ফেসবুক প্ল্যাটফর্ম আমাদের অঞ্চলের মানুষের মনস্তত্ত্বের ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করেছে, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যার ফলে সামাজিকভাবে এর কুপ্রভাব সর্বত্র বিরাজমান। ফেসবুক আমাদের দেশের মানুষের মনস্তাত্ত্বিক চিন্তাধারার ওপর যে পরিমাণ নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে ক্ষতিসাধন করেছে, সে ক্ষতি অপূরণীয় ও অবর্ণনীয়। মানুষের সুচিন্তা করার ক্ষমতাকে একদম শূন্যস্তরে নামিয়ে এনেছে ফেসবুক। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক এখন হয়ে উঠেছে অসামাজিকতার মূল কেন্দ্র। এখন বাকি যে ক্ষতিটুকু করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে, সেটা হচ্ছে মনিটাইজিশন নামক লোভের ফাঁদ তৈরি করে মানুষকে অকর্মণ্য ও আনপ্রোডাকটিভ করার চেষ্টা। ফেসবুক হয়তো ক্রিয়েটিভ মানুষ সৃষ্টির জন্য এ লোভের ফাঁদ তৈরি করেছে, যাতে সৃষ্টিশীল মানুষরা তাদের ভেতরকার প্রতিভাকে সবার সম্মুখে তুলে ধরতে পারে এবং সেই প্রতিভার প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে ভিউয়ের ওপর ফেসবুক ডলার প্রদানের ব্যবস্থাও করেছে। কিন্তু বিষয় হচ্ছে, যারা সত্যিকারের সৃষ্টিশীল মানুষ তারা কখনোই অর্থের আশার সৃষ্টি করে না, করতে চায় না। তাদের শুধু সমাজের অগ্রগতি ও নিজের আত্ম-আনন্দের জন্যই সৃষ্টি করে। সম্প্রতি শাহ আবদুল করিমকে নিয়ে একটি প্রতিবেদনে দেখলাম, তাকে এক অনুষ্ঠানে ৩ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হলে তিনি তার বিপরীতে ছেলেকে বলছেন, এত টাকা দিয়ে আমি কী করব? আমাদের বাঁচার জন্য তো এত টাকা লাগে না। শাহ আবদুল করিমরা বাংলার সত্যিকারের সৃষ্টিশীল মানুষ। প্রতিভাবান ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ। তিনি তার প্রয়োজনের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে অবগত। তাই তিনি সে চেক নিতে অসম্মতি জানিয়েছেন। যারা সত্যিকারের সৃষ্টি করে, তারা কখনোই লোভের ফাঁদে পা বাড়ায় না; লোভ তাদের কখনোই বাঁধতে পারে না।
ফেসবুক ডলার ইনকামের লোভের ফাঁদ পেতে যুবক থেকে বৃদ্ধ সবাইকে সেই ফাঁদে টাকি মাছের মতো আটক করে নাচিয়ে বেড়াচ্ছে। ফেসবুক চাইছে, সবাইকে এর পাতায় নিবিষ্ট করে রাখতে। অঞ্চলভিত্তিক মানুষের মনস্তত্ত্বের ওপর ফেসবুক কর্তৃপক্ষের ব্যাপক বিচরণ রয়েছে। তারা জানে আমাদের অঞ্চলের মানুষকে কীভাবে বন্দি করা যায় ফেসবুকের খপ্পর-খাঁচায়। সে প্রভাবেই এখন সর্বত্রই কনটেন্ট ক্রিয়েটর। সবাই এখন ভিডিও নির্মাতা। যে যা পারছে তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছে ফেসবুকের পাতায়। লক্ষ্য একটাই, ফেসবুক মনিটাইজিশন ও ডলার ইনকাম। ফেসবুক মনিটাইজিশনের পেছনে ছুটতে ছুটতে মানুষ তার ভেতরকার সত্যিকারের প্রতিভা হারিয়ে ফেলছে। ফেসবুক স্ক্রিন মানুষের সবকিছুকে গ্রাস করছে, এমনকি তার ভেতরে থাকা সু ও সৎচিন্তা করার ক্ষমতাকেও। ফলে আবাল, যুবক, বৃদ্ধ সবাই তাদের সেই নির্দিষ্ট কাজ ফেলে ছুটে চলছে ফেসবুকের অদৃশ্য ডলারের খোঁজে।
একটা সময় ছিল যখন যা ইচ্ছে ভিডিও নির্মাণ করে অনেকে ফেসবুক থেকে যথেষ্ট অর্থ আয় করেছে; কিন্তু ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এখন বেশ সচেতন হয়েছে। যা ইচ্ছে তাই ফেসবুকে ছেড়ে অর্থ আয়ের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। অনেক ভিউ হওয়ার পরও ফেসবুক এখন খুব অল্প পরিমাণ অর্থ প্রদান করছে। কারণ, ফেসবুক দেখছে সবাই এখন এর ভিডিও ব্যবসায়ী হতে চাচ্ছে। সেই চালাকি তারা ধরে ফেলেছে। সেজন্য ফেসবুক তাদের অর্থও সীমিত করেছে এবং আরোপ করেছে আরও অনেক বিধিনিষেধ। তারা চায় ব্যক্তি তার নিজস্ব প্রতিভা ফুটিয়ে তুলুক। অন্যের সৃষ্ট কোনো প্রতিভা চুরি করে নিজের নামে চালানোর সুযোগ এখন আর নেই।
আমি এমনও দেখেছি, মানুষ ফেসবুক মনিটাইজিশনের জন্য ছাগল পর্যন্ত সাজছে। মানুষ নিজেদের স্বতন্ত্রতা হারিয়ে হাস্যকর ভাঁড়ে পরিণত হচ্ছে। ফেসবুক ইন্টেলিজেন্স জানে কীভাবে কোন জাতিকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। ফেসবুকের মনিটাইজিশনের লোভের ফাঁদে পড়ে সেদিন এক স্কুলশিক্ষককে দেখলাম ছাগলের যুদ্ধ লাইভ করছে এবং সে যুদ্ধের ধারাভাষ্য দিচ্ছে। ফেসবুক হয়তো সৃষ্টিশীল মানুষ তৈরি করা বা সৃষ্টিশীল মানুষ বিনির্মাণের জন্য এ চেষ্টা করছে কিন্তু কথা হচ্ছে, সৃষ্টিশীলতার বিপরীতে তৈরি হচ্ছে এক অথর্ব গোষ্ঠী; যারা যা ইচ্ছে তাই নিয়ে উপস্থিত হচ্ছে এর পাতায়। সেদিন একজনকে দেখলাম লাইভে এসে বারবার বলছে, প্লিজ আপনারা আমার ভিডিওটি ট্যাপ করে শেয়ার দিন প্লিজ। সে কী কান্নাজড়িত আকুতি অনুনয়। ফেসবুক হয়তো চায় প্রতিভাবানদের মূল্যায়ন করতে, কদর করতে, তাদের সবার সামনে তুলে ধরতে কিন্তু উল্টো প্রতিভাবানরা অপ্রতিভাবানদের ভিডিওর নিচে পিষ্ট হয়ে হারিয়ে যাচ্ছে। তাই ফেসবুক কর্তৃপক্ষের অবশ্যই এসব বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে নজর দিতে হবে। সেইসঙ্গে আমাদের দেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীদেরও যা ইচ্ছে তাই ছেড়ে দিয়ে এই মাধ্যমকে আবর্জনাপূর্ণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ, ফেসবুক কখনোই নিজস্ব প্রতিভা ছাড়া বা বিশেষ আইডিয়া মেকার ছাড়া কাউকেই সহযোগিতা করবে না এবং ডলার ইনকামের বিশেষ সুযোগও নেই।
কাজী বনফুল, প্রাবন্ধিক ও সাংস্কৃতিককর্মী
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে পদোন্নতিতে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকটির ১০ম গ্রেডের পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য পদোন্নতির দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। দাবি আদায়ে বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও মানববন্ধন করেও সাড়া না পেয়ে তারা শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন। সূত্র জানায়, পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ছুটির দিনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন, যাতে গ্রাহকসেবা ব্যাহত না হয়। তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তিন মাস পার হলেও প্রতিশ্রুত আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় তারা পুনরায় ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে সারা দেশের শাখা থেকে ১২০০–এর বেশি কর্মকর্তা অংশ নেন। পরদিন (১ ডিসেম্বর) বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী পদোন্নতির বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মস্থলে ফিরে যান। পরে কর্মকর্তাদের জানানো হয়, সুপারনিউমারারি পদ্ধতিতে মার্চের মধ্যে পদোন্নতির বিষয়টি সমাধান করা হবে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকে ইতোমধ্যে মোট ৭,৩১৬ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করেছে। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এই উদাসীনতা তাদের প্রতি কর্মীবান্ধবহীন মনোভাব ও কর্তৃপক্ষের অনীহারই প্রকাশ। তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এলেও কৃষি ব্যাংকে আগের প্রশাসনিক কাঠামো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক ও মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন একাধিক বৈঠকে আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়ে বরং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের হয়রানি ও নিপীড়ন করা হয়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে এ বছরের চলতি মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন (রিট মামলা নং: ১৬৪২৮/২০২৫, মো. পনির হোসেন গং বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের পদোন্নতিতে দেখা দেওয়া অনিয়ম ও অসঙ্গতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, রুল নিষ্পত্তির আগে কোনো পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করা হলে তা অবৈধ ও আদালত–অবমাননার শামিল হবে। রিটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ১০৭৩ জন কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে মূখ্য কর্মকর্তা) এবং ৫১ জন মূখ্য কর্মকর্তা (ঊর্ধ্বতন মূখ্য কর্মকর্তা পদে) অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। এদিকে জানা গেছে, পূর্বে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক জাহিদ হোসেন এখনো পদোন্নতি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পদোন্নতি–বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে যদি পুনরায় অনিয়মের পথে যাওয়া হয়, তাহলে তা আদালতের অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। তারা আশা করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ন্যায়বিচার ও সমাধান মিলবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বৈষম্য বিরোধী অফিসার্স ফোরাম’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. পনির হোসেন ও সদস্য সচিব এরশাদ হোসেনকে শৃঙ্খলাজনিত মোকদ্দমা এবং মুখ্য সংগঠক মো. আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মুখপাত্র তানভীর আহমদকে দুর্গম অঞ্চলে বদলি করা হয় এবং সারাদেশের দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মো. আরিফ হোসেনকে বরখাস্ত করার নথিতে তাকে ‘ব্যাংক ও রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে, অথচ ব্যাখ্যা তলবপত্রে বলা হয় তিনি ‘রাজনৈতিক কাজে তহবিল সংগ্রহ করেছেন।’ ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তার ব্যাখ্যাতলবের জবাব প্রদানের পরও বরখাস্ত চিঠি আগেই তৈরি করা হয়েছিল, যা অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রশ্ন তোলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সংবিধান বা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব না পালন করেন, হাইকোর্ট তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ বা অপব্যবহার রোধের জন্য আদেশ দিতে পারে। অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এ সিদ্ধান্তের পেছনে ব্যাংকের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পদোন্নতি ও ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চলবে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চাইবেন। এ ব্যাপারে মো. আরিফ হোসেন ও পনির হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে একটি ভুয়া কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় জোরপূর্বক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ব্যাংকের ভিজিল্যান্স স্কোয়াডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ হোসেন। গত ২০ অক্টোবর প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) নামে তারা এটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও উদ্বোধক হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তারা প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে ভুয়া নেতাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হয়ে অনুষ্ঠানটি বয়কট করেন। অভিযোগ রয়েছে, তাসলিমা আক্তার লিনা হেড অফিসের বিভিন্ন দপ্তরের নারী কর্মকর্তা এবং তার স্বামী মিরাজ হোসেন পুরুষ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ওই সভায় অংশগ্রহণে বাধ্য করেন। অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে বদলি বা পদোন্নতি রোধের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। হেড অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, লিনা তার স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে নারী সহকর্মীদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। কেউ আপত্তি জানালে মিরাজের সহযোগীরা এসে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ করে থাকে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, লিনা ‘উইমেনস ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন গড়ে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডে অনেক নারী কর্মকর্তা বিব্রতবোধ করলেও চাকরির স্বার্থে নীরব থাকছেন। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় তাসলিমা আক্তার লিনা ও তার স্বামী মিরাজ ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রভাব বিস্তার করছেন। এ ঘটনায় নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে তাসলিমা আক্তার লিনা ও মিরাজ হোসেনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে তাসলিমা আক্তার লিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছি, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। অন্যদিকে, মিরাজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংঘটিত এজাহারভুক্ত হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও মিরাজ হোসেন পলাতক রয়েছেন। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খুনের শিকার কৃষি ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী আব্দুল হালিম ছিলেন কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ১ নম্বর আসামি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এবং ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেনের নাম রয়েছে। তারা বর্তমানে নিজেদের সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন। ব্যাংক সূত্রে গেছে, তারা চাঁদাবাজি, ঘুষ আদায় ও নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সূত্র জানায়, ব্যাংকের ভেতরে একটি সিন্ডিকেটের প্রভাবেই এসব আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন। এতে আরও যুক্ত রয়েছেন ডিজিএম সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, হাবিব উন নবী, ডিএমডি খালেকুজ্জামান জুয়েল ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর রাতে মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক সজীব কুমার সিং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ১টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান। হালিমের ছেলে ফয়সাল বলেন, তার বাবা ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ব্যাংক সিবিএর সভাপতি ছিলেন এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। ইউনিয়নের নেতৃত্ব ও পদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গত নভেম্বরেই মতিঝিল থানায় একটি জিডি (নং ০৫/১১/২০২৪ - ৩৩৫) করেছিলেন তার বাবা। তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতে আমার বাবাকে তার অফিসের সহকর্মীরা মারধর করে হত্যা করেছে। সিবিএর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জানান, ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচিত হই। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট বিনা নির্বাচনে নতুন কমিটি ঘোষণা করে আমাদের অফিস দখল করে নেয় ফয়েজ ও মিরাজ। এ নিয়ে মামলা চলছে। মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন—যাদের মধ্যে আছেন ড্রাইভার সাইফুল, শাহেদ, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মেহেদী ও অবসরপ্রাপ্ত ক্লিনার সিরাজ। এদিকে, মামলার ২ নম্বর আসামি মিরাজ হোসেন নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নৈমিত্তিক ছুটি পাওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক এ বিষয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় মুখ্য কার্যালয়ের প্রধান মহাব্যবস্থাপক জানান, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। কারণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অভ্যন্তরীণ এই পরিস্থিতিতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজিতে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একদল ভুয়া সিবিএ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, তারা বিশেষ সাধারণ সভা আয়োজনের নামে সারা দেশের শাখাগুলো থেকে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ), রেজি. নং বি-৯৮৫-এর নাম ব্যবহার করে আগামী ২০ অক্টোবর ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের ঘোষণা দেয় একদল ভুয়া নেতা। এ উপলক্ষে তারা ব্যাংকের প্রায় ১ হাজার ২৫০টি ইউনিট থেকে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উঠে। গোপন সূত্র জানায়, তাদের নিয়ন্ত্রিত লোকজন শাখা পর্যায়ে বদলি ও পদোন্নতির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপ-মহাব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তারা এসব কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ সিন্ডিকেটের ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেনের প্রত্যক্ষ মদদ ও আস্কারায় চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্রে দেখা গেছে, ভুয়া সভাপতি দাবিকারী কৃষি ব্যাংকের সাবেক পিয়ন ফয়েজ আহমেদ ও ভুয়া সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক জানান, তারা বিভিন্ন শাখা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবগত আছেন বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হওয়ায় তারা কার্যত কিছু করতে পারছেন না। অনুসন্ধানে জানা যায়, এর আগেও একই সিন্ডিকেট শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিল। সেই টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদাবাজ ও তাদের মদদদাতাদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভুয়া সিবিএ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা দাবি করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এসব কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পড়তে পারে।
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে নানা ধরনের অসুখের ঝুঁকি তৈরি হয়। তবে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন ও খাবার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রক্তে কোলেস্টেলরের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। নিম্নে এ মাত্রা ঠিক রাখার কিছু উপায় বলা হলো— দ্রবণীয় আঁশযুক্ত খাবারে আঁশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি পেটের ভেতর জেলের মতো এক ধরনের বস্তু তৈরি করে, যা রক্তে মেশার আগেই কোলেস্টেরলকে এর ফাঁদে আটকে ফেলে। ওট, ডাল, চিয়া ও তিসি বীজের মতো অনেক খাবারই আঁশযুক্ত ও পানিতে দ্রবণীয়। এসব দ্রবণীয় আঁশ খাবারের অতিরিক্ত কোলেস্টেরলকে হজম প্রক্রিয়ায় ঢুকতে বাধা দেয় এবং বর্জ্য হিসেবে শরীরের বাইরে বের করে দেয়। খাবারের প্লেটে পুষ্টিপূর্ণ উদ্ভিজ্জ খাদ্য বেশি রাখতে হবে। ফলমূল, শাকসবজি, বাদাম ও বীজজাতীয় খাবার। এসব খাবারে স্টেরল ও স্ট্যানলের মতো উদ্ভিজ্জ চর্বি যোগ করে। এ স্টেরল ও স্ট্যানল রক্তে কোলেস্টেরল শোষণ কমায়। খাবারে দৈনিক ২ গ্রাম উদ্ভিজ্জ স্টেরল থাকলে তা ১০ শতাংশ পর্যন্ত এলডিএল কমায়। উদ্ভিজ্জ খাবারে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও থাকে, যা ধমনি ভালো রাখে। এটি আঁশ তৈরি করে, যা কোলেস্টেরল নিষ্কাশনে সহায়ক। সাধারণত প্রক্রিয়াজাত ও ভাজাপোড়া খাবারে ক্ষতিকর চর্বি থাকে। এটি রক্তে ভালো কোলেস্টেরল কমিয়ে এলডিএলের মাত্রা বাড়ায়। তারা জলপাইয়ের তেল, অ্যাভোকাডো, আখরোটসহ চর্বিযুক্ত মাছ খেতে উৎসাহিত করেছে। পরিশোধিত শর্করা ও চিনি কমানো। বেশি পরিশোধিত বা প্রক্রিয়াজাত শর্করা ও চিনি শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়ায়। ট্রাইগ্লিসারাইড হলো রক্তে জমে থাকা চর্বি। এটি নির্দিষ্ট পরিমাণে দরকারি। কিন্তু এর অতিরিক্ত মাত্রা হৃদরোগের উচ্চঝুঁকি তৈরি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব লোক তাদের ক্যালরির ২৫ শতাংশের বেশি চিনি থেকে গ্রহণ করেন, তাদের হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি। চিনিযুক্ত পানীয়, ক্যান্ডি, পেস্ট্রি ও পাউরুটি খাওয়া বাদ দিলে শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমে এবং রক্তচাপ ঠিক থাকে। কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যায়াম শুধু এইচডিএল কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে না পাশাপাশি ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড ও অন্য ধরনের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। সপ্তাহের বেশির ভাগ দিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটা জরুরি। একটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা: অতিরিক্ত ওজন কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সুষম খাদ্য এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা যায়।
ডায়াবেটিস এখন আর শুধু বয়স্কদের রোগ নয়। অস্বাস্থ্যকর খাবার, অনিয়মিত রুটিন, কম শারীরিক পরিশ্রম ও মানসিক চাপের কারণে অল্প বয়সীদের মধ্যেও দ্রুত বাড়ছে এই রোগের ঝুঁকি। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে কিডনি, হার্ট, চোখ ও স্নায়ুতন্ত্রসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, ডায়াবেটিসের বেশ কয়েকটি লক্ষণ পায়ে দেখা যায়—যা সময়মতো শনাক্ত করতে পারলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা পায়ের ৭টি সাধারণ সতর্ক সংকেত চিহ্নিত করেছেন: ১. পায়ে ব্যথা বা অস্বস্তি জ্বালা, ঝিনঝিন ভাব, লালচে হওয়া বা অসাড়তা—এসবই ডায়াবেটিসের প্রাথমিক ইঙ্গিত হতে পারে। ২. ক্ষত বা ঘা দেরিতে সারা ডায়াবেটিসে রক্তপ্রবাহ ধীর হয়ে যায়, ফলে পায়ের ক্ষত দ্রুত সারতে চায় না। ৩. ফোসকা বা আলসার পায়ের নিচে বা আঙুলের তলায় ফোসকা, ঘা বা আলসার দেখা দিলে সতর্ক হওয়া জরুরি। ৪. পায়ের আকৃতির পরিবর্তন ডায়াবেটিস পায়ের হাড়, জোড় ও নখের গঠনে প্রভাব ফেলতে পারে। ৫. ত্বকের সমস্যা পায়ের ত্বক শুষ্ক হওয়া, ফেটে যাওয়া, চামড়া ওঠা বা আঙুলের ফাঁকে ত্বক খসে যাওয়া—এসবই ডায়াবেটিস সম্পর্কিত সতর্ক সংকেত। ৬. ত্বকের রঙের পরিবর্তন পায়ের ত্বক ফ্যাকাশে, নীলচে বা অস্বাভাবিক গাঢ় হয়ে গেলে অবহেলা করা ঠিক নয়। ৭. ফোলাভাব গোড়ালি বা পায়ে অস্বাভাবিক ফোলা দেখা দিলে এটি রক্তসঞ্চালন সমস্যা বা ডায়াবেটিসের ইঙ্গিত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পায়ে এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সময়মতো যত্ন নিলে ভবিষ্যতের জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
চরমোনাই পীর সম্প্রতি এক ভাষণে বলেছে- ক্ষমতাপ্রেমিকদের বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করি, যা শুনে দেশব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক ছড়িয়েছে। বক্তৃতায় পীর ক্ষমতার অপব্যবহার, অনৈতিক শাসন ও দায়িত্বহীন রাজনৈতিক আচরণের বিরুদ্ধে কড়া সুরে বিরোধিতা করে এমন উক্তি করেন বলে অনেকে জানাচ্ছেন; তার সমর্থকরা মন্তব্যটিকে চরম নেতিবাচক শক্তির প্রতীকী সমালোচনার ভাষা হিসেবে ব্যাখ্যা করলেও অধিকাংশ নেতী অংশ ও নাগরিকরা এটি নিন্দার মধ্যে রেখেছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মানুষের অধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজের কিছু সংগঠন এই ধরনের হিংসাত্মক ভাষার নিন্দা জানিয়েছে এবং সামাজিক অস্থিরতা উসকে দিতে পারে এমন প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে সতর্ক করেছে। আইনজীবি ও সংবিধানপ্রণেতারা মনে করাচ্ছেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সুরক্ষিত থাকলেও প্রকাশিত বক্তব্যে যদি কাউকে হেয় করা বা হিংসাত্মক কার্যকলাপ উৎসাহিত করার চেষ্টা থাকে তবে তার দায়-দায়িত্ব খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। অপরদিকে পীরের অনুসারীরা বলেছেন, উক্তিটি আদতে প্রতীকী এবং সমাজে জমে থাকা অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ মাত্র; তারা দাবি করেছেন মন্তব্যের উদ্দেশ্য ভিন্নভাবে বোঝার চেষ্টা করা উচিত। সামাজিক মাধ্যম ও বিশ্লেষণচক্রগুলোতে বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত হওয়ায় শান্তি রক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বানও উঠেছে বিশেষত এমন সময়ে যখন রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কা থাকে। ঘটনাস্থল ও বক্তৃতার সময় ও প্রসঙ্গে যে-পাঠ্য প্রকাশিত হয়েছে, তা নিয়েও বিভিন্ন ব্যাখ্যা ও বিরোধিতার পারস্পরিক মিলছে; সুতরাং ঘটনাটির যে কোনও আইনগত বা সামাজিক পরিণতি নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদন্ত ও সামাজিক প্রতিক্রিয়ার ওপর।