মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর)ঃ জননেতা তরিকুল ইসলাম শুধুই কি একজন রাজনীতি ব্যক্তি ছিলেন ? না, তিনি যেমন ছিলেন রাজনীতি ব্যক্তি তেমনি ছিলেন একজন যোগ্য অভিভাবক। তার স্পর্শ যেখানে লেগেছে সেখানেই যেন শান্তির সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। মহান এই ব্যক্তি তার প্রিয় উপজেলা চৌগাছাতে সময়ে অসময়ে অসংখ্যবার এসেছেন, দলের নেতাদের খোজ খবর নেয়ার পাশাপাশি গোটা উপজেলা বাসির খবর নিয়েছেন, দিয়েছেন সঠিক দিক নির্দেশনা। প্রিয় নেতা সর্বশেষ ২০১৫ সালে উপজেলা ও পৌর বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে যোগ দিয়েছিলেন। ইফতার পূর্ব আলোচনায় সদা হাস্যউজ্জল সবার প্রিয় মুখ জননেতা সেদিন শতশত দলীয় নেতাকর্মীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সামনে বক্তব্য দিয়েছিলেন, বলেছিলেন আমি আবারও আসবো আপনাদের মাঝে, কারন চৌগাছাতো আমারই উপজেলা। সেই মহান নেতা আর কখনও ফিরে আসবে না এই কথা মনে করে অনেকেই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
সূত্র জানায়, যশোর উন্নয়নের রুপকার সাবেকমন্ত্রী বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য জননেতা তরিকুল ইসলাম অকালে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তার চলে যাওয়া যেন কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছে না সীমান্তুবর্তী উপজেলা চৌগাছার মানুষ। দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে প্রিয়জন হিসাবে ছিলেন তরিকুল ইসলাম। তিনি কতটা জনপ্রিয় ছিলেন তার প্রমান মিলেছে তার মৃত্যু খবরে। উপজেলার প্রতিটি গ্রাম এমনকি পাড়া মহল্লার মানুষ তার মৃত্যু খবরে হতবিহবল হয়ে পড়েন। দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সব শ্রেনী পেশার মানুষ যে যেমন ভাবে পেরেছেন ছুটে গেছেন যশোর ঈদগাহ ময়দানে তাদের অভিভাবককে শেষশ্রদ্ধা জানাতে। আর যারা যশোর যেতে পারেনি তারা সারাক্ষনই টেলিভিশনের সামনে বসে কখন কি ঘটছে তা একনজর দেখার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা পার করে দিয়েছেন। তরিকুল ইসলাম এ জনপদের মানুষের কাছে একজন প্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। শুধু মন্ত্রী না তিনি যখন ক্ষমতার বাইরে ছিলেন তখনও ছুটে এসেছেন চৌগাছাতে। দলীয় সূত্র থেকে জানা যায়, প্রিয় এই নেতার সর্বশেষ চৌগাছায় আগমন ঘটে ২০১৫ সালে। ওই সালে চৌগাছা বিএনপি ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন। দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সাথে ইফতার করার লক্ষে তিনি ছুটে আসেন চৌগাছায়। ইফতার পূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনায় তিনি সকলের হৃদয় ছোঁয়া বক্তব্য দেন। সেদিন তিনি সকলের কাছে দোয়া চান আবারও চৌগাছায় আসবেন, সব ধরনের সমস্যা ধীরে ধীরে সমাধান করবেন। তার সেই বক্তব্য আজও কানে বাজে বললেন দলের নেতাকর্মীরা। তিনি যে আর কখনও আসবেন না এই কথাটি ভাবতে কষ্ট লাগছে।
চৌগাছা উপজেলা ও পৌর বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, শহীদ জিয়ার হাতে গড়া চৌগাছাকে তিনি মনের মাধুরী দিয়ে সাজানোর চেষ্টা করেছিলেন। তার শাসনামলে উপজেলা সদরসহ শহরতলীতে হয়েছে অভুতপূর্ণ উন্নয়ন। রাস্তা ঘাট, ব্রীজ কালভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন, ছাত্রবাস, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, পৌরসভাসহ অসংখ্য উন্নয়ন করেছেন যা আজও কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে। তিনি চৌগাছায় এসে সব সময় একটি কথায় বলতেন মানুষকে ভাল বাস, তাদের কষ্ট বোঝার চেষ্টা করো, যখনই সময় পাবে মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করবে আর এই কাজটি যখনই করবে তখন তোমার রাজনীতি করা স্বার্থক হবে। সেই অভিভবাক আজ আমাদের মাঝে নেই। তিনি আর আসবেন না দিবেনা দিক নির্দেশনা।
খবর৭১/ইঃ