বৃহত্তম বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ চলছে পুরোদমে

0
357

খবর৭১: পটুয়াখালী জেলার পায়রা সমুদ্রবন্দরের কাছে দেশের বৃহত্তম বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের কাজ দ্রুতি এগিয়ে চলেছে। আল্ট্রা মর্ডার্ন ক্লিন কয়েল প্রযুক্তিতে চীনা একটি প্রতিষ্ঠান এটা নির্মাণ করছে।

১৫৬ কোটি মার্কিন ডলার দামের এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য গত বছরের মার্চ মাসে চীনা দুটি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৯ সালে এই কেন্দ্রটি চালু হবে।

২০৩০ সালের মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বর্তমান সরকার একটি লক্ষ্য স্থির করে। তারই অংশ হিসেবে এই বিদ্যুৎ নির্মিত হচ্ছে। এই কেন্দ্রের আয়তন হচ্ছে ৩৮৭ হেক্টর। চীনা প্রতিষ্ঠার দুটো পরবর্তী কালে এই প্রকল্প এলাকায় ১০০ মেগাওয়াটের সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র ও ৫০ মেগাওয়াটের একটি বায়ুচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে।

সূত্র মতে, পটুয়াখালীর পায়রাকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি ‘হাব’ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে প্রথম বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, সব ঠিক থাকলে ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট (৬৬০ মেগাওয়াট) উৎপাদনে আসবে ১৬ মাসের মধ্যে। এ কেন্দ্রটিই তখন দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে। নির্মাণাধীন বড় কেন্দ্রগুলোর মধ্যে বাগেরহাটের রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ২০১৮ সালের মধ্যে উৎপাদনে আসার কথা থাকলেও পরে তা পিছিয়ে যায়। রামপালের কেন্দ্রটি ২০২১ সালে জুনে উৎপাদনে আসতে পারে।

বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা (ক্যাপটিভসহ) প্রায় ১৬ হাজার মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে সরকারের নেওয়া মহাপরিকল্পনায় এই উৎপাদন ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াটে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ বছরই পাবনার রূপপুরে দুই হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার পারমাণবিক কেন্দ্রের মূল স্থাপনার নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, পটুয়াখালী, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি কয়লা ও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ চলছে।
বর্তমানে প্রকল্প এলাকায় প্রায় এক হাজার একর জমি প্রাচীর দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঠেকাতে বালি তুলে প্রকল্প এলাকা সাত মিটার উচুঁ করা হয়েছে।

ভূমি উন্নয়ন শেষে এখন চলছে মূল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ। দেড় হাজার বিদেশীসহ প্রায় সাড়ে তিন হাজার কর্মী কাজ করছেন সেখানে। প্রতিমন্ত্রী জানান, ‘প্রায় ৩১ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে। আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির সবচেয়ে আধুনিক পাওয়ার প্লান্টের কাজ চলছে এখানে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় ২০১৪ সালে বাংলাদেশের নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) মধ্যে যৌথ উদ্যোগের চুক্তি হয়। পরে গঠিত হয় বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। যৌথ উদ্যোগের ওই কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় পায়রার এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের দায়িত্বে আছে চীনের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এনইপিসি ও সিইসিসি কনসোর্টিয়াম। প্রায় ১২ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উৎপাদন শুরু হবে ২০১৯ সালের এপ্রিলে; ছয় মাস পর অক্টোবরে চালু হবে দ্বিতীয় ইউনিট। নির্মাণ ব্যয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ ঋণ দেবে চীনের এক্সিম ব্যাংক ও চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here