নতুন কর্মসূচি ঘোষণা আন্দোলনকারীদের

0
55

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি অংশ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আগামীকাল মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) চোখে ও মুখে লাল কাপড় বেঁধে অনলাইনে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে তারা। সরকারের ঘোষিত রাষ্ট্রীয় শোকের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৯ জুলাই) ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এই কর্মসূচি ঘোষণা দেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রিফাত রশিদ। বার্তা প্রেরক হিসেবে উল্লেখ ছিল আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয় মো. মাহিনের নাম।

এই পোস্টে দেখা যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে দেশবাসী ও ছাত্র জনতাকে তাদের অপরিসীম ত্যাগ-তিতিক্ষা ও আত্ম বলিদানের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।
পোস্টে বলা হয় – চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশজুড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিকে কেন্দ্র করে নির্বিচারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে শত শত শিক্ষার্থীর মৃত্যু ও হাজার হাজার ছাত্র-জনতা আহত হয়ে যখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে তখনও শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে না নিয়ে একাত্তরের হানাদার বাহিনীর মতো মধ্যরাতে বাসা বাড়িতে রেইড ব্লকের মাধ্যমে নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে রিমান্ডের নামে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
এমতাবস্থায় বর্তমান সরকারের কর্তাব্যক্তিরা সংকট নিরসনে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে না নিয়ে প্রতিদিনই নির্মমভাবে শিক্ষার্থীদের দমন নিপীড়ন ও মানুষের জীবন থেকে রাষ্ট্রীয় সম্পদকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় প্রচার করছে এবং মিডিয়ার সামনে দেওয়া সরকারের কর্তাব্যক্তিদের মায়াকান্না প্রচার করছে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর গণহত্যা ও নির্যাতনের বিচার না করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিদিন যে নির্মম উপহাস করা হচ্ছে। তার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় শোককে প্রত্যাখান করে আগামীকাল লাল কাপড় মুখে ও চোখে বেঁধে ছবি তুলা এবং অনলাইনে ব্যাপক প্রচার কর্মসূচি করার জন্য অনুরোধ করছি।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, ছাত্রসমাজের বুকে গুলি চালিয়ে বাংলার ইতিহাসে কোনো আন্দোলন দমন করা যায়নি। অবিলম্বে ছাত্রসমাজের নয় দফা দাবি মেনে নিয়ে দেশকে স্থিতিশীল করুন।

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লে এতে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আন্দোলনে দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার। নাশকতায় ক্ষতি হয়েছে হাজার কোটি টাকার। এই অবস্থায় আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃত্বে থাকা ছয়জন সমন্বয়ককে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারা সেখান থেকে গতকাল সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে বাইরে থাকা সমন্বয়করা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাদের দাবি, পুলিশ তাদের দিয়ে বাধ্য করেছে কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে। তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আজ সোমবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ সময় হামলা ও ধরপাকড়ের শিকারও হয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here