খবর৭১:ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ে ব্যাপক আলোচনা, নানামুখী সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপের মাঝেও ঢাকায় এডিস মশার বিস্তার কমছে না, উল্টো বাড়ছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৯৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬৭টিই এডিস মশার বিস্তারে অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ বলে শনাক্ত হয়েছে। খোদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার এক জরিপে উঠে এসেছে এমন চিত্র।
অন্যদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে, মৌসুমের শুরুতেই এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে, আর আক্রান্তের সংখ্যা গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯০০ জনের বেশি সরকারি হিসাব অনুসারেই। বেসরকারি হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা আরো বেশি বলে জানান বিশেষজ্ঞরা; যা নিয়ে উদ্বেগের মুখে গতকাল বুধবার সভায় বসেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশনসহ আরো কয়েকটি সংস্থার নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের লোকজন।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ডেঙ্গুতে আতঙ্কিত না হয়ে বরং সতর্ক ও সচেতন থাকার ওপর বেশি জোর দিতে হবে। এই মৌসুমে জ্বর হলেই ডেঙ্গুর বিষয়টি মাথায় রাখা দরকার। লক্ষণ দেখে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে বা চিকিৎসাকেন্দ্রে যেতে হবে। সেই সঙ্গে এডিস মশার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে কোনো বাসাবাড়িতে এই মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ না থাকে। তিনি চিকিৎসকদের উদ্দেশ করে বলেন, জ্বর নিয়ে কেউ এলে তাদের যেন ডেঙ্গুর পরীক্ষা করে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
ডা. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘জরিপে আমরা ঢাকা উত্তরের ২৫ ও দক্ষিণের ৪২টি ওয়ার্ডে এডিস মশার প্রজনন ও বিস্তারের নমুনা ও লক্ষণ পেয়েছি। দুই অংশেই অনেক আবাসিক এলাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক এলাকা, বিভিন্ন ধরনের সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের এলাকাও ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রয়েছে। এ ক্ষেত্রে নির্মাণাধীন বাড়ির ছাদ, পরিত্যক্ত পরিবহন, টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, বালতি, ফুলের টব, স্যাঁতসেঁতে মেঝেতে এডিস মশার বংশবিস্তার বেশি দেখা যায়।
এমন পরিস্থিতি সামনে রেখেই গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ এবারে দেশে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের বাহকের ওপর জরিপকাজের ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনায় বসেন। সভায় ওই অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সাবরিনা ফ্লোরা, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. জাকির হাসানসহ অন্য বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সামনে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার উপকর্মসূচি ব্যবস্থাপক ডা. এম এম আক্তারুজ্জামান ও কীটতত্ত্ববিদ মো. খলিলুর রহমান।
খবর৭১/জি: