দুর্নীতি-অপ্রতুল বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে ‘রুগ্নদশা’

0
21

দুর্নীতি ও অপ্রতুল বাজেটের বেড়াজালে আটকে আছে দেশের স্বাস্থ্যখাত। এ কারণে নানা উদ্যোগের ফলেও দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ সেবাখাতের রুগ্নদশা বলে জানিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্ট ও বিশিষ্টজনরা। ফলে স্বাস্থ্যসেবা নিতে গিয়ে মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছেন।

শনিবার (১২ অক্টোবর) প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে নাগরিক সংগঠন ‘সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘অপ্রতুল বাজেট এবং দুর্নীতির বেড়াজাল: স্বাস্থ্যখাতের রুগ্নদশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে আলোচকদের বক্তব্যে এসব কথা উঠে এসেছে। এসময় আলোচকরা দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি জানান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা জবাবদিহিমূলক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য যৌক্তিক মতামত রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের কাছে পৌঁছানোর আহ্বান জানান। এছাড়া স্বাস্থ্যখাতের চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা বিশ্লেষণ করেন তারা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. এম এইচ চৌধুরী লেলিন বলেন, আমাদের বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ একেবারেই অপ্রতুল। এটা বাড়ানো হোক। দেশে একটি স্বাস্থ্যসেবা সুরক্ষা আইন অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। সেখানে পক্ষগুলোর দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ করা থাকবে।

এসময় তিনি দেশের স্বাস্থ্যশিক্ষার মান নির্ধারণ এবং মেডিকেল ট্যুরিজম বিষয়ে গুরুত্ব দিতে স্বাস্থ্য খাতের নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যখাতে অপ্রতুল বাজেট সত্ত্বেও এখানে কিন্তু দুর্নীতি ঠিকই হয়েছে। তাই এই খাতে দুর্নীতি নির্মূলে অধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে নিয়োগ বাণিজ্যের মতো দুর্নীতি বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশের মানুষের ব্যক্তিগত ব্যয়ের প্রায় ৪৪ শতাংশ চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যয় করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় এখানে আরও বরাদ্দ জরুরি।

বাজেট ব্যয়ে দক্ষতা বাড়ানোর উপর গুরুত্বারপ করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন বলেন, বাজেট ব্যয়ের ক্ষেত্রে যে দক্ষতা প্রয়োজন, সেটাতে আমাদের ঘাটতি রয়েছে। বাজেট ব্যয়ের ক্ষেত্রে যদি দক্ষতার অভাব থাকে সেটাও কিন্তু অন্য একজনের জন্য দুর্নীতির সুযোগ করে দেয়। দক্ষতা বৃদ্ধিতে এরই মধ্যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

ডা. আতিয়ার রহমান বলেন, স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি সরকারি ও বেসরকারি, উভয় ক্ষেত্রেই ঘটেছে। এস আলম গোষ্ঠী ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল দখল নিয়েছিল এবং বড় মাত্রায় দুর্নীতি করেছিল। এসব দুর্নীতি তদন্ত করতে হবে।

‘সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ’ সংগঠনটির সভাপতি ডা. কাজী সাইফউদ্দীন বেননূরের সভাপতিত্বে বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশনের ট্রেজারার অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস শাকুর খান। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ইউনিসেফের ন্যাশনাল কনসালটেন্ট ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাকুল আলম। এই খাতের বিভিন্ন দুর্নীতি ও এর ভূমিকা নিয়ে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন এমিনেন্স অ্যাসোসিয়েটস ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. মো. শামীম হায়দার তালুকদার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here