উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে তাঁরা উচ্চকন্ঠ। জঙ্গিবাদ দমনেও সোচ্চার। তাদের সময়ে নড়াইলে শান্তিপূর্ণ এক জেলা। জেলা প্রশাসনে নীতি নির্ধারণী পদে থেকে পরিচ্ছন্ন মনে জনসাধারণের জন্য সেবার দূয়ার খুলে দিয়েছেন। নিজ নিজ প্রশাসনে গতিশীলতা এনেছেন। কাজের মাধ্যমেই উজ্জ্বল করেছেন সরকারের ভাবমূর্তি। সাধারণের সঙ্গে মিশে যাওয়ার অসাধারণ ক্ষমতার কারণেও তারা জনপ্রিয়। জেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ দু’পদের ‘জনবান্ধব’ এ দু’ কর্মকর্তা হচ্ছেন মোঃ এমদাদুল হক চৌধুরী ও সরদার রকিবুল ইসলাম। একজন জেলা প্রশাসক (ডিসি)। অন্যজন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি)। সফলতা ও সুনামের সঙ্গে প্রশাসন চালাতে গিয়ে নিজেদের কাজের মাঝেও অপূর্ব সমন্বয় রেখেছেন। এসব কারণেই নড়াইলের ইতিহাসে তাদের ধরা হচ্ছে অন্যতম শ্রেষ্ঠ জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে। জেলার রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকে সুশীল সমাজ এমনকি নতুন প্রজন্মও তাদের ভূমিকায় মুগ্ধ। নড়াইলে যোগদানের প্রথম দিনেই তদ্বিরবাজদের সতর্ক করেছিলেন ডিসি মোঃ এমদাদুল হক চৌধুরী। চাটুকারিতাকে ‘না’ জানিয়েছিলেন। তার মতো এমন জেলা প্রশাসক নড়াইলে খুব কমই এসেছেন। তিনি সংস্কৃতি নগরী নড়াইলে সাংস্কৃতিক জাগরণ সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছেন। সচেতনতা বিকাশে বিস্তৃত করেছেন সামাজিক আন্দোলন। তাঁর আলোচিত ও প্রশংসনীয় পদক্ষেপের একটি প্যানাফ্ল্যাক্স, ব্যানারের জঞ্জালমুক্ত নগরী উপহার দেয়ার প্রচেষ্টা। এক সময় ঠাহর করাই কষ্টকর ছিল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। ডিসি অফিসের সামনের পুকুরটি এক সময় ছিল ময়লা আবর্জনায় পরিপূর্ণ। চারপাশে ছিল ঘন জঙ্গল। কিন্তু এখন সৌন্দর্যবর্ধনের অফিসের সামনের দিকটায় মনোরম পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বিউটিফিকেশনের ছোঁয়ায় এসেছে ঝকঝকে তকতকে চেহারা। সৌন্দর্যবর্ধন হয়েছে পুকুরেরও। অফিসে প্রবেশ পথেই স্বাগত জানাচ্ছে সুদৃশ্য ‘ডিসি গার্ডেন।’ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোঃ এমদাদুল হক চৌধুরী নিজ অফিসেই প্রতিষ্ঠা করেছেন আইসিটি ল্যাব। সেখানে নারী উদ্যোক্তাদের দেয়া হচ্ছে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ। মোহনীয় এক পরিবেশ ফিরিয়ে আনায় জেলা প্রশাসকের (ডিসি) এমন কর্মযজ্ঞেরও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বক্তব্য স্থানীয় জনসাধারণকে উদ্দীপ্ত করেছে। দুর্নীতিমুক্ত গতিশীল প্রশাসন পরিচালনা করে রীতিমতো মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন। জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে জেলাবাসীর সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কের নজির স্থাপন করেছেন ডিসি মোঃ এমদাদুল হক চৌধুরীর। এর মাধ্যমে সরাসরি যে কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন। নিজেদের সমস্যার কথাও অকপটে তুলে ধরতে পারছেন। মূলত কল্যাণকর কাজেই সামাজিক এ নেটওয়ার্ককে ব্যবহার করে নিজের কর্মকৌশল নাগরিকদের সম্মুখে তুলে ধরছেন তিনি। তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে সব রকমের সেবা প্রদানে সরকারি অঙ্গীকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। এতো গেলো জেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা ডিসি’র কথা। জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দৃষ্টান্ত পুলিশ প্রশাসনের নাম্বার ওয়ান কর্মকর্তা এসপি সরদার রকিবুল ইসলাম। শুরু থেকেই তিনি জনসম্পৃক্ত কর্মপরিকল্পনা নিয়েই এগিয়েছেন। জঙ্গিবাদ নির্মুল, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স এবং জন হয়রানির বিষয়ে নিজের আপোষহীন অবস্থার কথাও বলেছিলেন একাধিকবার। তিনি কথা রেখেছেন। নড়াইলে এসপি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চ্যালেঞ্জে উত্তীর্ণ হয়েছেন। কাজের মাধ্যমেই প্রমাণ করেছেন তিনি সেরা। অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণে দেশের পুলিশ কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তও তিনি। পুলিশ ও জনগণের সম্পর্কেও নতুন মাত্রা যুক্ত করেছেন এসপি সরদার রকিবুল ইসলাম। নিজের চিন্তা-চেতনাতেও মুক্তিযুদ্ধকে সবার উপরে স্থান দিয়েছেন। তাঁর কৃতিত্বপূর্ণ ও দক্ষ নেতৃত্বে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে পুলিশ। সামাজিক শান্তি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনেও হয়েছে সফল। দেখা গেছে, জেলা পুলিশের এ সর্বোচ্চ কর্মকর্তার অফিস কক্ষে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতে কোন বাঁধা নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সম্পর্কে বিশেষ করে জেলার রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অঙ্গন ও প্রতিভাবান নতুন প্রজন্মের সঙ্গে সম্পর্কের মেলবন্ধন স্থাপনেও তিনি দৃষ্টান্ত। বিনয় আর হাসিমুখ নিয়েই কথা বলেন আগন্তুকদের সঙ্গে। সমস্যায় আক্রান্ত মানুষের সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধানও মেলে তাঁর কাছ থেকে। এসব কারণেই জেলার অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণেও ইতিবাচক ভাবমূর্তি অর্জন করেছে জেলা পুলিশ। আর ‘জনবান্ধব’ পুলিশ কর্মকর্তার অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছেন পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম।
খবর ৭১/ ই: