এম শিমুল খান, গোপালগঞ্জ : আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচণকে সামনে রেখে গোপালগঞ্জেও বইছে নির্বাচণী হাওয়া। আওয়ামীলীগের ঘাঁটি গোপালগঞ্জের ৩টি আসনেই চলছে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মতৎপরতা ও মাঠ পর্যায়ের নির্বাচনী প্রস্তুতি। আসনগুলি বরাবরই আওয়ামীলীগের দখলে। তারপরও বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। দৌড়ঝাপ, সভা-সমিতি, উঠান-বৈঠকসহ নানাবিধ রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে। পাশাপাশি ডিজিটাল ব্যানার, পোস্টার, লিফলেট, বিলবোর্ড ও ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জানান দিচ্ছেন নিজ নিজ প্রার্থীতার খবর। বিভিন্ন ধর্মীয় ও আচার-অনুষ্ঠানে যোগদানের নামে অনেকেই ঘন ঘন ঢাকা থেকে ছুটে আসছেন স্ব স্ব নির্বাচণী এলাকায়, করছেন গণসংযোগ ও সভা সমাবেশ। ভোটারদের মনে ঠাঁই করে নিতে যারা নতুন মুখ তারাও যাচ্ছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি, চাইছেন দোয়া-আশীর্বাদ। সে সাথে সংগঠিত করছেন স্থানীয় ও দলীয় নেতাকর্মীদের। গ্রামা লের হাট-বাজার ও চায়ের স্টলগুলোও সরব হয়ে উঠেছে নির্বাচণী আলোচনায়।
গোপালগঞ্জের ৫টি উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় তিনটি আসন। স্বাধীনতা উত্তর গোপালগঞ্জের কোন আসনে প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ নির্বাচণ অনুষ্ঠিত হয়নি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান এ গোপালগঞ্জের তিনটি আসনে সব সময়ই বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন আওয়ামীলীগের প্রার্থী। তাছাড়া বিএনপি বা জাতীয় পার্টীর শাসনামলে তারাও এ এলাকায় কোন উন্নয়নে হাত দেয়নি। বরং গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন মূলক কাজ গুলোও তারা বন্ধ করে রেখেছিল। যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে রাজনৈতিক দল হিসেবেও বিএনপি বা জাতীয় পার্টী কখনওই গোপালগঞ্জবাসীর আস্থা অর্জন করতে পারেনি। আর তাই আওয়ামীলীগের বাইরে যিনিই এখানে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন প্রায় সবারই শেষ পর্যন্ত জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। মুজিব-পাগল এ গোপালগঞ্জের মানুষ বারবারই প্রমাণ করে দিয়েছে, ‘নৌকা’ ছাড়া অন্য কিছু তারা চেনেন না বা চিনতেও চায় না। বিগত নির্বাচণ গুলোতে আওয়ামীলীগ প্রার্থী ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ভোটের যে ব্যবধান তাতেই প্রমাণিত হয়েছে, এখানে আওয়ামী লীগের কোন বিকল্প নেই। একারণে বিএনপি বা জাতীয় পার্টীর তৃণমুল নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছে চরম হতাশা। তাছাড়া ওয়ান-ইলেভেনের পরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসায় গোপালগঞ্জের যে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, তা দেখেও বিএনপি’র অনেক নেতাকর্মী যোগ দিয়েছেন আওয়ামীলীগে। এছাড়াও এবারে গোপালগঞ্জে ভোটার সংখ্যা আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় সোয়া লাখ। তাই একথা নি:সন্দেহে বলা যায়, এবার আগের চেয়েও বেশি ব্যবধানে গোপালগঞ্জের তিনটি আসনেই আওয়ামীলীগ প্রার্থী জয়ী হবে।
গোপালগঞ্জ-১ (সংসদীয় আসন নং-২১৫) : মুকসুদপুর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং কাশিয়ানী উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনে এবারে ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ২০ হাজার ৮’শ ৯৭ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৬০ হাজার ৮’শ ১১ এবং মহিলা ১ লাখ ৬০ হাজার ৮৬ জন। এ আসনে রয়েছেন তিনবারের নির্বাচিত এমপি আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক লে. কর্ণেল (অবঃ) মুহাম্মদ ফারুক খান। ’৯৬ এ প্রথম তিনি এ আসন থেকে আওয়ামীলীগের প্রার্থী মনোনীত হন এবং লক্ষাধিক ভোটের বিশাল ব্যবধানে জয়ী হন। এরপর থেকে প্রতিবারেই প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে ভোটের ব্যবধান বাড়িয়ে তিনি জয়ের ধারা ধরে রেখেছেন। তিনি এবারও এ আসনে প্রার্থী হবেন বলে শোনা যায়। আবার এও শোনা যায়, এ আসনে এবার আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা বা ভাগ্নে ব্যারিষ্টার আলী আসিফ খান রাজীব।
এ আসনের ২৩টি ইউনিয়ন ও মুকসুদপুর পৌরসভায় দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেরিয়ে নিজ হাতে লিফলেট বিতরণ করে ইতোমধ্যে প্রার্থীতার কথা জানান দিয়েছেন এ আসনেরই তিনবারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ-সদস্য, জাতির পিতার ঘনিষ্ঠ সহচর ও বাংলাদেশের মূল সংবিধানে স্বাক্ষরদাতা মরহুম এ্যাডভোকেট কাজী আব্দুর রশিদের বড় ছেলে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব কাজী হারুণ অর রশীদ মিরন। তিনি একজন সফটওয়্যার প্রোগ্রামার এনালিস্ট, এক সময় যুক্তরাষ্ট্রে আইটি কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করতেন। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে দল ও গণ-মানুষের সেবা করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে তিনি তার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও নতুন সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচার প্রচারণায় রয়েছেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ-বিষয়ক সম্পাদক কে এম মাসুদুর রহমান। ইতিমধ্যে তিনি দলীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিশ্বরোডে মুকসুদপুর থেকে টুঙ্গীপাড়া পর্যন্ত বিলবোর্ড, ডিজিটাল ব্যানার ও ফেস্টুন টানিয়ে নিজেকে প্রার্থী হিসেবে জানান দিয়েছেন। এছাড়া রয়েছেন আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য মুকুল বোস। সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের মৃত্যুর পরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বয়োজ্যেষ্ঠ্য আওয়ামীলীগ নেতা হিসাবে তিনি ইতোমধ্যে গণ-মানুষের কাছে নিজেকে নির্ভরযোগ্য করে তুলেছেন বলে শোনা যায়। এছাড়াও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট উম্মে রাজিয়া কাজল, যুবলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ আতিয়ার রহমান দিপু, আওয়ামীলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সহ-সম্পাদক খন্দকার মঞ্জুরুল হক লাভলু, বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য্য (প্রশাসন) সাবেক বিএমএ নেতা ডা: শারফুদ্দিন আহম্মেদ ও বিএফইউজে’র সাধারণ সম্পাদক সাবান মাহামুদসহ অনেকে এ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীতা চাইবেন বলে শোনা যাচ্ছে। তবে যিনিই এ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পাবেন তিনিই বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হবেন এটা নিশ্চিত।
গোপালগঞ্জের এ আসনটিতে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রাপ্তির দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা সেলিমুজ্জামান সেলিম। যিনি ২০০৮ এর নির্বাচণে বিএনপি’র কয়েক বাঘা নেতাকে টপকিয়ে এ আসনে থেকে মনোনয়ন পান। এবারেও বিভিন্ন প্রচার ও প্রচারণার মাধ্যমে ইতোমধ্যে তরুণ নেতা হিসেবে তিনি তার প্রার্থীতার বিষয়টি জানান দিয়েছেন। এছাড়াও শোনা যাচ্ছে বিএনপির সাবেক এমপি এফ ই শরফুজ্জামান জাহাঙ্গীরের নাম। ১৫-ফেব্রুয়ারির নির্বাচণে তিনি এ আসনে সাংসদ নির্বাচিত হন। নিরীহ ভদ্রলোক ও দলের দু:সময়ের কান্ডারী হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে প্রচারণার মাঠে রয়েছেন ইসলামী আইনজীবী পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক নবরাজ প্রত্রিকার নিউজ এডিটর এ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান। এর আগেও তিনি এ আসন থেকে নির্বাচণ করেছেন। জাতীয় পার্টি থেকে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন কাশিয়ানী উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা শেখ আব্দুল মান্নান মুন্নু ও দীপা মজুমদারের নাম। দীপা মজুমদার গত নির্বাচণে এ আসনে জাতীয় পার্টীর মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচণ করেছেন। এছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (ইনু) প্রার্থী হিসেবে মুকসুদপুর উপজেলা জাসদ (ইনু) সভাপতি আজম শরীফের নাম শোনা যাচ্ছে।
গোপালগঞ্জ-২ (সংসদীয় আসন নং-২১৬) : গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং কাশিয়ানীর বাকি ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনটিতে এবারে ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ০৯ হাজার ৮’শ ৩৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৫৪ হাজার ৬’শ ৭২ এবং মহিলা ১ লাখ ৫৫ হাজার ১’শ ৬১ জন। এখানে রয়েছেন টানা ৭ বারের নির্বাচিত সংসদ-সদস্য, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য-মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. শেখ ফজলুল করিম সেলিম। ৮০’র উপ-নির্বাচণের মধ্য দিয়ে তিনি এ আসনে প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হন। সেই থেকে তার সর্ম্পক গড়ে ওঠে এলাকার মাটি ও মানুষের সঙ্গে। অদ্যাবধি তিনিই এ আসনের অভিভাবক হয়ে রয়েছেন। তার মধ্যে নেই কোন অহঙ্কার, নেই কোন প্রতিহিংসার রাজনীতি। তার ¯েœহ, মমতা আর ভালবাসা দিয়ে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায়। জাতীয় সংসদ নির্বাচণে সর্বাধিকবার ভোট-ব্যবধানে নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড রয়েছে তার। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রতি তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। একারণে একজন সাদা মনের মানুষ হিসেবেও তার সুখ্যাতি রয়েছে এলাকার সর্বত্র। তার দূরদর্শীতা ও দক্ষতার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে এলাকার মানুষও তার নামে পাগল। গোপালগঞ্জের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মূল কারণই হল সংখ্যালঘুদের প্রতি তার অকৃত্রিম ভালবাসা। স্বাধীনতা উত্তর উন্নয়ন-বি ত গোপালগঞ্জকে ঢেলে সাজাতে তিনি অনবদ্য চেষ্টা করেছেন। তার উন্নয়নমুখী পদক্ষেপে গোপালগঞ্জ শহরসহ গোটা এলাকার জীবনযাত্রার মান আকর্ষণীয় ও উন্নত হয়েছে। এ আসনে তার কোন বিকল্প নেই। তাই এ আসন থেকে এবারেও আওয়ামীলীগ তাকেই মনোনয়ন দেবে বলে সবাই নিশ্চিত।
