চারদিকে অথৈ পানি। তলিয়ে গেছে বসতবাড়ি থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, ফসলি জমি। ক্রমেই বিকল হচ্ছে যোগাযোগের মাধ্যমগুলো। বানভাসি মানুষের বেঁচে ফেরার আর্তনাদ। সঙ্গে খাবার, সুপেয় পানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের স্বল্পতা। সব মিলিয়ে কঠিন এক সময় পার করছে ফেনী। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে স্মরণকালের এ ভয়াবহ বন্যা কবলিত হয়েছে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ ১১ জেলা। আকস্মিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ছিল না কোনো পূর্ব প্রস্তুতি। ফেনীর সবকটি উপজেলা বন্যার পানিতে প্লাবিত। তিন উপজেলার সব বাড়িঘর তলিয়ে গেছে পানির নিচে।
অন্য উপজেলাগুলোরও বেশির ভাগ বসতঘরে পানি উঠে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রেও ঠাঁই নেই। বৈরী আবহাওয়া ও তীব্র স্রোতের কারণে উদ্ধারে নামা সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, নৌ-বাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস, কোস্ট গার্ডসহ সব সংস্থাকে বেগ পেতে হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবকদেরও উদ্ধারে নেমে প্রতিকূল পরিবেশের মুখোমুখি হতে হয়েছে। খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ভয়াবহ এ বন্যার কবলে। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া তৃতীয় দফার বন্যায় বিপর্যস্ত ফেনী। এদিকে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল ও রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর লালপুল এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কয়েকটি স্থান এবং ফেনীর বেশকিছু এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত থেমে থেমে গাড়ি চললেও বিকালের পর মহাসড়কে প্রচুর পানি বেড়ে যায়। ফলে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ফেনীর ৬টি উপজেলার সবকটি বন্যার পানিতে প্লাবিত। পুরোপুরি তলিয়ে গেছে পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া। এ ছাড়াও সদর, দাগনভূঞা, সোনাগাজীরও সব এলাকা প্লাবিত। হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া সব বসতঘরে পানি প্রবেশ করেছে। জেলার সব সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। বিদ্যুৎ নেই অধিকাংশ এলাকায়। ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না মোবাইল নেটওয়ার্কও। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রেও ঠাঁই নেই বানভাসি মানুষের। মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করছে। ফলে ডুবছে একের এক জনপদ। এদিকে জেলায় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে সেনাবাহিনী, নৌ-বাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা। এ ছাড়াও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির উদ্যোগে অনেকে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে প্রতিকূল পরিবেশে উদ্ধার কার্যক্রমে বেগ পেতে হচ্ছে। বিশেষ করে বুধবার রাত থেকে উদ্ধার চালাতে বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় উদ্ধারকর্মীদের। পানির তীব্র স্রোতের কারণে পরশুরাম ও ফুলগাজীর অনেক এলাকায়ই স্পিডবোট নিয়ে প্রবেশ করা যাচ্ছিল না। সকালেও উদ্ধার কাজে বেগ পেতে হয়। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে উদ্ধার অভিযান শুরু করতে বিলম্ব হয় বৈরী আবহাওয়ার কারণে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত স্পিডবোট, ডিঙি নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযানে নেমেছেন অনেক স্বেচ্ছাসেবী। এ ছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে কয়েকটি হেলিকপ্টার নিয়েও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। বুধবার সন্ধ্যা থেকে বানভাসিদের আর্তনাদে ভারী হয়ে আসে ফেনীর বাতাস। ফেনীতে যেতেও বেগ পেতে হয় উদ্ধারকর্মীদের। হাইওয়েতে পানি উঠে যাওয়ায় যানবাহন প্রবেশে বেগ পেতে হয়। ছাগলনাইয়া, সদর, সোনাগাজী ও দাগনভূঞায়ও স্পিডবোট নিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তবে এখনো লাখ লাখ মানুষ ঝুঁকিতে রয়েছেন। অন্যদিকে ত্রাণ কার্যক্রম নিয়েও হাজির হয়েছেন অনেক স্বেচ্ছাসেবী। তারা শুকনো খাবার নিয়ে জেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন। এদিকে সুপেয় পানির অভাবে অনেকে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে শিশুদের কষ্টের সীমা নেই। এমতাবস্থায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সংক্রামক ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন।
এদিকে আবহাওয়া সংস্থার বরাতে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বৃহস্পতিবার সকালে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও কাছাকাছি উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে। এ সময় এ অঞ্চলের ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের মুহুরী, ফেনী, গোমতী, হালদা নদীর নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরবর্তী সময়ে উন্নতি হতে পারে। আর দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে এবং দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাত কমে আসতে পারে। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদসংলগ্ন নিম্ন্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরে উন্নতি হতে পারে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা জানান, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৫০ উপজেলার ৩৫৭টি ইউনিয়ন বন্যার কবলে পড়েছে। এসব জেলার চার লাখ ৪০ হাজার ৮৪০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ২৯ লাখ ৪ হাজার ৯৬৪ জন। মৃতের সংখ্যা ২ জন। ১ জন ফেনীতে, আরেকজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১ হাজার ৫৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ৭৫ হাজার ৬৬৮ জন লোক এবং ৭ হাজার ৪৫৯টি গবাদিপশুকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য মোট ৪৪৪টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে। দুর্গতদের জন্য নগদ ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ১৩ হাজার ৬৫০ টন চাল ও ১১ হাজার বস্তা শুকনা খাবার বরাদ্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশের সকল জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুদ রয়েছে। তিনি জানান, বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, মেডিকেল টিম ও অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে জেলা প্রশাসকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে; তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে। নিয়ন্ত্রণকক্ষ চালু করেছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ও; সহায়তার জন্য ফোন করা যাবে ০১৩১৮২৩৪৫৬০ নম্বরে।
কুমিল্লায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি, নিহত ৪: ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুমিল্লার গোমতী, সালদা, কাঁকড়ি ও ডাকাতিয়া নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদীর তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গত দু’দিন ধরে প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি। সকালে জেলার গোমতী নদীর সদর উপজেলা, বুড়িচং, দেবিদ্বার, মুরাদনগর, তিতাস উপজেলা, কাঁকড়ি নদীর তীরের চৌদ্দগ্রাম উপজেলা এবং ডাকাতিয়া নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেয়ে নাঙ্গলকোটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা জুড়ে প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। জেলা প্রশাসক খন্দকার মুশফিকুর রহমান বলেন, গোম?তী নদীর পাড়ে অবস্থানরত সকল?কে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়কে?ন্দ্রে যাওয়ার নি?র্দেশ দেয়া হয়েছে।? এদিকে বন্যায় কুমিল্লায় এখন পর্যন্ত চার জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দু’জন বন্যার পানিতে তলিয়ে, একজন বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এবং একজন মাথায় গাছ পড়ে মারা গেছেন। মৃতরা হলেন- নাঙ্গলকোট পৌরসভার দাউদপুর এলাকার কেরামত আলী (৪৫), কুমিল্লা শহরের ছোট এলাকার কিশোর রাফি (১৫), চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সোনাকাটিয়া গ্রামের কানু মিয়ার ছেলে শাহাদাত হোসেন (৩৪) এবং লাকসামে পানিতে তলিয়ে মারা যাওয়া শিশুর নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
নোয়াখালীতে নিহত ১: নোয়াখালীতে বন্যার আরও অবনতি হয়েছে। এতে ৪ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া গ্রামীণ সড়কে সব ধরনের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জেলা শহর মাইজদীসহ আট উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে গেছে। ফেনী জেলার পানি নোয়াখালী সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলা বেশি ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া খালগুলো অবৈধভাবে দখল ও পৌর এলাকায় ড্রেনগুলো দীর্ঘদিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান মানবজমিনকে জানান, নোয়াখালীর ৯টি উপজেলার মধ্যে ৮টি উপজেলায় বন্যা হয়েছে। এসব উপজেলায় ইতিমধ্যে ৩৮৮ আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৩৬ হাজার বন্যা আক্রান্ত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। জেলায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।
মৌলভীবাজারে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন বন্যার্তরা: জেলা জুড়ে সবক’টি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার বিকাল থেকেই একের পর এক এলাকায় নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভাঙার খবর আসে। ৩য় দফা আকস্মিক বন্যায় নাকাল এ জেলার নদী ও হাওর তীরের বাসিন্দারা। নদীর বাঁধ ভেঙে ও উপচে কুলাউড়া, কমলগঞ্জ, রাজনগর, জুড়ী, মৌলভীবাজার সদরসহ সবক’টি উপজেলার প্রায় আড়াই শতাধিক গ্রামের অন্তত সাড়ে ৩ লক্ষাধিক মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই কেবলই বাড়ছে বন্যায় দুর্গতদের এই পরিসংখ্যান।
লক্ষ্মীপুরে ৬ লাখ মানুষ পানিবন্দি: লক্ষ্মীপুরে ৬ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এতে পাউবো বাঁধের বাহিরে ও ভেতরে ২ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি পড়েছে। পানিবন্দি মানুষগুলো উঁচু এলাকা, পাউবো বাঁধের উপর এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার সরজমিন কচুয়া-সমিতির বাজার সড়ক, কাশিমনগর মাঝিরগাঁও সড়ক, উপজেলা পরিষদ ও হাসপাতাল সড়কসহ করপাড়া, দরবেশপুর, ভোলাকোট, ভাটরা, নোয়াগাঁও লামচর, চণ্ডিপুর ইউপি’র বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, ইউনিয়ন সড়কগুলোতে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি উঠে গেছে। অন্যদিকে মেঘনায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ায়নি বলে অভিযোগ করেন তারা।
কক্সবাজারে নিহত ২: টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে কক্সবাজারে দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে অন্তত ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি। এসব এলাকার আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়ক পানিতে ডুবে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া পানিতে ভেসে গিয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- রামু উপজেলার সাচিং মারমা (২৬) ও আমজাদ হোছন (২২)। এদিকে, ঈদগাঁও, চকরিয়া-পেকুয়া আর রামুতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন এসব উপজেলার শতাধিক গ্রামের মানুষ। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারের কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সেখানে উদ্ধার কার্যক্রম ও শুকনো খাবার দেয়ার প্রস্তুতি চলছে।
খাগড়াছড়িতেও মানবিক বিপর্যয়: তলিয়ে গেছে খাগড়াছড়ি শহরের নিচু এলাকাগুলোর ঘরবাড়ি। ভোর থেকে পানি প্রবেশ করতে থাকে লোকালয়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দারা। জেলা সদরের গঞ্জপাড়া, অপর্ণা চৌধুরী পাড়া, শব্দ মিয়া পাড়া, শান্তিনগর, মুসলিমপাড়া, রাজ্যমনি পাড়া, কালাডেবা, বটতলী, ফুটবিল এলাকার নিচু এলাকায় পানি উঠেছে। সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় খাগড়াছড়ির সঙ্গে রাঙ্গামাটি, লংগদু ও সাজেকের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, বন্যা মোকাবিলায় জেলায় কর্মরত সকল দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে নিজ নিজ দপ্তরে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। জেলায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।