প্রোটিয়াদের প্রথম নাকি ভারতের দ্বিতীয়

0
66

শেষ হচ্ছে মাসব্যাপী ক্রিকেট যজ্ঞের। গত ২ জুন পর্দা উঠেছিল নবম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। এবারের আসরের ম্যাচগুলো মাঠে গড়িয়েছে আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে। আজ (শনিবার) শিরোপার লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে পর্দা নামবে বিশ্বকাপের। ব্লকবাস্টার ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে টুর্নামেন্টের দুই অপরাজিত দল দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারত।

প্রথমবারের মতো আইসিসি বিশ্বকাপ ইভেন্টের ফাইনালে উঠেই বাজিমাত করতে চায় প্রোটিয়ারা। প্রথম বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের লক্ষ্য দক্ষিণ আফ্রিকার। অন্যদিকে, ২০০৭ উদ্বোধনী বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ভারতের চোখ দ্বিতীয় শিরোপায়। বার্বাডোজের ব্রিজটাউনে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে ম্যাচটি।

গ্রুপ পর্বে ৪ ও সুপার এইটে ৩ ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পা রেখেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। যদিও খুব একটা স্বস্তিতে ছিল না তারা। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে মোট সাতবার বিশ্বকাপের সেমি থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল ‘চোকার্স’ খ্যাত দলটির। টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে বোলারদের অসাধারণ নৈপুণ্যে আফগানিস্তানকে ৯ উইকেটে উড়িয়ে প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা থেকে এক কদম দূরে তারা।

দক্ষিণ আফ্রিকার মত এবারের বিশ্বকাপে অপরাজিত দল ভারতও। তবে গ্রুপ ও সুপার এইট পর্বে একটি জয় কম পেয়েছে টিম ইন্ডিয়া। কারণ গ্রুপ পর্বে কানাডার বিপক্ষে ভারতের ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়। তাই এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা ৮টি ও ভারত ৭টি ম্যাচে জিতেছে। যা এই দু’দলের বিশ্বকাপ ইতিহাসে এক আসরে সর্বোচ্চ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড।

তৃতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ভারত। এর আগে ২০০৭ ও ২০১৪ সালে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিল উপমহাদেশের দলটি। ২০০৭ সালে প্রথম বিশ্বকাপের শিরোপা জিতলেও, ২০১৪ সালের ফাইনালে হেরে যায় ভারত। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার কাছে ৬ উইকেটে হেরেছিল টিম ইন্ডিয়া। আর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম বিশ্বকাপে টান-টান উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত।

দুই অধিনায়কের ভাবনা
সেমিফাইনালের শাপমোচন হয়েছে। ফাইনালের আগে যা বাড়তি আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। ফাইনাল নিয়ে দলের অধিনায়ক এইডেন মার্করাম বলেন, ‘ফাইনালে খেলার সুযোগ পাওয়া বিশাল অর্জন। আমরা যখন বিশ্বকাপের জন্য আসি, শুধু ফাইনালে খেলতে আসিনি। আমরা অন্য সব দলের মতো ফাইনাল জিততে এসেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাদা বলের দুই ফরম্যাটে দীর্ঘদিন ধরেই একসঙ্গে খেলছে এই দলটি। ফাইনালে উঠতে পারাটা দারুণ। আমরা বিশ্বের যে কোনো দলের সাথেই লড়াই করতে পারি ও শিরোপা জিততে পারি বলে বিশ্বাস করি। সেই সুযোগ এখন সামনে আসায় ভালো লাগছে।’

এদিকে, ২০০৭ সালের সুখস্মৃতি বিশ্বকাপের নবম আসরে ফিরিয়ে আনতে চায় ভারত। দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেন, ‘আমাদের সামনে ২০০৭ সালের সুখস্মৃতি ফিরিয়ে আনার সুবর্ণ সুযোগ। ১৭ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ট্রফি জিততে মুখিয়ে আছে দলের সবাই। ওই আসরের দলে আমি ছিলাম। আশা করছি আবারও শিরোপা জয়ের উৎসবে মেতে উঠতে পারবো আমরা।’

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনাল নিয়ে রোহিত বলেন, ‘দল হিসেবে আমাদের খুব শান্ত থাকতে হবে। কারণ, মাথা ঠান্ডা থাকলে ও চাপ না নিলে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। ফাইনালে জিততে হলে ভাল ক্রিকেট খেলা ছাড়া অন্য কোন পথ নেই। আমরা এবার আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছি। ফাইনালে একই পরিকল্পনায় খেলতে চাই।’

ফাইনালে উঠলেও, দলের সেরা ব্যাটার বিরাট কোহলির ফর্ম নিয়ে আবারও প্রশ্ন শুনতে হয়েছে রোহিতকে। কিন্তু কোহলির ফর্ম নিয়ে চিন্তা নেই ভারতের। রোহিত বলেন, ‘কোহলি কেমন ক্রিকেটার তা আমরা সবাই জানি। সবার ক্যারিয়ারেই খারাপ সময় আসে। আবার খারাপ সময় কেটে যায়। সে রানের জন্য মুখিয়ে আছে। ফাইনালেও সে ওপেন করবে। আমরা আশা করছি, ফাইনালে কোহলির ব্যাট কথা বলবে।’

পরিসংখ্যানে আফ্রিকা-ভারত
এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ২৬ বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এরমধ্যে ভারতের ১৪ ও দক্ষিণ আফ্রিকার জয় ১১ ম্যাচে। ১টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মোট ৬বার মুখোমুখি হয়েছে দু’দল। এই মঞ্চেও জয়ের ক্ষেত্রে এগিয়ে ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকার ২ জয়ের বিপরীতে ভারতের জয় ৪টিতে। মুখোমুখি লড়াইয়ের ২০০৭, ২০১০, ২০১২ ও ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে ভারত এবং ২০০৯ ও ২০২২ সালের আসরে জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

দুই দলের স্কোয়াড
ভারত দল : রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), হার্দিক পান্ডিয়া, যশস্বী জয়সওয়াল, বিরাট কোহলি, সূর্যকুমার যাদব, রিশভ পন্ত (উইকেটরক্ষক), সঞ্জু স্যামসন, শিবাম দুবে, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, যুজবেন্দ্র চাহাল, আর্শদীপ সিং, জসপ্রিত বুমরাহ ও মোহাম্মদ সিরাজ।

দক্ষিণ আফ্রিকা দল : এইডেন মার্করাম (অধিনায়ক), অটনিল বার্টম্যান, জেরাল্ড কোয়েটজি, কুইন্টন ডি কক, বিজর্ন ফরচুইন, রেজা হেনড্রিক্স, মার্কো জানসেন, হেনরিচ ক্লাসেন, কেশব মহারাজ, ডেভিড মিলার, এনরিখ নর্কিয়া, কাগিসো রাবাদা, রায়ান রিকেলটন, তাবরাইজ শামসি, ট্রিস্টান স্টাবস।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here