খবর ৭১:বগুড়া শহরের নারুলী পশ্চিমপাড়া এলাকায় মঙ্গলবার সকালে ভাতিজা আরেফিন সুলতান শাওন (২৬) ও তার সন্ত্রাসী সঙ্গীরা গ্রিল কেটে বাসায় ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে চাচা-চাচি ও চাচাতো ভাই স্কুলছাত্র সৌখিনকে গুরুতর আহত করেছেন।
পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা ভাতিজা শাওন ও সঙ্গী শাকিল আহমেদকে গণধোলাই দিয়েছেন।
হামলার শিকার ও হামলাকারীরা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৩টি ধারালো অস্ত্র, গ্রিল কাটার ও অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। দুপুরে এ খবর পাওয়া পর্যন্ত মামলা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার প্রতিশোধ নিতেই এ হামলা হয়েছিল।
আহতরা হলেন- বগুড়া শহরের নারুলী পশ্চিমপাড়ার মৃত মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে এবিএম কামরুজ্জামান আঙ্গুর (৫৮), তার স্ত্রী মোছা. রানী (৫০), তাদের সন্তান ৭ম শ্রেণির স্কুলছাত্র মো. সৌখিন (১৪), হামলাকারী ভাতিজা একই এলাকার মাহফুজুর রহমান লেবুর ছেলে আরেফিন সুলতান শাওন ও তার সঙ্গী পাতিতাপাড়ার আবদুল মান্নানের ছেলে শাকিল আহমেদ (২৭)।
বগুড়ার নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই শফিকুল ইসলাম জানান, আঙ্গুরের আগে মেটাল ফ্যাক্টরি ছিল। পরবর্তী সময় বিক্রি করে দেন। তারা ছয় ভাই। অপর ভাই লেবুর ২ ছেলে কানন ও শাওন। পারিবারিক সিদ্ধান্তে ছয় ভাই মিলে অপকর্মের জন্য ওই দুজনকে (কানন ও শাওন) বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তাদের বের করে দেয়ায় বেশি ভূমিকা রাখেন আঙ্গুর।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, সম্ভবত এর প্রতিশোধ নিতেই মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে ভাতিজা শাওন ও বন্ধু শাকিল গ্রিল কেটে আঙ্গুরের বাড়িতে ঢোকে। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আঙ্গুর তার স্ত্রী রানী ও ছেলে সৌখিকে রক্তাক্ত জখম করেন। তাদের আত্মচিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে শাওন ও শাকিলকে আটক করে গণধোলাই দেন।
শাওন পালিয়ে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে আহত অন্যদের একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে তিনটি ধারালো অস্ত্র, গ্রিল কাটার, প্যাথেডিন ইঞ্জেকশন, সিরিঞ্জ ও অন্যান্য সরঞ্জাম পাওয়া গেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাওন জানান, বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার প্রতিশোধ নিতেই তারা গ্রিল কেটে চাচার বাড়িতে ঢুকেছিলেন। বাড়ির মধ্যে মারপিটের সময় তিনি নিজেও আহত হয়েছেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, একতলা বাড়ির ছাদের গ্রিল কাটা। ৩টি রুমের বিছানা ও জিনিসপত্র এখানে-ওখানে পড়ে আছে। ৩টি রুম ও সিঁড়িতে ছোপ ছোপ রক্ত। বাইরে পুলিশ ও র্যাব কর্মকর্তাদের দেখা যায়।
আহত আঙ্গুরের ভাই ওবাইদুর রহমান পেস্তা সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ভাইয়ের (আঙ্গুর) বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে এমন খবরে সেখানে আসেন। এসে দেখেন ভাই আঙ্গুর, ভাবী রানী ও ভাতিজা সৌখিন রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছেন। তাদের দ্রুত উদ্ধার করে শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
ছিলিমপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আশুতোষ মিত্র জানান, আহত পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের দুজন হামলাকারীকে পুলিশ প্রহরায় রাখা হয়েছে।
খবর ৭১/ ই: