ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমদ গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রক্টর জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজনের নাম জালাল। তিনি হল ছাত্রলীগের সাবেক উপবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ছিলেন। বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শিগগিরই বাকিদেরও গ্রেপ্তার করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এর আগে তোফাজ্জল নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শাহবাগ থানায় অভিযোগটি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সাহাবুদ্দিন শাহীন।
মামলার এজাহারে মোহাম্মদ আমানুল্লাহ উল্লেখ করেন, ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার সময় একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে যান। মোবাইল চুরির অভিযোগ করে তারা ওই যুবককে এলোপাতাড়ি চর-থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারেন। জিজ্ঞাসায় ওই যুবক তার নাম তোফাজ্জল বলে জানান। পরে তিনি মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ান। এরপর তাকে হলের দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধরক মারধর করলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন।
‘পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানানো হয়। তাদের সহায়তায় অচেতন ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দিবাগত রাত পৌনে ১টার সময় তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এজাহার দায়ের করায় সামান্য বিলম্ব হয়েছে।’
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সাহাবুদ্দিন শাহীন গণমাধ্যমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এজাহার দিয়েছেন। এজাহারটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।