্পকে উৎসাহিত করা, অবকাঠামো ও সুবিধা সমূহ নির্মাণ।
(খ)বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ক্ষয়ক্ষতি লাগবের জন্য সজাগ থাকা এবং পরিকল্পনা গ্রহন করা ।
(গ)পরিবেশ,প্রতিবেশ জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা করা।
(ঘ) টাংগুয়ার হাওর ইনটিগ্রেটেড হাওর জোন”গড়ে তোলাঃ চারপাশের সকল নদী খনন, হাওর ভিলেজ গড়ে তোলা। হাওর ভিলেজে ক্ষুদ্র শিল্প এবং মাঝারি শিল্প গড়ে তোলা।নদী খননের মাটি দিয়েই হাওর ভিলেজ গড়ে তোলা যায় ।
(ঙ)টাংগুয়ার হাওর সমন্বিত হাওর উন্নয়ন জোন” গড়ে তোলা এবং অত্র এলাকাকে ক্যাপিটাল ড্রেজিং এর আওতায় নিয়ে আসা।একই সাথে পরিবেশ প্রতিবেশ ও হাওর গ্রাম গড়ে তোলে অত্র এলাকার জীববৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনা । ক্যাপিটাল ড্রেজিং এবং ইকোলজি উদ্ধার একই প্রকল্পভুক্ত করা ।
৭।দুর্নীতি উৎখাত করা ।
৮)লাইনমিনিষ্ট্রি সমূহের বরাদ্ধ জাতীয় অর্থনীতিতে হাওর অঞ্চলের অবদানের অনুপাতে বাড়াতে হবে ।
৯) ভাটী এলাকার গ্রামীন ক্লাব, সাংস্কৃতিক সংগঠন, মসজিদ, মক্তব, মাদ্রাসা, কবরস্থান, মন্দির ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্টান সহ সকল সামাজিক প্রতিষ্ঠানের জন্য আর্থিক বরাদ্ধের ব্যবস্থা করা ।
১০)প্রশাসন ও জনগণের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব সুলভ সম্পর্ক গড়ে তোলা।এছাড়াও এলাকা ভিত্তিক মহা পরিকল্পনা রয়েছে তার।
খবর৭১/ইঃ