সংসদ ভবন ও গণভবনের জিনিস ফেরত দিচ্ছেন অনেকেই

0
25

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবন ও সংসদ ভবনে ঢুকে পড়েন সাধারণ মানুষ। রোববার (৫ আগস্ট) রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এই দুই স্থাপনায় হামলার পাশাপাশি ভাংচুর-লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। ওইদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব ছবি অনেকে পোস্ট করেছেন। এই ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়ে অনেকেই ফেরত দিচ্ছেন গণভবন ও সংসদ ভবন থেকে নেওয়া মালামাল। অনেকে খুঁজছেন কীভাবে মালামাল ফেরত দেওয়া যায়, সেই মাধ্যম।

বুধবার (৭ আগস্ট) সংসদ ভবনের ফটকের সামনে কয়েকজন শিক্ষার্থী ‘এখানে গণভবন ও সংসদ ভবনের জিনিসপত্র গ্রহণ করা হচ্ছে’ —এমন প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান করেন। তারা জানান, গণভবন ও সংসদ ভবন থেকে নিয়ে যাওয়া দুটি চেয়ার, একটি প্রিন্টার ও ওয়াকিটকি, কিছু বই ও খেলনাসহ বেশ কিছু সামগ্রী লোকজন ফেরত দিয়ে গেছেন।

ফেসবুক ভিত্তিক গ্রুপ ‘ডু সামথিং এক্সেপশনাল (ডিএসই)’ এর এডমিন জেবিন ইসলাম ঢাকা মেইলকে জানান, অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন গণভবন ও সংসদ ভবন থেকে নেওয়া মালামাল ফেরত দেওয়ার জন্য। আমরা তালিকা করছি। একত্র করে আমরা সেগুলো নির্ধারিত জায়গায় ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করব।

জানা গেছে, সেদিন যারা গণভবন ও সংসদ ভবন থেকে মালামাল নিয়ে গেছেন তাদের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ছিলেন। যাদের মধ্যে উচ্চবিত্ত-মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজনও ছিলেন। কিন্তু তাদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বিব্রত হতে হচ্ছে অনেককেই। কেউ আবার ভুল বুঝতে পেরে জিনিসপত্র ফেরত দেওয়ার চিন্তা করছেন। জিনিসপত্র ফেরত দেওয়ার সময় লোকজন বলছেন, ওইদিন তারা আনন্দে আত্মহারা হয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে ফেরত দিয়েছেন।

এদিকে, গণভবন ও সংসদ ভবন দেখতে গতকাল মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) হাজারো উৎসুক মানুষের ভিড় ছিল। তবে বুধবার তেমন ভিড় দেখা যায়নি। কিছু মানুষ উপস্থিত হলেও ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। এসব স্থাপনার দায়িত্ব নিয়েছেন সেনাবাহিনী ও প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) সদস্যরা। তাদের সহযোগিতায় কাজ করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

অন্যদিকে, গণভবনের দেওয়ালের ভাঙা অংশ দিয়ে সাধারণ মানুষের প্রবেশ ঠেকাতে কাঠবোর্ড, স্টিলের আলমারি, রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ ব্যবহৃত লোহার ব্যারিকেড, টিন, তক্তা ইত্যাদি দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে। কোথাও কোথাও কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। ভাঙা অংশে অস্থায়ী প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি পিজিআর কিংবা সেনাসদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে সেনাসদস্যরা কাউকেই ভেতরে প্রবেশ করতে দেননি।

মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে সংসদের দক্ষিণ প্লাজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশের দুটি ফটকেই কড়া নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। মূল ফটকে সেনাবাহিনী ও আনসার সদস্যরা রয়েছেন। এর কিছুটা আগে শিক্ষার্থীরা উৎসুক মানুষকে আটকানোর কাজ করছেন। নিরাপত্তা গলে কেউই ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন না।

দক্ষিণ প্লাজার ফটকের সামনে লুট হওয়া জিনিসপত্র ফেরত নিচ্ছিলেন শিক্ষার্থীরা। তাদের একজন তেজগাঁও কলেজের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী জোবায়দুর রহমান বলেন, ‘আমরা ভোর ছয়টার পর থেকে এখানে দাঁড়িয়েছি। বেশ কিছু সামগ্রী ফেরত দিয়ে গেছেন লোকজন।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here