মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুরে নাবালিকা মেয়েকে বিয়ে করতে আসার অপরাধে এক বরের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকারের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ওই জরিমানা আদায় করা হয়। সেই সঙ্গে বিয়ের বয়স না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে না দেওয়ার মুচলেকা দেন মেয়ের পরিবার। এ ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার রাতে নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভা এলাকার পশ্চিম পাটোয়ারীপাড়ায়।
জানা গেছে, উল্লিখিত এলাকার মো. জাহিদুল ইসলামের নাবালিকা মেয়ে মোছা. সোহাগী আক্তার (১৫)। মেয়ের বিয়ের বয়স না হলেও তাঁর বিয়ে ঠিক করে পরিবার। বর পাশের জেলা দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচন্ডী ইউনিয়নের বেলাইচন্ডী কুঠিপাড়া গ্রামের মো. ফেরাজুল হকের ছেলে মো. আলামিন ইসলাম (২৪)। গত বৃহস্পতিবার ছিল ওই বিয়ের দিনক্ষণ। বাবা জাহিদুল মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে সকল আয়োজন সম্পন্ন করেন। বাড়ি প্রধান ফটকে তৈরি করা হয় সুসজ্জিত তোরণ। আলোকসজ্জা করা হয় গোটা বাড়িজুড়ে। সন্ধ্যা থেকে আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়ন শুরু হয়। রাত আনুমানিক সাড়ে ৮ টার দিকে একটি মিনিবাস ও দুইটি মাইক্রোবাস নিয়ে বরপক্ষ বিয়ে করতে আসে কনের বাড়িতে। বর গাড়ি থেকে নেমে কনের বাড়ির উঠোনে স্থাপিত বিয়ের আসরে বসে পড়েন। আর অল্প সময়ের মধ্যে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এমন সময় গোপনে বাল্য বিয়ের আয়োজনের খবর পেয়ে কনের বাড়িতে হাজির হন সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার। তাঁর সাথে ছিলেন সৈয়দপুর থানা পুলিশের কয়েকজন সদস্যও। সহকারি কমিশনার (ভূমি) প্রথমে জানতে চান মেয়ের বয়স কত ? কনে পক্ষ মেয়ের বয়স ১৮ বছর দাবি বলে করেন। পরে তাঁর জন্ম নিবন্ধনে কনে সোহাগীর বয়স কম প্রমাণিত হয়। আর তাই নাবালিকা মেয়েকে বিয়ে করতে আসার অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে বর আলামিন ইসলামের ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না দেওয়ার মুচলেকা দেন মেয়ের বাবা-মা।
সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার রায় জানান, আমাদের দেশে বাল্যবিবাহ একটি বড় অপরাধ। মেয়ের বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত তা বাল্য বিবাহ আইনের মধ্যে পড়ে। তাই বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন – ২০১৭ এর ৭(১) ধারায় বরের ওই জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
খবর৭১/এসঃ