নড়াইলে পল্লীবধুর পেটে গজ-ব্যান্ডেজ রেখেই সেলাই: মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে শারমিন

0
515

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি : নড়াইলের একটি বেসরকারি ক্লিনিকের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে গৃহবধূর পেটে গজ-ব্যান্ডেজ রেখে সেলাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। নড়াইল সদর উপজেলার ধুন্দা গ্রামের মনিরুজ্জামান মনিরের মেয়ে ও মাগুরা সদর উপজেলার দরিখাটো গ্রামের মামুন মিয়ার স্ত্রী শারমিন আক্তার জানান, গত ২৯ জুলাই আট হাজার টাকা চুক্তিতে নড়াইল সদরের ফ্যামিলি কেয়ার হাসপাতালে (ক্লিনিকে) সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। ক্লিনিক মালিক ডাঃ মুকুল হোসেন ও ডাঃ নুরুজ্জামান সিজারিয়ান অপারেশন সম্পন্ন করেন। অপারেশনের পর ছেলে সন্তান নিয়ে খুশিতে বাড়িতে ফিরে যাই। কিন্তু বাড়িতে ফেরার কিছুদিন পরে বিপাকে পড়ি। অস্ত্রোপচারের স্থানে ফুলে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে আবার ক্লিনিকে যাই। সেখানে গেলে ডাঃ মুকুল জানিয়ে দেন ড্রেসিং করলে ঠিক হয়ে যাবে। এভাবে প্রায় তিন মাস সময়ক্ষেপণ করেও পুরোপুরি সুস্থ হইনি। বরং আরও ৭০-৮০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। এক পর্যায়ে ক্লিনিক থেকে জানানো হয়, ক্লিনিকে তার চিকিৎসা সম্ভব না। অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হোক। শারীরিক অবস্থা বেগতিক দেখে পরিবারের লোকজন গত ২১ ডিসেম্বর যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে। হাসপাতালে কয়েক দফায় অস্ত্রোপচারে গজ-ব্যান্ডেজ অপসারণ করা হয়েছে বলে স্বজনদের দাবি। যদিও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া মেলেনি। হাসপাতালের চিকিৎসক শারমিন নাহার পলি, ফারজানা ও রাজিয়ার নেতৃত্বে কয়েক দফায় পুনরায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। পেট থেকে গজ ব্যান্ডেজ বের করেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। শারমীনের বাবা মনিরুজ্জামানের অভিযোগ, দিন দিন মেয়ের অবস্থা খারাপ হতে থাকায় বাধ্য হয়ে তাকে নিয়ে গত ২১ ডিসেম্বর যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। এখানেও চিকিৎসকরা প্রথমে ইনফেকশন হয়েছে বলে মনে করেন। তারা সেইমত চিকিৎসা চালিয়ে যান। কিন্তু কোন উন্নতি না হওয়ায় কুইন্স হাসপাতাল থেকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয়। তারা বুঝতে পারেন পেটের মধ্যে কিছু একটা আছে। তখন গাইনী বিভাগের চিকিৎসকরা অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন বলে তিনি জানান। ৩০ ডিসেম্বর সদর হাসপাতালের গাইনী চিকিৎসক শারমিন নাহার পলি, ফারজানা ও রাজিয়া অপারেশনে অংশ নেন। গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনবার অপারেশন করা হয়েছে। প্রতিবার অপারেশনে চিকিৎসকরা পেট থেকে সুতা, গজ এবং অপারেশনের অন্যান্য সামগ্রী পেয়েছে বলে আমরা জেনেছি। কিন্তু আমাদের কিছু দেখানো হচ্ছে না। এমনকি আল্ট্রাসনো রিপোর্টও দেখানো হয়নি। যশোর জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক শারমিন নাহার পলির মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। নড়াইলের ফ্যামিলি কেয়ার হাসপাতালের ডাঃ নুরুজ্জামানের মুঠোফোন (০১৭৪৮-৭১৬৩৮৮) একাধিকবার কল দিয়ে ব্যস্ত পাওয়া যায়। তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।ফ্যামিলি কেয়ার হাসপাতালের মালিক ডাঃ মুকুল হোসেনের মুঠোফোনে কল (০১৭১৪ ৫৯৩৫৬৩) দিলে তার সহকারী পরিচয় জানতে পেরে বলেন স্যার ব্যস্ত আছেন। এরপর আর ফোন রিসিভ হয়নি।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here