নড়াইলে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পালিত হচ্ছে মুক্ত দিবস

0
332

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ ১০ ডিসেম্বর নড়াইল মুক্ত দিবস। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও এ দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পালিত হচ্ছে। নড়াইল মুক্ত দিবস উপলক্ষে সোমবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ৭টায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহ বঙ্গবন্ধু’র মুর‌্যাল, স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভ, জজকোর্ট সংলগ্ন বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ ও রূপগঞ্জ ওয়াপদায় গণকবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে। বিস্তারিত আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের রিপোর্টে,এ সময় জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন (পিপিএম), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ শরফুদ্দীন, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম কবীর, এসএ মতিন, সাইফুর রহমান হিলু সহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। সারাদিনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, শোভাযাত্রা, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে গণসংগীত ও কবিতা আবৃত্তি অনুষ্ঠান। এছাড়া ১০ ডিসেম্বর বিকেল ৩ টায় শহরের রূপগঞ্জ এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা প্রত্যক্ষ যুদ্ধের মাধ্যমে যেভাবে নড়াইলকে মুক্ত করেছিল। উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর এইদিনে নড়াইল শত্রুমুক্ত হয়। নড়াইলের অকুতোভয় বীরমুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার ও পাকসেনাবাহিনীকে পরাস্ত করে নড়াইলকে হানাদারমুক্ত করে। স্বাধীনতাকামীরা উল্লাস করে সড়কে বেরিয়ে পড়ে। জয় বাংলা বলে উড়িয়ে দেয় লাল সবুজের পতাকা। ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর শহরের মাছিমদিয়ায় রাজাকারদের হাতে কলেজ ছাত্র মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান ও ৯ ডিসেম্বর শহরের রূপগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে অবস্থানরত পাকিস্থানী রিজার্ভফোর্স, পুলিশ ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে বন্দুকযুদ্ধ চলাকালে মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান শহীদ হন। এসময় শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে মুক্তিযোদ্ধারা বিপুল গতি নিয়ে হানাদারদের বিরুদ্ধে চড়াও হয়। নড়াইল সদর, লোহাগড়া ও খড়রিয়া মুক্তযোদ্ধা ক্যাম্পের মুক্তিযোদ্ধারা সম্মিলিতভাবে শহরে ত্রিমুখী আন্দোলন শুরু করে। এদিন রাতে আনুমানিক দেড় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা রূপগঞ্জ ওয়াপদায় অবস্থিত পাকিস্থানী ও রাজাকার বাহিনীর সবচেয়ে বড়ক্যাম্পের দক্ষিণ, পূর্ব ও উত্তর দিক থেকে ঘেরাও করে ফেলে। ঐদিন ভোর ৪টা থেকে রূপগঞ্জ জামে মসজিদ এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমির হোসেন ও সাখাওয়াৎ হোসেন রানার নেতৃত্বে বর্তমান নড়াইল প্রেসক্লাব ভবন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাইদুর রহমান সেলিম, জিন্দার আলী খান, মো. কুবাদের নেতৃত্বে এবং ব্যবসায়ী মালেক মোল্লার দোতলায় সদর উপজেলা মুজিব বাহিনীর কমান্ডার শরীফ হুমায়ুন কবির, হালিম মুন্সি, সাইফুর রহমান হিলু ও শেখ আজিবর রহমান প্রমুখের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা শক্রপক্ষের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। যুদ্ধের একপর্যায়ে পাকবাহিনীর দু’জন সেন্ট্রি গুরুতর আহত হলে তারা ভীত হয়ে পড়ে। পরে ১০ ডিসেম্বর সকাল ১১টার দিকে পাকিস্থানী মিলিশিয়া বাহিনীর অধিনায়ক বেলুচ কালা খান ২২ পাকিস্থানী সেনা, ৪৫ জন রাজাকার ও বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রসহ মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। শত্রুমুক্ত হয় নড়াইল। এর পূর্বে ৮ ডিসেম্বর লোহাগড়া থানা এবং ১০ ডিসেম্বর কালিয়া থানা শক্রমুক্ত হয়।
খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here