ছাতকে সরকারি তথ্য বাতায়নে তথ্য বিভ্রাট, বিপাকে জনসাধারণ

0
369

হাবিবুর রহমান নাসির, ছাতক (সুনামগঞ্জ):
ছাতকে সরকারি তথ্য বাতায়নে উপজেলার সার্বিক তথ্য-উপাত্বে মারাত্মক তথ্য বিভ্রাটের ফলে সরকারের ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম মূখ থুবড়ে পড়েছে। যদিও সরকার সর্বক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে বিপুল অংকের টাকা বরাদ্ধ দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এ উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিয়ন্ত্রণে ‘ছাতক উপজেলা তথ্য বাতায়ন’ আপডেট করার জন্যে সরকারি বেতনভোগি একজন উদ্যোক্তা থাকলেও রহস্যজনক কারণে তথ্য বাতায়নে তথ্য বিভ্রাট লক্ষ্য করা যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের ডিজিটাাইজেশন পদ্ধতির উপর সাধারণ মানুষকে আস্তাহীন করে তোলতে একটি মহল প্রায় একযূগের দীর্ঘ সময় থেকে উপজেলা তথ্য বাতায়ন আপডেট না করে ভূঁয়া, বিকৃত ও দীর্ঘদিনের পূরানো তথ্য দিয়ে রেখেছে। এছাড়া এটিতে যেকোন একটি তথ্য খুঁজতে গেলে তথ্যের বদলে এখানে হয়রানী হতে বেশি। এটির প্রতিটি বিভাগ তথ্য ছাড়াই মান্ধাতা আমলের তথ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে। জানা গেছে, প্রায় একযূগ আগে এখান থেকে বদলী হয়েছেন, ওসি আশেক সুজা মামুন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাক্তার গোলাম মাওলা চৌধুরি, উপজেলা কৃষি অফিসার প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্য্য, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মৌলুদুর রহমান, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আলী আহসান, সহকারি এনামুর রহিম বাবর, কৃষি অফিসার জগলুল হায়দারসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদের কর্মকর্তাদের নাম এখনো তথ্য বাতায়নে শোভা পাচ্ছে। এভাবে চেয়ারম্যানদের তালিকায় এখনো নাম রয়েছে, নোয়ারাই আফজাল আবেদীন আবুল, ছাতক সদরে আব্দুল লতিব খান, কালারুকা নজরুল হক, জাউয়া নজরুল ইসলাম (যদিও নজরুল ইসলাম নামে জাউয়া ইউপির কোন চেয়ারম্যান ছিলেন না), গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও সুন্দর আলী, চরমহল্লা কদর মিয়া, ইসলামপুর সুফি আলম সুহেল, দোলারবাজার শাহ মো. আব্দুল গণি, ছৈলা-আফজালাবাদ মো. ফারুক আলীর নাম রয়েছে। এসব ইউপির চেয়ারম্যানদের কর্মকাল প্রায় অর্ধেকের উপরে চলে গেছে। ম্বোরদের তালিকা ও মোবাইল নাম্বার সেখানে দেয়া হয়। এছাড়া তথ্যবাতায়নে ছৈলা-আফজালাবাদ ইউপির নাম বিকৃত করে ছৈলা লেখা হয়েছে। কিন্তু একেবারে নিম্ন পর্যায় থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বর্তমান সরকারের পথচলা শুরু হলেও এ উদ্যোগ কার্যকর নয় ছাতক উপজেলা তথ্য বাতায়নের ক্ষেত্রে। উপজেলার সার্বিক বিষয়ে সার্বণিক আপডেট তথ্য পাবার কথা থাকলেও এখানে তথ্য বাতায়ন যেন চলছে অ্যানালগ ভিত্তিতে। যা-সর্বমহলে ক্ষোভ ও অসন্তেুাষ ছড়িয়ে পড়েছে। ভূক্তভোগিরা জানান, এ তথ্য বাতায়ন তথা সরকারি ওয়েব সাইটের প্রায় সব তথ্যই আপডেট নয়। অনেক ক্ষেত্রে দু’ থেকে ৩বছর আগের তথ্যই এখনো রয়েছে। প্রায়একযূগ আগের তথ্যও আছে এখানে। একজন চেয়ারম্যানের নাম ও মোবাইল নাম্বার পেতে হলে মারাত্মক দূর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। এতে সাংবাদিকসহ উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তথ্য পেতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। জানা গেছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পের অংশ হিসেবে গত ২০১০সালের ৬জানুয়ারি ‘বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন’ নামে একটি ওয়েবসাইট চালু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭সালের ২৩জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ কার্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়নের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি (আইসিটি) উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এ ওয়েবসাইটের সমন্বয় করছেন। দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বাতায়নটি আপডেট ও তথ্য সমৃদ্ধ করা হলেও সুনামগঞ্জ জেলার শিল্প শহর খ্যাত ছাতক উপজেলা অনেক পিছিয়ে রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাতক উপজেলা তথ্য বাতায়ন ওয়েবসাইট টি সমন্বয় করছে উপজেলা প্রশাসন। চালু হবার ৮বছর অতিক্রান্ত হলেও বাতায়নে এখনো অনেক তথ্যের ঘাটতি রয়েছে। এতে অনেকে ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহকারিরা চরম বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছেন। গত ২৫জানুয়ারি উপজেলা তথ্য বাতায়নে প্রবেশ করে দেখা যায়, উপজেলা সম্পর্কিত, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সরকার, সরকারি অফিস, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, ই-সেবা ও ফটো গ্যালারিসহ মূল পাতাটি সাজানো হয়েছে। মূল বিভাগের বাইরে উপজেলার ১৩ইউনিয়নের জন্য খোলা হয়েছে পৃথক পেজ। কিন্তু এগুলোর অনেক বিষয়ে সাম্প্রতিক তথ্য সংযুক্ত করা হয়নি। ছাতক উপজেলা পেজে প্রবেশ করে দেখা যায়, উপজেলা কৃষি অফিসারের নাম প্রদুৎ ভট্টাচার্য্য থাকলেও এখন রয়েছে কেএম বদরুল হক, সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসারের নাম ও মোবাইল নাম্বার থাকলেও এখন রয়েছেন ডাক্তার অভিজিৎ শর্মা, একইভাবে ভূল তথ্য দেয়া হয়েছে থানা অফিসার্স ইনচার্জের ব্যাপারে। এখানে আতিকুর রহমানের স্থলে রয়েছে সাবেক আশেক সুজা মামুনের নাম। এসিল্যান্ড সোনিয়া সুলতানার নামের স্থলে লেখা রয়েছে ‘এড করুন’। এভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি নিয়ে প্রশাসনের অব্যাহত খাম-খেয়ালীপনায় হতবাক সর্বস্তরের লোকজন। এব্যাপারে ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাছির উল্লাহ খান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে এটা মোটেও কাম্য নয়। ইউনিয়ন পরিষদ তথ্য বাতায়ন কেন্দ্রের দায়িত্ব স্ব স্ব ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে উপজেলা তথ্য বাতায়ন কেন্দ্রের ব্যাপারে খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
খবর ৭১/ এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here