খবর ৭১ঃদীর্ঘদিন ধরে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বারইপাড়া-কাঞ্চনপুর সড়কটি সংস্কারের অভাবে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, নারী ও শিশু পথচারীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
এ দুর্ভোগ লাঘবে কর্তৃপক্ষের ভরসায় আর না থেকে নড়াইল-১ আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তির বাবার নামের রাস্তাটি শিশুরা নিজেরাই স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা মেরামতের কাজে লেগে গেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
রাস্তাসংলগ্ন কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মেরামতে ব্যতিক্রমধর্মী এ উদ্যোগে ভুক্তভোগীরা হতবাক। পাশাপাশি এ সড়কে চলাচল করতে পেরে আশান্বিত হয়েছেন তারা।
জানা গেছে, উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের বারইপাড়া-কাঞ্চনপুর সড়কটি ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের এমপি মুক্তির বাবা ও সাবেক এমপি শহীদ এখলাছ উদ্দিনের নামে নামকরণ করা হয়। ওই বছরই সড়কটি পিচ ঢালাইয়ের মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে সংস্কার করা হয়।
কিন্তু মাত্র দুই বছরের মধ্যে রাস্তাটির অনেক জায়গায় কার্পেটিং ওঠে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে ফেরিঘাট-সংলগ্ন সড়কের অংশ থেকে কাঞ্চনপুর স্লুইসগেট অভিমুখে প্রায় ৫০০ ফুট সড়ক চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বর্তমান বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়েছে।
ওই সড়কটি স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করছে দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া কোমলমতি শিশুরা। কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী আনন্দের সঙ্গে সড়কের পথচারীদের কষ্ট লাঘবের জন্য নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে চাঁদা তুলে ক্ষুদ্র পরিসরে একঝাঁক শিশু সড়কটি মেরামত করছে। সড়কের মাঝে একটি বেঞ্চ বসিয়ে মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, ভ্যানগাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীদের কাছ থেকে ৫-১০ টাকা করে চাঁদা তুলে ইট কিনে সড়ক মেরামত শুরু করেছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শিশু শিক্ষার্থীরা পুরোদমে কাজ করছে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেউ হাতুড়ি দিয়ে সড়কে কংক্রিট ভাঙছে। কেউবা গর্ত ভরাট করছে। সবাই আনন্দ-উচ্ছ্বাসে সড়কে কাজ করছে।
কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তুহিন গাজী, শান্ত, ইমন ও রাতুলসহ একদল শিক্ষার্থী জানায়, রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় দুই দিনে পথচারীদের কাছ থেকে তারা দুই হাজার টাকা চাঁদা তুলে ইট কিনে নিজেরাই হাতুড়ি দিয়ে রাস্তা মেরামত করছে। বালু কেনার জন্য লোক পাঠিয়েছে। এজন্য আরও টাকার প্রয়োজন বলে তারা জানায়।
বারইপাড়া-কাঞ্চনপুর সড়কের মাঝে প্রায় ৫০০ ফুট রাস্তা সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। এটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক পথচারী উপজেলা শহরে চলাচল করে থাকেন। রাস্তাটি সংস্কারে কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ না নেয়ায় অবশেষে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সংস্কার করছে শিশুরা।
এ রাস্তা সংস্কার করায় এলাকার হাজার হাজার পথচারী আপাতত চলাচল করতে পারবে বলে স্থানীয়দের অভিমত।
এ বিষয়ে মতামত জানতে বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন পিকুলের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
খবর ৭১/এসঃ