খবর ৭১ঃ বিশ্বকাপ জাতিগতভাবে আরও ঐক্যবদ্ধ করে তুলেছে ক্রোয়েশিয়াকে। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে উঠার পরই ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগ্রেবসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে পথে পথে উল্লাস করছে মানুষ। সেই উদযাপন যেন কিছুতেই ফুরোবার নয়। দেশ প্রথমবার ইতিহাস গড়ার পথে। তাইতো আজ ফাইনালে শুধু ১১ জন নয়, গোটা ক্রোয়েশিয়ার ৪৫ লাখ জনগণই লড়বে রাকিটিচ-মডরিচদের প্রেরণা হয়ে।
জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্বিতীয় ক্ষুদ্র রাষ্ট্র হিসেবে ফাইনালে উঠেছে ক্রোয়াটারা। দেশের মানুষের আবেগটাও তাই লাগামছাড়াই। ফ্রান্সের বিপক্ষে আজকের ফাইনাল ক্রোয়াটদের ১৯৯৮ বিশ্বকাপের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে। সেবারও প্রথম সেমিফাইনালে উঠেছিল তারা। কিন্তু ফরাসিদের কাছে হেরে স্বপ্নটা সেদিন গুড়েবালি হয়ে যায়। আজ সেই আক্ষেপের ক্ষতে প্রলেপ দিতে সবটুকু উজাড় করে দিতে প্রস্তুত ক্রোয়েশিয়া।
অর্ধকোটিরও কম জনসংখ্যার এই দেশটির ফাইনালে উঠে আসবে তা হয়তো জোরেসোরে ভাবেনি কেউই। কিন্তু যোগ্যতম হিসেবেই তারা নিজেদের প্রমাণ করেছে। ফ্রান্সের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে তাই দলের ঐক্যবদ্ধতা বোঝাতে গিয়ে ইভান রাকিটিচ বলেছেন, ‘আজ মাঠে শুধু ১১ জন নয়, বরং ৪৫ লাখ খেলোয়াড় নিয়েই মাঠে নামবে ক্রোয়েশিয়া। পুরো দেশ আজ এক বিন্দুতে মিলেছি। প্রত্যেক ক্রোয়েশিয়ান নাগরিকের জন্য ঐতিহাসিক এক ম্যাচ এটি। আমরা আমাদের ক্রীড়া ইতিহাসের সবচেয়ে বিগ ম্যাচটি খেলতে যাচ্ছি।’
বিশ্বকাপ এখনও জেতা হয়নি, তবে তার আগেই উদ্বুদ্ধ, উল্লসিত গোটা জাতি। গত মাসখানেক ধরে ক্রোয়েশিয়ার পথে পথে উল্লাস উদযাপনের নানামাত্রিক চিত্র এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে উঠেছে। সাধারণ জনগণ দেশের ক্রীড়া ইতিহাসের সেরা সাফল্য দেখার অপেক্ষায় অধীর হয়ে আছে।
রাকিটিচরাও দেশবাসীর এমন আহ্বান দূর থেকে শুনতে পাচ্ছেন। তাইতো দেশকে এই শিরোপা এনে দিয়ে গর্বের ইতিহাসে নিজেদের নাম লিখাতে চান ক্রোয়াট ফুটবলাররা।
রাকিটিচ বলেন, ‘ক্রোয়েশিয়া থেকে আগত ফুটেজগুলোর দিকে একবার তাকান, তাহলেই বুঝে যাবেন গত এক মাস ধরে কী চলছে দেশটিতে। এটি ভাষায় বর্ণনা করার মতো না। সবার মধ্যে যে আনন্দ, একতা, গর্ব আমরা দেখতে পেয়েছি, তা এক কথায় অবিশ্বাস্য। ৪৫ লাখ ধারণক্ষমতাসম্পন্ন কোনও স্টেডিয়াম যদি থাকত, তাহলে সেটি পুরো ভরে যেত।’
ইংল্যান্সের সঙ্গে সেমিফাইনালে মাঠে নামার আগে ব্রিটিশ মিডিয়াগুলো রব তুলেছিল- ক্রোয়াটরা আগেই দুই ম্যাচে টাইব্রেকারে জিতে ক্লান্ত হয়ে গেছে। ইংল্যান্ডকে বিদায় করেই মিডিয়ার মন্তব্যের জবাব দিয়েছিলেন ক্রোয়েশিয়ার অধিনায়ক লুকা মডরিচ। আর আজ তো ফাইনাল। ক্লান্তি নামের শব্দটাই তো এখানে বেমানান।
রাকিটিচ বলেন, ‘আমাদের দলের কেউই ক্লান্তি দ্বারা কাবু হবে না। ক্লান্তি তো দূরের কথা, আজ আমরা বাড়তি শক্তি নিয়ে নামব। আমরা একজন আরেকজনের ভার বহন করব। মাথা উঁচু করেই আমরা মাঠ ছাড়তে চাই। ভাগ্যের ছোঁয়াটুকু শুধু সঙ্গে থাকলেই হবে।’
খবর ৭১/ইঃ