খবর ৭১ঃঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এবং জাতিসংঘের ঢাকা অফিসের বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। এ বিবৃতি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিবৃতি অযাচিত, অনাকাঙ্ক্ষিত।’
মঙ্গলবার সচিবালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
হাসানুল হক ইনু বলেন, মার্কিন দূতাবাস ও জাতিসংঘের ঢাকা অফিস থেকে আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের ওপর হামলা, নির্যাতন ও বলপ্রয়োগের যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সঠিক নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের এ স্টেটমেন্ট প্রত্যাহারের অনুরোধ করছি।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনের অনিয়মগুলো ধরার জন্য বিভিন্ন রকমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায় এবং প্রশাসন তাদের পাহারা দিয়ে রাখে। আমরা জানতে পারি, নয়টি দাবিকে তারা সামনে নিয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও দাবি বিশ্লেষণ করে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
মন্ত্রী বলেন, এই রকম পরিস্থিতিতে আমরা খেয়াল করেছি, বাইরের থেকে উস্কানি এবং কোমলমতি শিশুদের নিরাপদ সড়কের ন্যায্য আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে তা চক্রান্তের দিকে নিয়ে যাওয়ার একটা অপচেষ্টা হয়েছে। এক্ষেত্রে ন্যক্কারজনক গুজব রটানো, মিথ্যাচার করা হয়েছে। এক পর্যায়ে কতিপয় চিহ্নিত মহল আওয়ামী লীগের ধানমণ্ডির কার্যালয়ে আক্রমণ করতে উদ্যত হয়। বাইরের উস্কানিদাতাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সেই সংঘর্ষের মধ্যেও আমরা শিশুদের রক্ষা করার চেষ্টা করি।
তথ্যমন্ত্রী দাবি করেন, শিশুদের উপর কোনো দমন-পীড়ন হয়নি। তাদের উপর কোনো আক্রমণ হয়নি। ঢাকা শহরের দুই-তিন জায়গায় বিক্ষিপ্ত-বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ হয়েছে এবং সেগুলোকে পুলিশ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছে। আমরা তাই মনে করি, এই রকম একটা পরিস্থিতিতে মার্কিন দূতাবাস যে বক্তব্য দিয়েছে, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। শিশুদের আন্দোলনকে বর্বরোচিত হামলার মধ্য দিয়ে দমন করার কোনো ঘটনাই ঘটেনি। গণমাধ্যমে এমন কোনো রিপোর্ট নেই।
মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতি নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই বিবৃতির মধ্য দিয়ে মার্কিন দূতাবাস বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে শিষ্টাচার বহির্ভূত নাক গলানোর অপপ্রয়াস করেছে। আমরা এটার নিন্দা করি এবং এই বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করছি এবং প্রত্যাহার করারও অনুরোধ করছি।
জাতিসংঘের বিবৃতি নিয়ে মন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের বাংলাদেশ প্রধানের বিবৃতি ও মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতি নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সম্পর্কে সঠিক বিবৃতি নয়। আমি সরকারের পক্ষ থেকে তথ্যমন্ত্রী হিসেবে এই বিবৃতিকে অনভিপ্রেত মনে করি, অযাচিত মনে করি। আশা করি তারা এই ধরনের বিবৃতি দেবেন না এবং বাংলাদেশের প্রকৃত ঘটনার ভিন্ন চিত্রায়ন করবেন না। সরকারের অবস্থানের বিষয়ে লিখিতভাবে তাদের দফতরে পাঠানো হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্য আমাদের সব প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। আন্দোলনের মধ্যে উস্কানিদাতাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। যারা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাঁধে বন্দুক রেখে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছিল তাদের আমরা চিহ্নিত করছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব রটনাকারীদের ও মিথ্যাচারকারীদের আমরা চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।
গত ২৯ জুলাই বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের পর থেকে নিরাপদ সড়কের দাবি সামনে নিয়ে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।
খবর ৭১/ইঃ