মান ভালো হওয়ায় নড়াইলের কামারদের সনাতন পদ্ধতিতে তৈরি করা কোরবানি ঈদের লোহার বিভিন্ন পণ্যের ব্যাপক চাহিদা!

0
689

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: মান ভালো হওয়ায় নড়াইলের কামারদের তৈরি লোহার বিভিন্ন পণ্যের বেশ কদর রয়েছে। বহু আগে থেকেই সনাতন পদ্ধতিতে তারা তৈরি করে আসছেন দা, বঁটি, কোদাল, ছুরি, খোনতা, কুড়ালসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। সারা বছর কম-বেশি এসব সরঞ্জাম তৈরি করা হলেও কোরবানি ঈদের সময় জেলার কামারদের বিশেষ ব্যস্ততা বাড়ে। এ বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এরই মধ্যে জেলার কামারশালাগুলোয় ভিড় করছেন ক্রেতারা। বায়না আসছে অন্য জেলা থেকেও। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন হাট ও বাজারে তিন শতাধিক কামারশালা রয়েছে। আর এ পেশার সঙ্গে জড়িত আছে দেড় হাজারের বেশি মানুষ। কথা হলো সদরের শিংগা বাজারের কামার সুধীর বিশ্বাস জানান, সারা বছরে টুকটাক কাজ থাকলেও কোরবানির সময় ব্যস্ততা বাড়ে কয়েক গুণ। এ সময় ক্রেতাদের পছন্দ মতো চাপাতি, গরু জবাইয়ের বড় ছুরি, চামড়া ছোলার ছোট ছুরি, দা, বঁটি ও কুড়াল তৈরি করতে হয়। কেউ কেউ আগের সরঞ্জাম নতুন করে শান করিয়ে নিচ্ছেন। বাড়তি চাপ সামলাতে অতিরিক্ত লোকও নিয়োগ করতে হচ্ছে। জেলার অন্য হাটগুলোর কামারশালারও একই অবস্থা। ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে রূপগঞ্জ, তুলারামপুর, মাইজপাড়া ও শিংগা হাটে। এ সময় বেশ কয়েকজন কামারের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, জেলার বাইরেও এখানকার তৈরি লোহার পণ্যের চাহিদা রয়েছে। পার্শ্ববর্তী জেলা মাগুরা, যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ, গোপালগঞ্জ এমনকি রাজধানী ঢাকা থেকেও ব্যবসায়ীরা আসছেন। কামাররা আরো আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, বছরের অন্য সময়ে একজন কারিগর দিনে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং একজন সহযোগী ২০০ থেকে ২৫০ টাকা রোজগার করেন। কিন্তু এখন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। ফলে আয়ও বেড়েছে। বর্তমানে একজন কারিগর দিনে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা ও একজন সহযোগী ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় করছেন। রূপগঞ্জ বাজারে কামারদের তৈরি সরঞ্জাম বিক্রি করেন স্থানীয় ব্যবসায়ী রফিকুল। তিনি জানান, অনেকে এখনো কোরবানির গরু না কিনলেও আগেভাগে জবাই ও মাংস কাটার সরঞ্জাম কিনছেন। তবে সংকটের কথা হলো এ পেশার সঙ্গে নতুন করে কেউ যুক্ত হতে চাচ্ছেন না। আধুনিক প্রযুক্তি না থাকায় শ্রমসাধ্য পেশাটিতে আগ্রহ কমে আসছে। এ বিষয়ে কথা হয় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন নড়াইলের শিল্প সহায়ক কেন্দ্রের উপব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, নড়াইলের কারিগরদের তৈরি লোহার পণ্যের মান খুবই ভালো। জেলা ও জেলার বাইরে এসব পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কারিগররা উৎসাহিত হয়ে নতুন করে কোনো প্রতিষ্ঠান করতে চাইলে তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে। তাছাড়া কামারশালার আধুনিকায়ন ও কামারদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দেয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে।
খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here