‘মৃত্যুকে ভয় করি না, যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ’

0
87

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, তিনি মৃত্যুকে ভয় করেন না। যতক্ষণ দেহে প্রাণ আছে মানুষের জন্য কাজ করে যাবেন। বলেছেন, যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ।

রোববার (২৩ জুন) বিকেলে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট পরিবারের সব সদস্যকে হারিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে নিজের আপনজন খুঁজে বেড়িয়েছেন বলে জানান বঙ্গবন্ধু কন্যা। নিজের কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মৃত্যুকে ভয় পাই না। যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ। বাবার চিন্তা চেতনা বাস্তবায়ন করে মানুষের জন্য কাজ করে যাবো, উন্নত জীবন দেব।’

সংগঠন শক্তিশালী করার তাগিদ দিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। সেটি অর্জন করতে পেরেছি বলেই বারবার জনগণ ভোট দিয়েছে। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই দেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। স্মার্ট বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাবে, প্লাটিনাম জুবিলিতে এটাই প্রতিজ্ঞা।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এদেশের মানুষকে ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা অবশ্যই দেবে আওয়ামী লীগ। স্মার্ট সোনার বাংলা ইনশাআল্লাহ আমরা গড়ে তুলব। সুখে দুখে মানুষের পাশে দাঁড়াবো।’

বাঙালির প্রতিটি অর্জনে আওয়ামী লীগ ওতপ্রোতভাবে জড়িত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার, ২১ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস ঘোষণা, মাতৃভাষা সংরক্ষণে প্রকল্প গ্রহণ, ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি আদায় আওয়ামী লীগই এনে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রতিটি পদক্ষেপের ফলে আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’

তবে আওয়ামী লীগের এত অর্জন সত্ত্বেও দলটিকে বারবার নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আঘাতের পরও ফিনিক্স পাখির মতো আবারও জেগে উঠেছে আওয়ামী লীগ। খুব বেশিদিন আগের কথাও না, ২০০৭ সালেও চেষ্টা করা হয়েছিল আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে নতুন কিংস পার্টি গঠন করবে। সেটাও সফল করতে পারেনি।’

আওয়ামী লীগকে নিশ্চিত করতে না পারার কারণ জানিয়ে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে দলটিকে নেতৃত্ব দেওয়া শেখ হাসিনা বলেন, ‘তার কারণ আওয়ামী লীগের মূলশক্তি হলো সাধারণ জনগণ, তৃণমূলের মানুষ, আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মী মুজিব আদর্শের সৈনিক। এই সৈনিকরা কখনো পরাভব মানে না, মাথা নত করে না।’

বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ ছেড়ে চলে যাওয়া নেতাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হয়তো কখনো কখনো কোনো নেতা ভুল করেছেন, কেউ মনে করেছেন আওয়ামী লীগে তারাই বড় নেতা। তাই কেউ নিজেকে বড় নেতা মনে করে আওয়ামী লীগ ছেড়ে অন্য দল করেছেন। কিন্তু তারা ভুল করেছেন, কেন আপনারা দেখেন আকাশে মিটি মিটি তারা জ্বলে। তারা আলোকিত হয় কারা দ্বারা, সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়। যেসব নেতা ভুল করেছিলেন তারা ভুলে গিয়েছিলেন তারা আলোকিত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ছিলেন বলেই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখান থেকে চলে যাবার পর এই তারা আর জ্বলে নাই। তারা আস্তে আস্তে নিভু নিভু, কিছু নিভেই গেছে। কেউ ভুল বুঝে হয়ত ফেরত এসেছে, আমরাও নিয়েছি। আবার কেউ এখনো ভিন্নভাবে আওয়ামী লীগ সরকার পতন, ধ্বংস নানা জল্পনা-কল্পনা করছেন।’

আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য জানিয়ে দলটির সভাপতি বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর বারবার ক্ষমতা বদল হয়েছে। কিন্তু ক্ষমতা বদল হয়েছে হয় অস্ত্রের মাধ্যমে নয় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল না, মানুষের মৌলিক অধিকার ছিল না। মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তনই তারা করতে পারেনি।’

এ সময় তিনি জানান, ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। ২০০৯ সাল থেকে টানা সরকারে থাকার কারণে দেশ আজ উন্নয়নে মহাসড়কে অবস্থান করছে বলে জানান সরকারপ্রধান। উন্নত, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলাই তার একমাত্র লক্ষ্য বলে জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here