গাইবান্ধায় প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

0
371

আবু বক্কর সিদ্দিক, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন না করেই ২০ লাখ ৩৬ হাজার ৫’শ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ইউপি সদস্যরা। রোববার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, রংপুর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের বরাবরে ঐ ইউনিয়নের ১০ জন সদস্য লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
জানা যায়, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ১২ লাখ এক হাজার ৫৮২ টাকা এবং ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে আট লাখ ৩৪ হাজার ৯১৮ টাকা বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যয় দেখিয়ে খোলাহাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ সামাদ আজাদ আত্মসাত করেন। প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে, ২০১৬ সালের আগষ্ট ও অক্টোবর মাসে ভূমি হস্তান্তর খাতের ১ শতাংশ কর থেকে দুই লাখ ৭৪ হাজার ৩০৫ টাকা ব্যয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপি ভবনের ভাঙ্গা দরজা-জানালা মেরামত ও ইউপি ভবন রংকরণ এবং ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণার বিভিন্ন কার্যক্রমের পৃথক দুইটি প্রকল্প গ্রহন করা হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এ ছাড়া ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একই খাতের চার লাখ ২১ হাজার ২৮৩ টাকা দিয়ে খোলাহাটী ইউনিয়ন পরিষদের দরজা-জানালা মেরামত, ল্যাট্রিন ও বাথরুম মেরামত, বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং ও লাইটিং, ক্রোকারিজ সামগ্রী ক্রয়, ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে টেবিল, চেয়ার ও আনুসঙ্গিক সরঞ্জাম সরবরাহ এবং ইউনিয়নের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে উঁচু-নিচু বেঞ্চ সরবরাহের জন্য পৃথক তিনটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও তা সম্পন্ন করা হয়নি। একই বছরের এপ্রিল মাসে ভূমি হস্তান্তর করের তিন লাখ সাত হাজার ৮৯ টাকা দিয়ে খোলাহাটী ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতল ভবনের ল্যাট্রিন সংষ্কার, বিভিন্ন কক্ষের বৈদ্যুতিক পাখা সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় ওয়্যারিং এবং ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর ও পরিষদ সীমানার বিভিন্ন স্থানে বৃক্ষরোপণের পৃথক দুইটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এছাড়া একই বছরের জুন ও আগষ্ট মাসে একই খাতের পূর্বকোমরনই চেয়ারম্যানের বাড়ীর রাস্তায় হায়দারের বাড়ীর পাশে প্যালাসাইডিং এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার লক্ষে কোরবানীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও নির্দিষ্ট স্থান সংস্কারকরণসহ প্রচারণাবাবদ চার লাখ ৩০ হাজার ৮৪৪ টাকার পৃথক দুইটি প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও কোন কাজই করা হয়নি। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে ভূমি হস্তান্তর করের দুই লাখ ৭৮ হাজার টাকা দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের জন্য একটি আধুনিক ডেস্কটপ কম্পিউটার, একটি ব্র্যান্ডের আলমারি ও বৈদ্যুতিক পাখা সরবরাহ এবং ইউনিয়ন পরিষদের জন্য ব্র্যান্ডের চেয়ার, স্মরণিকা বোর্ড এবং রহিম-আফতাব অটিজম স্কুলের জন্য হেলনা ব্রেঞ্চ নির্মাণ প্রকল্প দুইটি গ্রহণ করা হলেও শুধুমাত্র ইউনিয়ন পরিষদে একটি আলমারি কিনে সমুদয় টাকা আত্মসাত করেন। অপরদিকে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে হাট-বাজার উন্নয়ন খাত হতে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে খোলাহাটী ইউনিয়নের রথবাজারের শেডঘরের মেঝে মেরামত, হাঁটার গলি পাকাকরণ ও একটি নলকূপ স্থাপন এবং আন্তঃজেলা ফেরি/খেয়াঘাট খাত হতে এক লাখ ৬৪ হাজার ৩৬১ টাকা দিয়ে নতুন ব্রীজ সংলগ্ন ঘাটের ছাউনি সংস্কার, ছাউনিতে বসার ব্যবস্থাকরণ এবং ছাউনি সংলগ্ন রাস্তা সংস্কারের পৃথক দুইটি প্রকল্প গৃহিত হলেও তা বাস্তবায়ন না করে সমুদয় টাকা চেয়ারম্যান শেখ সামাদ আজাদ আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ইউপি সদস্য জানান, প্রকল্পগুলো সম্পন্ন না করে চেয়ারম্যান শেখ সামাদ আজাদ এসব প্রকল্পের টাকা আত্মসাত করেন। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান শেখ সামাদ আজাদ মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আরোপিত এসব অভিযোগ মিথ্যা। সম্মানহানি করার জন্য আমার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে কিনা তা পরিদর্শন করলেই সঠিক তথ্য জানতে পারবে সবাই। গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল সোমবার দুপুরে মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, অভিযোগের কাগজটি এখনো আমার হাতে এসে পৌঁছায়নি। সেটি পড়ে যাচাই-বাছাই করা হবে, প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here