এ আসনে বিএনপি’র প্রার্থী হিসেবে শোনা যাচ্ছে জেলা বিএনপি’র সভাপতি মো: সিরাজুল ইসলামের নাম। বিগত দু’টি নির্বাচণে তিনি এ আসন থেকে চার-দলীয় জোট মনোনীত প্রার্থী ছিলেন কিন্তু দু’বারই তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। এবারেও এ আসনে তারই বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশী বলে জানা যায়। এছাড়াও জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএইচ খান মঞ্জু, সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি এফ ই শরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মুনসুর আলী এবং জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান পিনু এ আসনে বিএনপি’র প্রার্থীতা চাইবেন বলে শোনা যাচ্ছে। যদিও এলাকার অল্পকিছু সংখ্যক দলীয় নেতাকর্মী, যারা রয়েছেন দ্বিধাবিভক্ত এবং হতাশাগ্রস্থ। এছাড়াও জাতীয় পার্টীর প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষক পার্টির সভাপতি আলহাজ¦ সাইদুর রহমান টেপা এবং জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব শেখ আলমগীর হোসেনও এ আসনে প্রার্থীতা চাইবেন বলে শোনা যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে জাসদ (ইনু) গোপালগঞ্জ জেলার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শেখ মাসুদুর রহমানের নামও।
গোপালগঞ্জ-৩ (সংসদীয় আসন নং-২১৭) : টুঙ্গীপাড়ার ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং কোটালীপাড়ার ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ আসনটিতে এবারে ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ৪৬ হাজার ১’শ ৭৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২৫ হাজার ৬৬ এবং মহিলা ১ লাখ ২১ হাজার ১’শ ৯ জন। এ আসনে রয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। হাজার বছরের বাঙালীর ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম পুরুষ স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে তিনি। দু’জনেরই জন্ম টুঙ্গীপাড়ায়। এখানকার মাটি ও মানুষ তাকে এ পর্যন্ত ৬ বার সাংসদ নির্বাচিত করেছে। এ আসন থেকে তিনি প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হন ৮৬’র নির্বাচণে। এর পর থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচণে এ আসনে তার কোন বিকল্প নেই। প্রতিবারই তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন।
এ আসনে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন জেলা বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস. এম. জিলানী। এখানে আওয়ামীলীগের অন্য কোন প্রার্থী নেই। নেই অন্য কোন দলেরও কোন শক্ত প্রার্থী। তবে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি শিক্ষক এস এম আফজাল হোসেন এবং কোটালীপাড়া উপজেলা জাসদের (ইনু) সভাপতি অরুণ চন্দ্র সাহা দলীয় প্রার্থীতা চাইবেন বলে শোনা যাচ্ছে। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচণকে সামনে রেখে গোপালগঞ্জের এ তিনটি আসনে যারাই প্রার্থীতার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন, তারাও ভালো করে জানেন এখানকার সাধারণ জনগণের মনিকোঠায় রয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। আর সে অনুভূতি থেকেই তারা ভোট-ব্যালটে নৌকা ছাড়া অন্য কোন মার্কা খোঁজেন না।
গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান জানিয়েছেন, বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের ক্ষমতা প্রায় শেষের পথে এবং নির্বাচন আসন্ন। গোপালগঞ্জ জেলার মানুষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে বিশ^াসী। গোপালগঞ্জবাসী যে কোন মূল্যে আগামী নির্বাচণে বিজয়ী হয়ে হ্যাট্্িরক করতে চায়। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও পার্লামেন্টারী বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়ে যাকে মনোনয়ন দেবে, আমরা সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে তাকে বিজয়ী করতে কাজ করব।
জেলা বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ জানিয়েছেন, বিএনপি-চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে দল নির্বাচণে যাবে কিনা আগে দলীয় ফোরামে সেই সিদ্ধান্ত হতে হবে। দলে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন চাইতে পারে, তবে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে আমরা সকলে মিলে এক সঙ্গে কাজ করব।
খবর৭১/ইঃ