আগামী নির্বাচন অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে কঠিন হবে জানিয়ে দলের নেতাকর্মীদের জনগণের আস্থা অর্জন করার নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ৩১দফা প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, বিএনপি’র নেতাকর্মীদের ওপর জনগণের যে আস্থা, বিশ্বাস রয়েছে তা যে-কোন মূল্যে ধরে রাখতে হবে। আস্থা নষ্ট হয় এমন কোন কর্মকান্ডে লিপ্ত হওয়া যাবে না। তিনি বলেন, ‘একজন রাজনৈতিক নেতাকর্মীর সবচেয়ে বড়ো সফলতা হচ্ছে, মানুষের বিশ্বাস অর্জন করা। তিনি বলেন, আমরা জনগণের সর্মথন নিয়ে স্বৈরাচার সরকার-কে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি। কিন্তু
স্বৈরাচার দেশ ছেড়ে পালালেও তাদের ষড়যন্ত্র থামেনি। বিএনপির জনসমর্থন দেখেও অনেকের হিংসা হচ্ছে, তারাও বসে নেই। কাজেই বিএনপির সকল নেতাকর্মীকে সকল ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে।
তিনি বলেন, অনেকে ভাবতে পারেন আগামীর নির্বাচন সহজ হবে! কিন্তু না, আগামীর নির্বাচন অতন্ত্য কঠিন হবে। তাই, জনগণের সমর্থন, আস্থা, বিশ্বাস নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা জন্য নিজেদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।
বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে, থেমে যায় নি। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ রয়েগেছে। তারা কিন্তু ভিতরে ভিতরে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। অতএব তাদের প্রতি সকলকে সজাগ থাকে হবে।’
তারেক রহমান আরো বলেন, নিশি রাতের নির্বাচন ও ভোট ডাকাতির নির্বাচনে বিশ্বাসী নয় বিএনপি। যে কোন মূল্যে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। জনগণের সমর্থন নিয়ে রাষ্ট্র মেরামত করতে হবে।
গাজীপুরে অনুষ্ঠিত “রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা” জনসম্পৃক্তি বিভাগীয় এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় ৩১ দফা নিয়ে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তারেক রহমান।
গতকাল মঙ্গলবার গাজীপুর জেলা বিএনপি’র উদ্যোগে মহানগরীর চৌরাস্তা এলাকার অবস্থিত সাগর সৈকত কনভেনশন সেন্টারে এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে গাজীপুর, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের ৩ হাজারের বেশি নেতাকর্মী অংশ গ্রহণ করেন।
গাজীপুর জেলা বিএনপি’র সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নানের সঞ্চালনায় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, মিডিয়া সেলের সদস্য মাহমুদা হাবিবা, বিএনপির নির্বাহী সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা: রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, সহ- শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, মেয়র মজিবুর রহমান, আক্তারুল আলম মাস্টার প্রমুখ
তারেক রহমান আরো বলেন, দেশের মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষ যখন তাকিয়ে থাকে তখন দায়িত্ব এসে পড়ে যায়, কোটি কোটি মানুষের দায়িত্ব এক বিশাল দায়িত্ব।
তিনি বলেব, বিএনপির প্রত্যেককে একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। মানুষের আস্থা অর্জন করা একজন রাজনৈতিক কর্মীর সবচেয়ে বড় সফলতা, সবচেয়ে বড় অর্জন। এই আস্থা ধরে রাখাও একজন কর্মীর দায়িত্ব।
তিনি দলীয় নেতকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণকে সাথে রাখুন। আমরা জাল ভোট দিয়ে, কারচুপি করে, নিশি ভোটে, জোর করে ক্ষমতায় যেতে চাই না। মানুষ মুক্তভাবে ভোট দিবে এমন একটি মুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে তুলে দিতে হবে। তবেই জনগণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে বিএনপিকে বিবেচনা করবে। তিনি বলেন, যারা নিজের বক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করবে তাদেরকে শক্ত হাতে রুখতে হবে। তিনি বলেন, রাষ্ট্র মেরামত করতে হলে জনগণের সমর্থন নিয়েই ক্ষমতায় যেতে হবে। বিএনপি রাষ্ট্র মেরমতের যে প্রস্তাবনা করেছে তা বাস্তবায়ন করতে অবশ্যই জনগণের সহযোগিতা লাগবে। যে কোন মূল্যে জনগণের সমর্থন ধরে রাখতে হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মিডিয়ার স্বাধীনতা বলতে যা খুশি তাই লেখা নয়। অবশ্যই সততা ও নিরপেক্ষতা থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান “রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে ৩১ দফা” বাঙ্গালী জাতির সামনে উপস্থাপিত করেন। গাজীপুর ছাড়াও ঢাকা এবং নারায়নগঞ্জ জেলা বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গ সংঠনের নেতাকর্মীরা ভার্চুয়ালর কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন।