খবর৭১,হেদায়েত হোসেন,বাগেরহাট প্রতিনিধি:
বাগেরহাটে মুক্তিযোদ্ধা মল্লিক আবু বক্কর সিদ্দিককে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার গভীর রাতে বাগেরহাট সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের বারুইপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়া আসামীদের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ি ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা মুক্তিযোদ্ধা আবু মল্লিকের উপর হামলা চালায় বলে পুলিশ দাবি করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলার উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের বারুইপাড়া গ্রামের আব্দুর রশিদ শেখের ছেলে আকরাম শেখ (৩৬), একই গ্রামের প্রয়াত আনসার শেখের ছেলে জাহাঙ্গীর শেখ (৪৮) এবং প্রয়াত মহব্বত শেখের ছেলে উকিল শেখ (৩৪)।
বৃহষ্পতিবার দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা মল্লিক আবু বক্কর সিদ্দিককে কারা কেন কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা করেছে তার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে দাবি করে বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাতাব উদ্দিন সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
গত ১২ নভেম্বর ভোর রাতে বাগেরহাট শহরের খারদ্বার এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মল্লিক আবু বক্কর সিদ্দিকের বাড়ির গ্রীল কেটে ভেতরে ঢুকে এক দল মুখোসধারী সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে মারাতœক জখম করে পালিয়ে যায়। এই ঘটনার আটদিন পর ২০ নভেম্বর হামলায় আহত আবু বক্কর মল্লিক বাদী হয়ে একজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে বাগেরহাট মডেল থানায় একটি মামলা করেন।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাতাব উদ্দিন বলেন, বুধবার রাতে গোপণ সংবাদের ভিত্তিতে সদর উপজেলার বারুইপাড়া বাজার থেকে আকরাম শেখ নামে একজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তাকে মুক্তিযোদ্ধা আবু মল্লিকের উপর হামলার মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকরাম মুক্তিযোদ্ধার উপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। এবং তার পরিকল্পনায় কয়জনে মিলে তার উপর হামলা করা হয় তাদের নাম পরিচয় প্রকাশ করে স্বীকারোক্তি দেয়। তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ি বারুইপাড়া গ্রাম থেকে জাহাঙ্গীর ও উকিল শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায় মুক্তিযোদ্ধা আবু মল্লিকের সাথে তার প্রতিবেশি জাকারিয়া মোড়লের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। জাকারিয়া তাদের পূর্ব পরিচিত। পূর্ব পরিচয়ের সূত্রধরে গত ১১ নভেম্বর জাকারিয়া আমাদের তিনজনকে তার বাড়িতে ডেকে আনেন। সেখানে বসে মুক্তিযোদ্ধা আবু মল্লিককে হত্যা করতে আমাদের সাথে ২০ হাজার টাকায় জাকারিয়া ও তার বোন জামাই রফিক পাইকের মধ্যে চুক্তি হয়। ঘটনার দিন জাকারিয়া মোড়লসহ তারা মোট ছয়জনে মিলে মুক্তিযোদ্ধা আবু মল্লিকের বাড়িতে যেয়ে তার ঘরে ঢুকে তার উপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায় বলে পুলিশের ওই কর্মকর্তা দাবি করেছেন।
তিনি আরও বলেন, পরিকল্পনাকারী জাকারিয়া মোড়ল ও তার বোন জামাই রফিক পাইক এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া এখনো তাদের ধরা সম্ভব হয়নি। তাদের ধরতে পুলিশ চেষ্টা করছে।
খবর৭১/জি: