ছাফওয়ান নাঈমঃছোট থেকে এই পর্যন্ত আমাদেরকে অনেকে অনেক অনেক কষ্ট করে লালন পালন করেছেন। এই আমাদেরকেই লালন পালন করেই তাদের জীবন শেষ করতেছেন। আমাদেরকে নিয়েই তো তাদের সকল স্বপ্ন, তাদের সকল আশা সব ধরণের ভালবাসা। আমাদেরকে ঘিরেই তাদের জীবনের সকল পরিকল্পনা। অবাস্তব সপ্নও তারা আমাদেরকে নিয়েই দেখে। নিজের সকল আরাম আয়েশ কে উৎসর্গ করে আমাদের আরাম আয়েশের জন্য।
তারা আর কেউ নয়, আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় আর পরম ভালবাসার বাবা আর মা। আমাদের সকল ধরণের সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য, যতটুকু সম্ভব তারচেয়ে বেশী সহযোগিতা করেন তারা। সর্বোচ্ছটুকু বিলিয়ে দেন আমাদের সহযোগিতায়।
আসসা, এই সহজ সরল স্বীকারোক্তি টুকু কি কোন সন্তান তার মা-বাবার ব্যপারে না দিয়ে পারবে! না পারবেনা। তবে আমরা শুধু এই স্বীকারোক্তি দেওয়া পর্যন্তই পারি। এর চেয়ে বেশী পারিনা। সত্যিই পারিনা। যেটা বড় দুঃখজনক।
মা-বাবা যখন বৃদ্ধ হয়ে যায় তখন স্বাভাবিকতই তারা তাদের সন্তানদের উপর নির্ভর্শীল হয়ে যান। তাদের খাওয়া, থাকা, চিকিৎসা, সকল ধরণের সহযোগিতা সন্তানকেই করতে হয়। আর করাটাই স্বাভাবিক। শুধু সাভাবিকই নয় বাধ্য ও বটে।
মা-বাবার শারীরিক সহযোগিতা এবং আর্থিক সহযোগিতা দুইটাই সন্তানকেই করতে হবে। কোন ধরণের দ্বিধা-ধন্ধ আর ভাগবাটোয়ারা ছাড়াই করতে হবে। এটা একটা সুস্থ মস্তিস্ক সম্পন্ন সন্তান কোনদিন না করে পারবেনা। ১০ মাস ১০ দিনের কষ্টের কথা ভুলে যাওয়া আর লালন পালনের কষ্টের কথা ভুলে গিয়ে হয়তো সন্তান নামের কোন কুলাঙ্গার পারবে। আমি তাদের সন্তান বলবোনা, বলব কুলাঙ্গার।
এখন প্রায় পরিবারেই মা ববার সেবা যত্ন নিয়ে সন্তানদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা দেখা যায়। যেই পরিবারে একাধিক সন্তান রয়েছে ওই পরিবারে এমনটা বেশী দেখা যায়। তবে কিছু পরিবারে কিছু ছেলে সম্পূর্ন বিপরীত। যেটা আমি ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি। এবং এখনো দেখছি। কই তার এরকম সহযোগিতার কারণে তার কোন ধরণের ক্ষতি বা লোকসান তো দেখছিনা! বরং দিনদিন উন্নতি হচ্ছেই তার। আর যারা সহযোগিতার ব্যাপারে ভাগবাটোয়ারা চায়, তাদেরই উন্নতি তেমন দেখছিনা। বরং ক্ষয়-ক্ষতি আর লোকসান দেখছি।
এই সময়ের সন্তানরা তাদের মা বাবার চরম কষ্টের কথা ভুলে গিয়ে নিজেরা আরাম আয়েশে জীবন কাটাতে চায়। মা বাবাকে কষ্টে রেখে নিজেরা আরামে থাকতে চায়।অথচ নিজেদের কোন রকম কষ্ট মোটেও সহ্য করতে পারেনা। এই রকম অসুস্থ আর দুর্বল মস্তিস্ক সম্পন্ন সন্তান আমি নিজের চোখেই দেখেছি এবং এখনো দেখছি। যেটা সহ্য করা আসলেই কষ্টকর।
যারা আমাকে আরাম আয়েশে রাখার জন্য আমার ছোটবেলা থেকে এই পর্যন্ত যেই কষ্ট সহ্য করে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন তাদের বৃদ্ধকালে যাতে তাদের কে তারচেয়ে বেশী আরাম আয়েশে রাখতে পারি!! আল্লাহ যাতে তাওফিক দেয়, এই দোয়াই করি।
একটা কথা!! বর্তমান সময়ে চাকরি নামের সোনার হরিণ ওই মা আর বাবার সেবা-যত্নের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। হ্যাঁ! এটাই বাস্তব এবং চরম সত্য। আমি চাকরির কোন ধরণের বিরোধি নই আর বিরোধিতা করছিও না। যদি মা-বাবার সেবার নিশ্চয়তা দিতে পারে কোন সন্তান তাহলে সে তার পরিবারের তার সহযোগির চাকরির ব্যবস্থা করতেই পারে। স্বাভাবিকই সেটা।
খবর ৭১/ইঃ