মদপানে নষ্ট হয় স্মৃতি শক্তি, ক্ষতি পোষাতে খেতে হবে ৯টি খাবার

0
361

খবর ৭১:আজ ল্যান্সেট পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে দাবি করা হয়েছে যে, অ্যালকোহল খাওয়ার অভ্যাস থাকলে ধীরে ধীরে কগনিটিভ পাওয়ার বা জ্ঞানীয় দক্ষতা কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শুধু স্মৃতিশক্তি নয়, কমে বুদ্ধি এবং মনযোগ ক্ষমতাও।

তবে এখানেই শেষ নয়, নিয়মিত মদ্যপান করলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে রক্তচাপও ওঠানাম করতে শুরু করে। ফলে যে কোনো সময় স্ট্রোকের মতো মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।

এখনও একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। তা হল… যারা এতদিন পর্যন্ত প্রতিদিন ড্রিঙ্ক করতো, তাদের তো মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে গেছে। এখন তারা কী করবেন? খুব সহজ! সেক্ষেত্রে তাদের এই লেখায় আলোচিত খাবারগুলি নিয়মিত খাওয়া শুরু করতে হবে। তাহলেই কগনেটিভ পাওয়ার বাড়তে শুরু করবে। আর এমনটা হলে বাড়বে স্মৃতিশক্তিও। আসুন জেনে নেওয়া যাক ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে যে যে খাবারগুলি বিশেষ ভূমিকা পলন করে থাকে, সেগুলি কী।

১. ব্রকলি
সালফারাফেন নামক একটি উপাদানে ভরপুর এই সবজিটি খাওয়া মাত্র শরীরে থাকা ক্ষতিকর উপাদান বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে ব্রেন সেলের কোনো ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

২. ডিম
এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় কোলিন এবং উপকারি কোলেস্টেরল, যা নিউরনের ক্ষমতা বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে সার্বিকভাবে ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানেই শেষ নয়, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন ডিম খেলে দেহে বিশেষ এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা ব্রেন সেলের যাতে কোনোভাবে ক্ষতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে নানাবিধ ব্রেন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে হ্রাস পায়।

৩. জাম
এই ফলটিতে উপস্থতি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ব্রেন সেল যাতে শুকিয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখে। সেই সঙ্গে ব্রেনের অন্দরে প্রদাহ কমানোর মধ্য দিয়ে নানাবিধ ব্রেন ডিজিজকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, যাদের পরিবারে অ্যালঝাইমারস বা ডিমেনশিয়ার মতো মস্তিষ্কের রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা যদি প্রতিদিন জাম খেতে পারেন, তাহলে দারুন উপকার মেলে।

৪. শতমূলী
এই প্রাকৃতিক উপাদনটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার এবং এমন কিছু উপাদান, যা শরীরে মস্তিষ্কের উপকারে লাগে এমন ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা বৃদ্ধি করে। সেই সঙ্গে এতে উপস্থিত ফলেট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি উপাদানও এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৫. অলিভ অয়েল
দক্ষিণ এশিয়ায় সাধারণত রান্না করতে অলিভ ওয়েল ব্যবহার করা হয় না। কিন্তু যদি করা হয়, তাহলে দারুন উপকার মিলতে পারে। আসলে এই তেলটিতে রয়েছে পলিফনল নামে একটি উপাদান, যা ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে দারুন কাজে আসে। প্রসঙ্গত, একাধিক কেস স্টাডি চলাকালীন বিজ্ঞানীরা লক্ষ করেছেন পলিফেনল নামক উপাদানটি নার্ভ সেলের কর্মক্ষমতা বাড়য়ে দেয়। ফলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে।

৬. আখরোট
এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, কপার, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার, এসব নানাভাবে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে কাজে লাগে। সেই সঙ্গে দেহে উপকারি ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাও বাড়ায়। ফলে সবদিক থেকে মস্তিষ্কের উপকার হয়।

৭. পালং শাক
বাঙালিদের এই শাকটির প্রতি একটু আলাদা রকমের একটা দুর্বলতা রয়েছে। যে কারণে দেখবেন বুদ্ধির গোড়ায় ধুঁয়া দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে এমন কাজে বাঙালিরা সবসমই এগিয়ে। আর কেন থাকবে নাই বা বলুন! পালং শাকে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন কে, ফলেট এবং লুটেইন ব্রেনের কর্মক্ষমতা বাড়াতে দারুন কাজে আসে। ফলে নিয়মিত এই শাকটি খেলে স্বাভাবিক ভাবেই ব্রেন পাওয়ার চোখ পড়ার মতো বৃদ্ধি পায়।

৮. মাছ
বেশি তেল রয়েছে এমন মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড নামে একটি উপাদান থাকে, যা মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে দারুন কাজে আসে। আসলে এই উপাদনটি ব্রেন সেলের ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মস্তিষ্কের যে অংশটা স্মৃতিশক্তির আঁধার, সেই অংশের ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে।

৯. হলুদ
একেবারেই ঠিক শুনেছেন! এই প্রাকৃতিক উপাদানটি ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে দারুন কাজে আসে। আসলে হলুদে থাকা বেশ কিছু কার্যকরি উপাদান একদিকে যেমন মস্তিষ্কের ভেতরে প্রদাহ কমায়, তেমনি অন্যদিকে বুদ্ধির বিকাশেও সাহায্য করে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রায় ৩০০০ বছরের পুরোনো একটি আয়ুর্বেদিক পুঁথির খোঁজ মিলেছে, তাতেও ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে হলুদ কীভাবে কাজে আসে, সে বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here