খবর ৭১: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোটা বাতিল হলেও নীতিমালার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী এবং সমাজের অনগ্রসর মানুষেরা সরকারি চাকরি পাবে। এজন্য একটি নীতিমালা করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীরা এখন আর অবহেলিত না। তাদের মেধা আছে, তারা সাধারণ মানুষের মতই কাজ করতে পারে।
সোমবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২৭তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস এবং ২০তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস-২০১৮ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতে দৃষ্টি ও অন্যান্য প্রতিবন্ধীরা পবিত্র কোরআন, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল থেকে পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জিল্লার রহমান, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের সভাপতি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সাইদুর রহমান।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে সফল প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধানে প্রতিবন্ধী এবং অনগ্রসর মানুষের সুযোগের কথা লিপিবদ্ধ করে গেছেন। তারই আলোকে আজ আমরা প্রতিবন্ধীদের জন্য কাজ করছি। যাদেরকে এক সময় অবহেলা করা হতো, একজন মানুষ হিসেবে যার কোনো অধিকার ছিল না আমরা ক্ষমতায় আসার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রতিবন্ধী সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি। প্রতিবন্ধীরা এখন লেখাপড়া করছে, খেলাধুলার মাধ্যমে স্বর্ণ জয় করে তারা দেশের সুনাম বয়ে নিয়ে আসছে। সুতরাং এখন আর প্রতিবন্ধীরা অবহেলার পাত্র নয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের একজন প্রতিবন্ধী বোন যার হাত নেই, তিনি পা দিয়ে চমৎকার একটি নৌকা বানিয়ে আমাকে উপহার দিয়েছেন। এটা তার প্রতিভার স্বাক্ষর। তাকে ভালভাবে প্রশিক্ষণ দিলে সে সমাজের আর দশজন মানুষের মতোই কাজ করতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যতের প্রতিটি পরিকল্পনায় যাতে প্রতিবন্ধিরা থাকতে পারে সে জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধীদের আঁকা ছবি দিয়ে আমি ঈদ কার্ড তৈরি করি এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই কার্ড বিতরণ করি। যারা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তাদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে বই তৈরি করেছি এতে তারা উপকৃত হচ্ছেন। তারা পড়াশোনা করতে পারছেন। যারা প্রতিবন্ধীদের দেখাশোনা করেন তারা যাতে আরও ভালো ট্রেনিংও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ পান সে ব্যবস্থা আমরা করছি। প্রতিবন্ধী সম্পর্কে আরও যাতে সচেতনতা সৃষ্টি হয় সে ব্যবস্থাও আমরা করেছি। আমরা প্রতিবন্ধীদের ভাতা দিচ্ছি, তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা নিচ্ছি, ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করছি। প্রতিবন্ধীরা যাতে অবহেলিত না থাকে সেজন্য তাদের প্রতি সরকার আলাদা দৃষ্টি দিয়েছে। প্রতিবন্ধীদের সাথে ভালো আচরণ করা এবং সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করার জন্য সমাজের বিত্তবানসহ সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে প্রতিবন্ধী শিশুরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দর্শক সারিতে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।