খবর ৭১: ৭ ডিসেম্বর মাস্তুল ফাউন্ডেশন ও আল যাকাত সাদাকা ফাউন্ডেশন আয়োজিত “ইসলামের আলোকে সুস্থ জীবন”(পর্ব ০২) অনুষ্ঠানে ইসলামিক শিক্ষা ও সুস্থ জীবনযাপনের মধ্যকার সম্পর্ক তুলে ধরা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, ডাক্তার শারীরিক ও শিশু, অর্থোপেডিক স্বাস্থ্যের বিশেষজ্ঞ এবং সমাজসেবীরা অংশগ্রহণ করেছেন।
এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি, দায়বদ্ধতা এবং মানবিক মূল্যবোধ প্রচার।
দুইটি অধিবেশনে বিভক্ত এই অনুষ্ঠানটির প্রথম অধিবেশনে ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা ইসলামের দৃষ্টিতে সাদাকার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে শারীরিক ও শিশু, অর্থোপেডিক স্বাস্থ্যের বিশেষজ্ঞরা সুস্থ থাকার উপায় নিয়ে বক্তব্য রাখেন এবং দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে আলোচক এবং অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক চিন্তাবিদ ড. এম. ডি. আতাউর রহমান মিয়াজী, মাওলানা গাজী সানাউল্লাহ রাহমানী এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ এ. কে. এম. আল মাসুদ,অধ্যাপক গোলাম মাঈন উদ্দিন,মুফতি মোহাম্মদ বদিউল আলমসহ প্রমুখ।
মাওলানা গাজী সানাউল্লাহ রাহমানী বলেন, “দান-সাদকা শুধুমাত্র ইবাদত নয়, এটি আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতার প্রকাশ। দান এমন একটি অমূল্য উপহার, যা বিপদ থেকে মুক্তি দেয় এবং মানুষের জীবন ও সমাজকে বদলে ফেলে।
ডাঃ এ. কে. এম. আল মাসুদ বলেন, “ইসলাম শুধু ধর্মীয় বিধান নয়, আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও সুস্থতা ও কল্যাণের পথ প্রদর্শন করে। ইসলাম আমাদের শেখায় কীভাবে একটি সুস্থ,জীবন যাপন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়।”
মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক কাজী রিয়াজ রহমান বলেন, “ইসলামের আলোকে সুস্থ জীবন” অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য হলো ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা। আমাদের লক্ষ্য শুধু দান ও সাদকার গুরুত্ব বোঝানো নয়, বরং ইসলামের পথ অনুসরণ করে সুস্থ জীবনযাপন ও কল্যাণমূলক জীবনযাত্রার দিকে মানুষকে অনুপ্রাণিত করা।
এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা ইসলামী মূল্যবোধের আলোকে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার পথে অনুপ্রাণিত হন, যা আয়োজকদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।
উল্লেখ্য, মাস্তুল ফাউন্ডেশন বহুমুখী সমাজসেবামূলক কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে নিজস্ব স্কুল, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও বৃদ্ধআশ্রম যেখানে শতাধিক পিতামাতাহীন অনাথ/এয়াতিম শিক্ষার্থী ও বৃদ্ধ- বৃদ্ধা বসবাস করেন। এর বাহিরে কয়েক জেলায় প্রজেক্ট স্কুলগুলোতে হাজারের অধিক সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের সকল শিক্ষার উপকরন দেয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পুষ্টিকর খাবার, শিশু অধিকার, মৌলিক চাহিদা নিশ্চয়তা করা হচ্ছে। এছাড়া চিকিৎসা খাতে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে ‘মাস্তুল এইড’ প্রকল্পের মাধ্যমে অর্ধশতাধিকের অধিক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত অসচ্ছল পঙ্গুত্ববরণকারী রোগীদের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি হুইলচেয়ার ও কৃত্রিম পা দিয়ে সাবলম্বী করছে। মাস্তুল ফাউন্ডেশনের রয়েছে সেলাই প্রশিক্ষন কেন্দ্র, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র যার মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে কর্মক্ষম করে তোলা হচ্ছে। এর বাহিরে যাকাত স্বাবলম্বী প্রজেক্টের মাধ্যমে ১০০০ জনের বেশি মানুষকে স্বাবলম্বী করা হয়েছে। মাস্তুলের প্রধান কাজের মধ্যে রয়েছে দাফন-কাফন সেবা প্রজেক্ট, যার মাধ্যমে করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৩০০০ এর অধিক লাশ দাফন হয়েছে। রয়েছে মাস্তুল মেহমানখানা, যেখান থেকে শতাধিক অসহায় নিম্ন আয়ের মানুষের একবেলা পেট পুড়ে খাওয়ার ব্যাবস্থা হয়।