আর কখনোই হাতের আঙুল স্বাভাবিক হবে না

0
278

খবর৭১ঃ বাঁ হাতের কনিষ্ঠার চোট বেশ ভোগাচ্ছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে। আর তাই আঙ্গুলের অস্ত্রোপচার নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে দেশে ছেড়েছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।

গতকাল রাত ১২টায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে দেশ ছেড়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত হ্যান্ড সার্জন গ্রেগ হয়কে দেখিয়ে পাঁচদিন পর ফিরে আসবেন। ইনফেকশন শূন্যতে নেমে আসলেই হবে অস্ত্রোপচার। তখন আবারো উড়াল দিতে হবে। যাওয়ার আগে দিয়ে গেছেন বিষাদ মাখা এক খবর। আর কখনোই শতভাগ স্বাভাবিক হবে না সাকিব আল হাসানের চোটগ্রস্ত আঙুলটি।

এ বছর আর মাঠে নামা হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনটা হতে পারে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সফর দিয়ে। তবে জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিপিএলের শুরু থেকেই খেলার ব্যাপারে আশাবাদী ঢাকা ডাইনামাইটস অধিনায়ক।

তিনি বলেন, ‘এখন যেটা আছে, তিন মাসের যে টাইমফ্রেম তাকে এক সপ্তাহর বেশি হয়ে গেল। এখন পর্যন্ত তো আমি আশাবাদী যে প্রথম থেকেই খেলতে পারবো। এখন অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছি, ওরা যদি বেটার কোন ট্রিটমেন্ট দিতে পারে তাহলে আরো তাড়াতাড়ি হয়তো সেরে উঠার সম্ভাবনা থাকবে। এখন মূল যেটা হয়েছে, ইনফেকশনটা তো দূর করতে হবে। ওটা চলে গেলেই আসলে বুঝা যাবে কত সময় লাগবে। আর মেইন সার্জারি যেটা করার কথা ওটা হলে ছয় থেকে আট সপ্তাহ। নরমালি ছয় সপ্তাহ লাগে। দুই সপ্তাহ বেশি ধরা হয়। যদি ছয় সপ্তাহ হয় তাহলে বিপিএলের বেশ আগেই ফিট হয়ে যাবো ইনশাল্লাহ’।

সাকিব বলেন, ‘যদি শুধু সার্জারিটা করা লাগতো তাহলে আমার আসলে খুব একটা খারাপ লগতো না। যেহেতু এটা অনেক আগের ইনজুরি, আমি জানি যে আমার সার্জারি করা লাগবে। মানসিকভাবে আমি প্রস্তুত ছিলাম। আসলে ইনফেকশান আমার সবথেকে বড় টেনশনের জায়গাটা। কারণ, ওটা যতক্ষণ পর্যন্ত না জিরো পার্সেন্টে আসবে, কোন সার্জন হাত দিবে না। কারণ, ওটা হাত দিলে পরে বোনে চলে যাবে আর হাড়ে চলে গেলে পুরো হাত নষ্ট। এখন আমার মেইন পয়েন্ট হচ্ছে কিভাবে ইনফেকশনটা সারানো যায়। অস্ট্রেলিয়ায় আমি ইনফেকশনের ট্রিটমেন্টের জন্যই যাচ্ছি, আর কোন ট্রিটমেন্টের জন্য যাচ্ছি না’।

ইনজুরি ক্রিকেটারদের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে এরচেয়ে বিশাদমাখা সময় আর কখনো যায়নি। এই ইনজুরিই তাকে ভাবাচ্ছে সবচেয়ে বেশি। এমনটাই মত সাকিবের।

তিনি বলেন, ‘ইনজুরির দিক থেকে এটাই তো আসলে সব থেকে বড়। এর আগে যে সার্জারিটা হয়েছিল ওটা খুব বেশি দিনের না যদিও ওটা প্রথমেই যদি সঠিক ট্রিটমেন্ট হত তাহলে অনেক কম সময়ে হয়ে যেতো। তবে ওটা আসলে অত বেশি চিন্তার ছিল না। তবে এটা আমার কাছে মনে হয় অত বেশি। একটা জিনিস যে, হাতটা পুরোপুরি তো আর ওইভাবে ঠিক হবে না কিন্তু, ক্রিকেট খেলার মতো ঠিক করতে হবে আঙুলটা’।

বিষয়টা আরেকটু পরিষ্কার করে সাকিব বলেন, ‘ওই আঙুলটা আর কখনো শতভাগ ঠিক হবে না। কারণ, এটা হচ্ছে হাড্ডিটা যেটা নরম হাড্ডি। এটা আর কখনো জোড়া লাগার সম্ভাবনা নাই। অতএব পুরোপুরি ঠিক হবে না কিন্তু সার্জারিটা হবে এমন যে, ওরা এমন একটা সিচুয়েশনে এনে দিবে যেখান থেকে আমি ব্যাট-ট্যাড ভালোভাবে ধরতে পারবো, ক্রিকেট খেলাটা চালাতে পারবো’।

সাকিবের এশিয়া কাপ খেলা নিয়ে নাটক কম হয়নি। যদিও এশিয়া কাপ না খেলে ওই সময়টাতে হাতের অপারেশনটা করিয়ে ফেলতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বোর্ডের চাওয়ায় শেষ পর্যন্ত এশিয়া কাপ খেলতে মত দেন সাকিব। কিন্তু, কেন এমন ‘আত্মঘাতী’ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দেশসেরা এ ক্রিকেটার?

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানে সবকিছুর কম্বিনেশন ছিল। যেহেতু আমাদের কাছে এশিয়া কাপটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে দ্বিমত পোষণ করার তো কোন কারণ নেই। সেটা একটা কারণ ছিল খেলার জন্য। তারপরে ফিজিওর সাথে যখন আলাপ করি, কেউই আসলে চিন্তা করে নাই যে ইনফেকশনটা হয়ে যাবে। ব্যথা নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে যেভাবে খেলতে পেরেছিলাম, আমি বলেছিলাম যে অতটুকু যদি থাকে তাহলে সহ্য করতে পারবো। অতএব ও বলেছে যে, এর থেকে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু, যেকোনো কারণেই হোক ওখানে ইনফেকশনটা হয়ে গেল। (এশিয়া কাপ) পুরাটা শেষ করতে পারলাম না। করতে পরলে ভালো লাগতে। কিন্তু, যেটা হয়েছে আসলে কিছু করার নাই’।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here