খবর ৭১:
রাখাইনে সহিংসতার মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হচ্ছে। গতকাল বুধবার নেপিদো’তে এই সমঝোতার খসড়া নিয়ে দিনভর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী গতকাল সন্ধ্যায় নেপিদো’তে সাংবাদিকদের জানান, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের ভালো আলোচনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (আজ) সমঝোতা স্মারক সই হবে আশা করি।
সূত্র জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী ও মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর দফতরের মন্ত্রী কিয়াও তিন্ত সোয়ে’র সঙ্গে গতকাল দীর্ঘ বৈঠক করেন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন। পাশাপাশি পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। চুক্তির বিস্তারিত জানা না গেলেও বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নির্দিষ্ট সময়সীমা ও জাতিসংঘের সম্পৃক্ততার প্রস্তাব দিয়েছে বলে সূত্র জানায়। চুক্তির আওতায় দুই দেশের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে। এই ওয়ার্কিং গ্রুপ মাঠ পর্যায়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে পররাষ্ট্র সচিব ছাড়াও মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা রয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজ মিয়ানমারের কার্যত সরকার প্রধান, স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠক করবেন।
আজ নেপিদো’তে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হলে এটা হবে তৃতীয় উদ্যোগ। এর আগে ১৯৭৮ সালে দুই দেশ চুক্তি করেছিল। সেই চুক্তির অধীনে দুই লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা ছয় মাসের মধ্যে ফেরত যায়। পরে ১৯৯২ সালে দুই দেশের মধ্যে আরেকটি সমঝোতা হয়, যার অধীনে ২০০৫ সাল পর্যন্ত দুই লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফেরত যায়।
রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়া বিষয়ে ১৯৯২ এর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল সেটাই এবারও অনুসরণ করতে চায় মিয়ানমার। তবে এবার বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে এবং এবার যাতে অধিক নিরাপদ প্রত্যাবাসন হয় তা নিশ্চিত করতে চাইছে। এ লক্ষ্যেই জাতিসংঘকে যুক্ত করতে চাইছে বাংলাদেশ