খবর৭১:বিনামূল্যের পাঠ্যবইয়ের ছাপার সার্বিক চিত্র দেখতে আকস্মিক পরিদর্শনে যাচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী নুুরুল ইসলাম নাহিদ। আজ সোমবার সকাল ৯টায় মতিঝিল জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এর সামনে থেকে রওনা হবে তার গাড়ি বহর।
বইয়ে মান ও ছাপার সর্বশেষ তথ্য সরেজমিন দেখে সংবাদমাধ্যমকে জানাবেন মন্ত্রী। কোন এলাকায় কোন প্রেসে যাবেন সেটি সংবাদমাধ্যম কর্মীদের জানানো হয়েছে। তাই অন্যান্য বছরের মতো এবারও তার সরেজমিন পরিদর্শন দিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কর্মকর্তারা জানান, বিনামূল্যে বই ছাপার কাজ প্রায় শেষ। আরও এক সপ্তাহ আগে প্রাথমিকের ১০ কোটি ৩৬ লাখ বই ছাপা শেষ। আর উপজেলা পর্যায়ে বই পাঠানোর কাজও প্রায় শেষ। আর মাধ্যমিকে সুখপাঠ্য ছাড়া বাকি বই ছাপার কাজও প্রায় শেষের দিকে। এই সময় এসে তিনি পরিদর্শন করে মন্ত্রী কী দেখবেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়া আগে থেকে প্রেসের নাম ঘোষণা দিয়ে পরিদর্শনে গেলে আসল চিত্র দেখা যাবে না। কয়েক বছর ধরে মন্ত্রী একই পদ্ধতিতে বিনামূল্যেই বই পরিদর্শন করছেন। প্রতি বছরই আগে ঘোষণা দিয়ে পরিদর্শনে যান তিনি।
অভিযোগ উঠেছে, এনসিটিবির কিছু কর্মকর্তার পরামর্শে শেষ সময় এসে ঝটিকা সফরের আয়োজন করেছে মন্ত্রণালয়ের এক শ্রেণির কর্মকর্তা। যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রিন্টার্সদের কাছ থেকে কমিশন খাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানান, মাধ্যমিকের নবম দশম শ্রেণির বিজ্ঞানের চারটি বই প্রথমবারের মতো এবার সম্পূর্ণ রঙিনভাবে ছাপার উদ্যোগ নেয়া হয়। নানা ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে নভেম্বরের শেষে দিকে ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হয় প্রিন্টার্সদের। সর্বমোট ১ লাখ ৯২ হাজার বইয়ের মধ্যে ৩০ ভাগ কাজ অর্থাৎ ৪০ লাখ বই দেয়া হয় কচুয়া নামে একটি প্রিন্টার্সকে। সেই প্রতিষ্ঠান শনিবার পর্যন্ত কোন বই সরবরাহ করতে পারেনি।
মুদ্রণ শিল্প সমিতির অভিযোগ, এনসিটিবির একশ্রেণির কর্মকর্তারা প্রভাব কাটিয়ে তাদের আত্মীয় স্বজনদের নামে কাজ নেয়। এই কচুয়া হলো সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। এই প্রতিষ্ঠান অতীতে দেরিতে ও নিম্নমানের কাগজে বই ছাপার অভিযোগ রয়েছে। মুদ্রণ শিল্প সমিতির নেতাদের দাবি ছিল, যেহেতু শেষ সময় মন্ত্রী পরিদর্শনে যাচ্ছেন তাই এই প্রতিষ্ঠান মন্ত্রীকে দিয়ে পরিদর্শন করানো হউক। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানটির প্রেস রাজধানীর শ্যামপুরে। তাদের দাবি অগ্রাহ্য করে শতভাগ ছাপার কাজ শেষ করা প্রতিষ্ঠানে পরিদর্শনে যাচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী।
এ ব্যাপারে মুদ্রণ শিল্প সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, আমরা শিক্ষামন্ত্রীকে এ বছর চমক দিতে চাই। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই মান সম্মত বইয়ের কাজ দেশে করা সম্ভব। কিন্তু কিছু প্রতিষ্ঠানের দুর্নামের ভাগি আমরা কেন নিব? গুটি কয়েক প্রতিষ্ঠান এখন বই দিতে পারেনি। নিম্নমানের কাগজে বই ছাপাচ্ছে। তাদের প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করার দাবি জানাচ্ছি।
খবর৭১/জি: